কারাগারে জ্যেষ্ঠ নেতারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না: প্রিন্স

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৩, ২০২২, ০৩:১৮ পিএম
কারাগারে জ্যেষ্ঠ নেতারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না: প্রিন্স

অসুস্থ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা কারাগারে ‘সঠিক চিকিৎসা’ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, কারাবন্দি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সিনিয়র নেতারা দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকে একাধিকবার ভয়াবহ করোনা রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।”

‘বর্তমানে গায়েবী মামলায় এই কারাবন্দি বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের কারাগারে নেয়ায় তাদের সুচিকিৎসায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। তারা কারাগারে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা।”

প্রিন্স বলেন, ‘হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে বন্দি করায় বর্তমানে কারাগারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কারাবিধি অনুযায়ী অনেক নেতা ডিভিশন পাওয়ার অধিকারী হলেও অনেককে এখনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি।”

‘কারাবন্দি নেতাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আবদুস সালাম, রহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাক মিয়াসহ সিনিয়র নেতারা জামিন পাওয়ার অধিকারী হলেও বার বার তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হচ্ছে। সরকারের নির্দেশের তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমরা অবিলম্বে মহাসচিবসহ বন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করছি।”

গত ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পুলিশি অভিযানে সাড়ে চার‍‍`শ নেতা-কর্মী আটক এবং এরপরদিন রাতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আটক করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে প্রিন্স বলেন, ‘কারাগারে যে নেতৃবৃন্দের প্রতি যে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে সেটা অতীতে কখনো দেখা যায় নাই। কারাবিধি অনুযায়ী তাদেরকে দিনের বেলা লকআপ খুলে দেয়ার কথা থাকলেও প্রায় ২৪ ঘণ্টা তাদেরকে লকআপের ভেতরে রাখা হচ্ছে এবং লকআপের ভেতরেও তাদেরকে মানসিক নির্যাতনের মধ্যে রাখা হচ্ছে বলে তাদের আত্বীয় পরিজনদের মাধ্যমে আমরা শুনতে পাচ্ছি।”

‘‘এমনকি অনেক নেতৃবৃন্দের সাথে যখন তাদের আত্বীয়-স্বজনরা দেখা করতে যান, তাদের কল দেওয়া হলেও তাদেরকে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। এগুলোর কারাবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং একই সাথে মানবাধিকার ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে আমরা মনে করি।”

গাজীপুরে গায়েবী মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার স্থানীয় নেতা আলী আজম খানকে তার মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেরি ও হাতকড়া পরিয়ে অংশ নেওয়ার ঘটনাকে ‘বেআইনি, নজিরবিহীন, সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থি উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানান প্রিন্স। এরকম ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানান তিনি।

সরকার পদত্যাগসহ ১০ দাবিতে ঢাকা বাদে সারাদেশে আগামীকালের ঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানান প্রিন্স।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শিরিন সুলতানা, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, মীর নেওয়াজ আলী, তাইফুল ইসলাম টিপু, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, আমীরুজ্জামান শিমুল, শেখ রবিউল ইসলাম রবি, মশিউর রহমান প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

টিএইচ