পঁচাত্তরে নভেম্বরে তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মামলা ‘নির্বাচনের আগে জনদৃষ্টিকে অন্যত্র সরানোর’ ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল অলি আহম্মেদ।
শুক্রবার (১২ মে) বিকালে তেজগাঁওয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে খালেদ মোশাররফসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রসঙ্গ টেনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট এই অভিযোগ করেন।
অলি আহম্মেদ বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে শহীদ নাজমুল হুদার মেয়ের প্রতি আবেদন করতে চাই এবং জাতিকে জানাতে চাই, জিয়াউর রহমান সাহেব ওই সময়ে বন্দি ছিলেন। কোনো অবস্থাতে তিনি ওই হত্যাকান্ডের জন্য নির্দেশদাতাও নন এবং পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে এর সাথে যুক্ত নন। নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্য সরানোর জন্য এটি(মামলা) করানো হচ্ছে, মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরানোর জন্য এটা একটা সুদূর পরিকল্পনা শুরু করেছে। আমরা তাদেরকে বলব, মিথ্যার আশ্রয় নিয়েন না।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদা মোশাররফ বীর উত্তম, কর্ণেল নাজমুল হুদা বীর বিক্রম ও লেফটেন্ট কর্ণেল এটিএম হায়দার বীর উত্তমকে হত্যার ঘটনার প্রায় পাঁচ দশক পর এই মামলা গতকাল।এতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়।
কর্ণেল নাজমুল হুদার মেয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান বৃহস্পতিবার ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
অলি আহম্মেদ বলেন, ‘এতোদিন (৪৮ বছর) পরে নির্বাচনকে সামনে রেখে উনি যে মামলাটা করেছেন তাকে বলব, মা এই কাজটা ভালো করেন নাই। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কোনো অবস্থাতেই এটার সাথে জড়িত ছিলো না।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এতোদিন মামলা হবে না, ৪৮ বছর পর হঠাত ঘুম ভাঙলো… এটা(মামলা) করতে হবে।
‘এখানে আমারই প্রশ্ন জাগে নাজমুল হুদা সাহেবের স্ত্রীতো অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন না। তিনি ওইসময়ে এই মামলা করতে পারতেন। আওয়ামী লীগ তো ক্ষমতায় ছিলো ‘৯৬ সালে, এরশাদের সময়ে মামলায় করতে পারতেন, তখন তিনি কিছু করলেন না। এখন নির্বাচনের আগে এসে এই ধরনের ধোঁয়াশা তুলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব করছেন।
অলি আহম্মেদ বলেন, জাতি এতে বিভ্রান্ত হবে না। জাতি একটা লক্ষ্য স্থির করেছে। এই লক্ষ্য হলো আমাদেরকে চিরদিন জন্য বর্তমান অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, সকল অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, মানুষের ন্যূনতম অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করব, আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা যতদূর পারেন আইনের মধ্যে থেকে জনগনকে সজাগ করেন।
‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে না, আওয়ামী লীগেরও বিরুদ্ধে না, কোনো দলের বিরুদ্ধে না। আমরা শুধু চাই, আমার ভোট আমি দেবো এবং তা নির্ভিগ্নে দেবো। কোনো অস্ত্রধারী ভোট কেন্দ্রে থাকবে না, কেউ রাত্রে বেলা আমার ভোট কেড়ে নেবে না। আমি বিসিক যে রিকোয়ারমেন্ট, আমার যে সাংবিধানিক অধিকার দিয়েছে এই অধিকারটা যেন আমি ভোগ করতে পারি।
সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, এম মোরশেদ, সাকলাইন, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাহ হোসেন মিয়াজি ও আইন সম্পাদক আবুল হাশেম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এআরএস