সংসদ থেকে বিএনপির সাত এমপির পদত্যাগের ঘোষণা রাজনৈতিক স্টান্টবাজি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, এতে সরকারের কিছু যায় আসে না।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে সাভারের রেডিও কলোনি মাঠে সাভার-ধামরাই উপজেলা এবং আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন হানিফ।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশ করছে। শুনলাম তাদের সাতজন এমপি নাকি পদত্যাগ করবেন। পদত্যাগ করার গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের আছে। তবে পদত্যাগ স্পিকারের কাছে করতে হয়, মাঠে ভাষণ দিয়ে হয় না। এগুলো বিএনপির রাজনৈতিক স্টান্টবাজি। এতে সরকারের কিছু যায় আসে না।’
হানিফ আরও বলেন, বিএনপি মিথ্যাবাদী, ভাঁওতাবাজির দল। তারা জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি করে, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও ভাঁওতাবাজি করে। তাদের পরিকল্পনা ছিল দলের কর্মীদের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় এনে নাশকতা করে সরকারের পতন ঘটাবে। এই সরকার শেখ হাসিনার সরকার, খালেদা জিয়ার সরকার নয়। আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যায় না। কারণ আওয়ামী লীগের শেকড় এই বাংলার মাটির অনেক গভীরে। এতো গভীরে যে, এই গাছকে বারবার ধাক্কা দিয়েও ফেলা যায়নি। যারা ধাক্কা দিতে এসেছে তাদেরই পতন হয়েছে।
জনপ্রিয়তা যাচাই করতে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা পরীক্ষা করুন। দেখুন জনগণ কার সঙ্গে আছে। জনগণ কী চায়? দেশের মানুষ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তি চায়। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শান্তির প্রতীক শেখ হাসিনা।
হানিফ বলেন, ‘দেশের মানুষ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখতে চায় না। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করা খালেদা জিয়া ও দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক সন্ত্রাসী তারেক রহমানকে দেখতে চায় না।’
তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে একটা সমাবেশে বলেছি, বিএনপি নেতারা তাদের কয়েকটা সমাবেশে কিছু লোকজন দেখে হুঁশ হারিয়ে ফেলেছেন। হুঁশ হারিয়ে লাগামছাড়া কথা বলছেন। এক শিশু বক্তা আছে রফিকুল ইসলাম মাদানি। এক ওয়াজে গিয়ে মাদ্রাসার কিছু ছেলেদের দেখে বলল, সরকার মানি না, সংবিধান মানি, রাষ্ট্র মানি না। পরে পুলিশ যখন তাকে ধরে নিয়ে গেল তখন পুলিশের হাত পা ধরে বলে ভুল হয়ে গেছে। সামনে মানুষ দেখে বেহুঁশ হয়ে বলে ফেলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির অবস্থা কিছুটা ওইরকম হয়ে গিয়েছিল। এমনও বলল, ১০ তারিখের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। আমি বলেছিলাম, জোশে বেহুঁশ হলে পুলিশের হাত পা ধরা লাগবে। এখন তো দেখছেন আপনারা। গত দুদিন ধরে পুলিশের হাত পা ধরা শুরু হয়েছে।’
দেশের মানুষকে বিএনপির মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপির মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ গড়ার মহাপরিকল্পনা নিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে দেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
এছাড়া জনসভায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলা, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গনী, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিনসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইএফ