কর্মসূচির সময় পরিবর্তন কারো অনুরোধে নয়: খন্দকার মোশাররফ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২২, ০২:১৮ পিএম
কর্মসূচির সময় পরিবর্তন কারো অনুরোধে নয়: খন্দকার মোশাররফ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, কর্মসূচির সময় পরিবর্তন কোনো নমনীয়তা বা কারো অনুরোধে করেছি এমন নয়। এটা আমাদের রাজনৈতিক দর্শন এবং চিন্তা ধারার প্রতিফলন।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবের তিনি এসব কথা বলেন।

গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঘোষণা দেয়, ২৪ ডিসেম্বর তারা গণমিছিল করবে। একই দিনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। তাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে ওই দিন গণমিছিল না করার অনুরোধ করেন। সেই অনুরোধে বিএনপি ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল না করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৪ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। তবে সারাদেশে ২৪ ডিসেম্বরই গণমিছিল করবে তারা। গতকাল শনিবার নয়া পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ২৪ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করার কথা জানান।

খন্দকার মোশারফ বলেন, বিএনপি মধ্যমপন্থী একটি রাজনীতি দল। আমরা সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমাদের দল প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে বলেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা গণতান্ত্রিক আচরণ অতীতে দেখিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও দেখাবো। গণতান্ত্রিক আচরণ একটি রাজনৈতিক দল আরেকটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সহনশীল হবে, তাদের মতামত এবং বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দেবে এটাই হচ্ছে আমাদের নীতি। সেই নীতির কারণে আমাদের কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আশে-পাশে অনির্বাচিত গণবিরোধী সরকারের নির্দেশে তার বিভিন্ন বাহিনীর যে নির্মম নিষ্ঠুরতা ও বর্বর আচরণ আপনারা ও আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন তা শুধু বিজয়ের মাসকে কলঙ্কিত করেনি। গণতন্ত্র হত্যাকারী ও বারবার গণতন্ত্র হত্যায় সহায়তাকারী বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারের অগণতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী ও গণবিরোধী পরিচয় উৎকট ভাবে পুনরায় প্রকাশ করেছে।

মোশাররফ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রত গণমানুষের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে এবং একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপুল অস্ত্র সজ্জিত বিশাল সরকারী আইন-শৃংখলা বাহিনীর অতর্কিত আক্রমণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দলীয় নেতা-কর্মী, এমনকি সাধারণ পথচারীদের উপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ, গুলি, টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মকবুল আহমেদকে হত্যা, অসংখ্য নেতা-কর্মীকে মারাত্মকভাবে জখম করা এবং অফিসের ভিতর ঢুকে চেয়ারপার্সন, মহাসচিবসহ নেতাদের এবং দলও অঙ্গ দলের অফিস কক্ষ ভেঙ্গে তছনছ করা; কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নগদ অর্থসহ বিভিন্ন দ্রব্য লুট ও ভাংচুর, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মুরাল ও সিসি ক্যামেরাসহ আসবাবপত্র বিনষ্ট করা এবং এসব অপকর্মকে যুক্তিসঙ্গত প্রমাণের অপচেষ্টায় মিডিয়ার সামনেই ব্যাগে করে ককটেল বহণ করে তা’ অফিসের বিভিন্ন কক্ষে রেখে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করা, দলের মহাসচিবকে তার অফিসে ঢুকতে বাধা দিয়ে অফিসের সামনে তাকে ঘেরাও করে রাখা। এসব কিছুই আপনারা ও দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন। যে কোন সভ্য দেশে এমন সব ঘটনা শুধু অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রত নয়। এমন বর্বরতা ও ষড়যন্ত্রমূলক নিষ্ঠুরতা তীব্রভাবে নিন্দনীয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহীন প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহিরুদ্দিন স্বপন ও বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দীন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

এবি