বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা চলছে। তার প্রতিফলন হিসেবে এগুলো হচ্ছে। অন্যদের বা অন্যদেশের নির্বাচন গুলো নিয়ে এত উদ্বেগ ও আলোচনা হচ্ছে না।
আমাদের প্রতিবেশী চার পাঁচটি দেশের নির্বাচন নিয়ে তো আলোচনা হচ্ছে না। বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, যে বাংলাদেশের মানুষ তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে কিনা। এই শঙ্কা থেকে তো বিষয়গুলো উঠে আসছে। এবং তার মধ্যে এটা একটা পদক্ষেপ। যেটা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসছে। আগামী দিনে এ দেশের জনগণ নির্বাচনের ভোট দিতে পারবে কিনা? নাকি তারা আবারও বঞ্চিত হবে ভোট থেকে। এই স্টেটমেন্টটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশের জন্য দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোট কেন্দ্র দখল করে, ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচনের জয়ী হওয়ার জন্য, এ ধরনের সংগঠন , ব্যক্তি এবং দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সরাসরি এড্রেস করে। এখানে সংবাদ মাধ্যমের কথার বলেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কথা বলেছে, রাজনৈতিক ব্যক্তির কথা বলেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলেছে, যারা নির্বাচনের ভোট চুরি সাথে সরাসরি বা একেবারে ইনডাইরেক্টলি জড়িত থাকবে। এটা তাদের জন্য।
তাদের ভিসা বাতিল হবে এবং আমেরিকাতে তাদের কোন ভিসা দেওয়া হবে না। বিষয়টা নির্বাচনের দিন শুধু ভোট চুরির জন্য নয় কিন্তু, এখনো ভোট চুরি চলছে প্রতিনিয়ত। মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, হয়রানি এগুলোতো ভোট চুরি।
গুলি করে হত্যা করাটাও তো ভোট চুরি।। আমেরিকা জিনিসটাকে ওইভাবেই এড্রেস করেছে। আগামী নির্বাচনে সম্পৃক্ততা জড়িত যে সংগঠন, ব্যক্তি হিসেবে সবাইকে এড্রেস করেছে। এটা ইঙ্গিত দিয়েছে যারা যারা জড়িত থাকবে। আমেরিকা বলেছে, তারা এখন থেকে বিষয়টা এপ্লাই করেছে।
এটা আপনাদের সফলতা কি না এমন প্রশ্নে খসরু বলেন, এখানে আমাদের সফলতা বলতে কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষ যেদিন ভোট দিতে পারবে। ভোট দিয়ে তাদের জনপ্রতিনিধি ও তাদের সরকার করতে পারবে। সেটা হবে বাংলাদেশের মানুষের সফলতা। সেই উদ্দেশ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপের মধ্যে এটা হয়তো একটা ভালো পদক্ষেপ। এবং দেশবাসী এটাকে সাদরে গ্রহণ করেছে।
এদের মাধ্যমে তারা আশা করছে যারা ভোট চুরি সম্পৃক্ত থাকে সেটা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনিতে হোক, বিচার বিভাগে হোক, মিডিয়াতে বা গণমাধ্যমে হোক , সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে হোক সকলের প্রতি একটা পরিষ্কার বার্তা। এর থেকে পরিষ্কার বার্তা কিন্তু আর হতে পারে না। তারা নাম ধরে ধরে বলছে।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশ মানুষকে অর্জন করতে হবে। এটা আমাদের মুক্তির দাবি। আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র থাকবে কিনা। মানবাধিকার থাকবে কিনা। গণমাধ্যমে স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, মুক্তির সংগ্রামের পথে এটা একটা পদক্ষেপ। অনেকগুলো পদক্ষেপ দিতে হবে যাতে তারা আগামীতে ভোট চুরি করে জোর করে ক্ষমতায় না থাকতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে যারা ভোট চুরি করবে বা নির্দেশ দেবে, শুধু তারাই নয়। তার পরিবারের সদস্যরা কিন্তু এ ভিসা থেকে বঞ্চিত হবে। এবং বাতিল করা হবে।
আমীর খসরু বলেন, যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। নির্বাচন তো পরের কথা। নির্বাচনের পরিবেশ থাকতে হবে লেবেল প্লেয়িং করতে হবে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকতে হবে।
আমাদের জনসভায়, র্যালিতে, মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার কারণেই তো এই প্রশ্নগুলো আসতেছে বারবার। যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণ তাদের কথা বলতে পারতেছে না। বাক স্বাধীনতা নেই। জীবনে নিরাপত্তা নেই। আইনের শাসন নেই। সভা মিছিল করতে পারতেছে না।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ভয়ভীতি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ভোটার আগে থেকে ভোট শুরু প্রক্রিয়া চলতেছে। ভোট চুরি অলরেডি বাংলাদেশের চলছে।
বাংলাদেশে নিয়ে আমেরিকার এমন সিদ্ধান্তে সরকার উদ্বিগ্ন নয়, ক্ষমতাসীন দের পক্পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জানতে চাইলে খসরু বলেন, ভালো কথা। আইনের শাসন, বাক স্বাধীনতা, ভোটার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। উদ্বিগ্ন হতে হবে, উদ্বিগ্ন নয় বললে তো আর হবে না।
খসরু মনে করেন, আমেরিকার এমন পদক্ষেপ আগামীদিনের নির্বাচনে সহায়ক পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু এটা একটা সিগনাল, একটা বার্তা। ব্যাপারটা যে বাংলাদেশের মানুষ তার ভোট দিতে পারছে না। বাংলাদেশের মানুষের সংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
এইচআর