- ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব-স্বাধীন বিচার বিভাগ
- টানা তৃতীয়বার আইনমন্ত্রী: গড়লেন অনন্য নজির
- কসবা-আখাউড়াবাসীর আস্থার প্রতীক আনিসুল হক
তৃণমূল থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়— কোথায় নেই সাফল্যের জয়গান। সর্বত্রই সফল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম একটানা তিনবারের আইনমন্ত্রী। জনভাষ্য, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারফ্যাক্ট চয়েজও তিনি। যার ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেই বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সুযোগ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সেই আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন আনিসুল হক।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই বিচার বিভাগে নিজের ক্যারিশম্যাটিক ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের মাধ্যমে ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে নিজেকে করেছেন অলংকৃত। দেশের বিচার বিভাগ এখন স্বাধীন। বিচার বিভাগে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়াও। যার বাস্তবতা ফুটে ওঠে বিশ্বব্যাপী গেলো করোনা মহামারিতেও। শুধু বিচারাঙ্গনেই নয়, তৃণমূলেও আস্থার প্রতীক আনিসুল হক। যার প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও। দুই লাখ ২০ হাজার ৬৬৭ ভোটে তাকে জয়ী করান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া)-এর বাসিন্দারা। যার প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিলেন ভোটের আগেই।
টানা তৃতীয়বারের মতো আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে অনন্য নজির গড়া আনিসুল হকের আগে আর কেউ একবারের বেশি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাননি। আরও একবার এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আনিসুল হক। একইসঙ্গে নিজ নির্বাচনি এলাকা কসবা ও আখাউড়া উপজেলার জনগণকেও ধন্যবাদ-কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসন থেকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আনিসুল হককে তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রী করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কসবা-আখাউড়ার বাসিন্দারাও।
কসবার বায়েক গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারেক মেম্বারের জামাতা মো. আজাদ হোসাইন বলেন, কসবা-আখাউড়ার বাসিন্দাদের হিরো আনিসুল হক। সরেজমিন না এলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না তার জনপ্রিয়তা কতটা। জনসাধারণকে দেয়া তার সেবা আর উন্নয়ন কসবাবাসী আমৃত্যু স্মরণে রাখবে। মো. আজাদ হোসাইন আরও বলেন, আনিসুল হক এমন এক পরিবারের সন্তান— যাদের পূর্বপুরুষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই সুশিক্ষায় শিক্ষিত। দেশ স্বাধীনের পর এমন সুশিক্ষিত রাজনৈতিক পরিবার এ অঞ্চলে পাওয়া কঠিন। কসবা-আখাউড়ার সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সন্তানের মতো আগলে রাখেন তিনি। দল-মত নির্বিশেষে সবার মধ্যে তিনি আন্তরিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
আখাউড়ার বাসিন্দারা বলছেন, আনিসুল হক উন্নয়ন, চাকরি, বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানের ব্যাপক নজির সৃষ্টি করেছেন। তার পিতা প্রয়াত সিরাজুল হকও ছিলেন দেশবরেণ্য রাজনীতিক ও আইনজীবী এবং স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা। আইনি শিক্ষায় শিক্ষিত ও পিতার আদর্শে আদর্শিত আনিসুল হক আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়ও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন সাফল্যের সঙ্গে। সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই এবারও তাকে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা— এমনটাই মনে করেন কসবা-আখাউড়াবাসী।
আনিসুল হক ঢাকার সেন্ট যোসেফ হাই স্কুল থেকে ‘ও লেভেল’ সম্পন্ন করেন। এরপর ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে অ্যাডভান্সড লেভেল (এ লেভেল) সম্পন্ন করেন। ‘এ লেভেল’ শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং মেধাতালিকায়ও স্থান অধিকার করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।
আনিসুল হক ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে ঢাকা জেলা বারে এবং ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন এবং ২০১০ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হন। পিতা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের মৃত্যুর পর আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা ও জেল হত্যামামলার চিফ স্পেশাল প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান। তার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা শেষ হয় এবং এ দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন।
এছাড়া আনিসুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনের চিফ কাউন্সিল ও স্পেশাল প্রসিকিউটর ছিলেন। আনিসুল হক ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে সম্পর্কিত পিলখানা হত্যামামলার প্রধান প্রসিকিউটরও ছিলেন। উপমহাদেশের প্রখ্যাত আইনজীবী, গণপরিষদ ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা ও জেল হত্যামামলার প্রধান কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের বড় ছেলে আনিসুল হক।
আরএস