নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল সরকারের সুস্পষ্ট ও পূর্ব পরিকল্পিত এজেন্ডা বাস্তবায়নের স্বার্থে বলে অভিহিত করে তা প্রত্যাখান করেছে প্রকৌশলীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এ্যাব।
একইসঙ্গে তফসিল স্থগিতের দাবি জানিয়ে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু ও মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ আজ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠিয়ে এবং নির্বাচনের পরিবেশ না থাকা সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণা আমরা প্রত্যাখ্যান করে তা স্থগিতের আহবান জানাচ্ছি।
নেতৃদ্বয় বলেন, দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করে দিয়েছে এবং বিরোধী দলগুলোকে এমনকি পেশাজীবীদেরকে গুম, খুন, মামলা, হামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতনসহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিভিন্ন অজুহাত তৈরি করে বিএনপির মত অত্যন্ত জনপ্রিয় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম ও আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ সিনিয়র নেতাদের কারাগারে পাঠিয়ে বিরোধী দমনের চূড়ান্ত নজির স্থাপন করে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে আবারো ক্ষমতায় আসার সব ব্যবস্থা করেছে। সে কারণেই সরকারের পদলেহনকারি আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন জনগণের দাবি দাওয়া আমলে না নিয়ে তফসিল ঘোষণা করায় দেশে সংঘাতময় পরিবেশ তৈরি হচ্ছে এমনকি লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই সোনার বাংলাদেশ আজ গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে।
তারা বলেন, সরকার এমনিতেই তথাকথিত উন্নয়নের নামে দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে, জাতির মেরুদণ্ড শিক্ষা ব্যবস্থাকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা নিজেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অন্তিম পর্যায়ে চলে গেছে। সরকারের সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে, সাধারণ মানুষ সাধারণভাবে কোনো সেবা পায় না।
এ্যাব’র শীর্ষ দুই নেতা বলেন, মোট কথা এই সরকার যেকোনো মূল্যে দেশটাকে খুবলে খেয়ে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করতে চায় যাতে তারা কোনো একদিন ক্ষমতা থেকে চলে গেলে পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের পক্ষে কোনোমতেই দেশকে একটা স্থিতিশীল, স্বাভাবিক ও মানুষের বসবাস করার মত পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব না হয়। দেশের মানুষকে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে দেশটা কোনো ব্যাক্তি বা দলের নয় বরং দেশটা দেশের প্রতিটা নাগরিকের। তাই দেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে এবং নির্বাচন কমিশনেরও দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে দায় দায়িত্ব আছে।
তারা আরও বলেন, সরকারের সুস্পষ্ট ও পূর্ব পরিকল্পিত এজেন্ডা বাস্তবায়নের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ঘোষিত নির্বাচনের তফসিল সম্পূর্ণরুপে প্রত্যাখ্যান করছে ও স্থগিতের দাবি জানাচ্ছে এবং অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির সংগ্রামী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান ওমর বীর উত্তম ও আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ সকল রাজবন্দির আশু মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে ও সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন থেকে সরে এসে দেশ ও জনগণের জন্য মঙ্গলজনক পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে।
এআরএস