অবৈধভাবে অর্জিত ক্ষমতা ও লুটপাটকৃত সম্পদ আঁকড়ে থাকতে সরকার অতীতের মত আবারও বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’।
"অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা ও রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের ১ দফা দাবিতে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে আজ এ অভিযোগ করেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মন্জু।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার-এর সভাপতিত্ত্বে সকাল ১১টায় বিজয় নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্বরে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দলের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানার সঞ্চালনায় সমাবেশে দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী সহ মন্ত্রী-উপদেষ্টারা এখন নানা দেশের সরকার প্রধানদের কাছে ধর্ণা দিয়ে বেড়াচ্ছেন।
দেশের জনগণের কাছে তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ভারতের চতুর্মূখী দ্বন্দ্বে সরকার সুবিধা নিতে মরিয়া যা দেশকে ভয়ঙ্কর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গণতন্ত্রকে চুড়ান্তভাবে হ্ত্যা করে তারা বাংলাদেশকে উত্তর কোরিয়া বানানোর পায়তারা করছে। তারা চায় ছলে, বলে, জোরজবরদস্তি করে আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করতে। তিনি বলেন, বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকার আবার তার দলীয় পুলিশ সদস্যদের লেলিয়ে দিয়েছে।
শুধু রাজনৈতিক কর্মী নয় মানবাধিকার সংগঠক ও বিশিষ্ট নাগরিকদের হয়রানী করা হচ্ছে। পতনের লক্ষণ যত স্পষ্ট হচ্ছে সরকার ততই বেপরোয়া হচ্ছে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে মন্জু বলেন, হামলা-মামলা বাদ দিন, জনগণের সাথে যুদ্ধ করবেননা। আপনাদের পতনের লক্ষণ স্পষ্ট, যত দেরী করবেন তত বিপদ বাড়বে। জনগণের ভাষা বুঝুন, ক্ষমতা ছাড়ুন।
সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর মেজর (অব.) ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, দেশে যখন ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারন করেছে, তখন হীরক রানীর দেশের শাসক মহোদয় নির্বিকার। চার/পাঁচ গুন বেশী টাকা দিয়েও স্যালাইন কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না, হাসপাতালের বারান্দায়ও কোন বিছানা পাওয়া যাচ্ছে না। মশা মারার নামে দুই সিটি কর্পোরেশন জাতির সাথে তামাশা করে যাচ্ছে, নকল মশা মারার ঔষধ আমদানী করে কোটি কোটি টাকার প্রতারনা করেও বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছেনা। অথচ নিরপরাধ লোকদের বিচারের নামে চলছে ব্যাপক হয়রানী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, গনতন্ত্র হত্যা করে মিথ্যা লুটপাটের উন্নয়ন নিয়ে ভূয়া লেখক, বুদ্ধিজীবিদের দিয়ে দেশে-বিদেশে অসংখ্য মিথ্যা কলাম লিখিয়ে দেশের টাকা অপচয় করে এই ফ্যাসিবাদী সরকার জাতির কাছে ধরা পড়ে গেছে। ড. ইউনুসের মত জাতির সন্মানিত ব্যক্তিকে যেভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে তা পৃথিবীতে বিরল।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান, দুনিয়াখ্যাত ফটোগ্রাফার ড. শহীদুল আলম, ‘মায়ের ডাক’র সংগঠকবৃন্দকে যেভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে যা দেশের জন্য অসন্মানজনক। প্রায় দেড় লক্ষ মামলায় প্রায় ৫০ লক্ষ রাজনৈতিক কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বিচারিক আদালতের মাধ্যমে হয়রানি দেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় তৈরী করেছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব ও যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গাজী নাসির, আব্দুল হালিম খোকন, সেলিম খান, অ্যাড. আলী নাসের খান, এনামুল হক, আজিজাহ সুলতানা, আমেনা বেগম, সফিউল বাশার, শাহনুর আক্তার শিলা, জেসমিন আক্তার মুক্তা, তাহমিনা আক্তার, জামিল আব্দুর রব, যুবনেতা মাহমুদ আজাদ, আমিরুল ইসলাম জয় প্রমূখ। সমাবেশ শেষে ১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
এইচআর