বিএনপি

বাংলাদেশের অনিবার্য পরিণতির দায় আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪, ০১:১১ পিএম
বাংলাদেশের অনিবার্য পরিণতির দায় আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে

বাংলাদেশের বিদ্যমান অস্বাভাবিক অচলাবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে তার অনিবার্য পরিণতি ও সম্পূর্ণ দায় আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। আজ দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তুলে ধরেন।

বিএনপি জানায়,গণতান্ত্রিক অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক সংকটকে ঘনীভূত করে তুলবে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রমাণ করে, এই দলটি কখনোই নিয়মতান্ত্রিকভাবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রপরিচালনা করেনি।

আরও বলা হয়,পৃথিবীর ইতিহাসে, বিএনপির মতো আর কোন রাজনৈতিক দল কি আছে, যার ৫০ লক্ষেরও বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়েছে? কোন অপরাধে, আমাদের ২ হাজার ৭০০ এরও বেশি নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনা ও তাঁর অনুগত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা করেছে? কেন প্রায় ৭০০ জন নিরপরাধ মানুষকে গুম করেছে? কিসের ভিত্তিতে, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাকস্বাধীনতা হরণ করে, একের পর এক সাজানো মামলার পাতানো রায় দেওয়া হচ্ছে?
বানরের পিঠা ভাগের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ, ২৫ হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে কেন ফ্যাসিস্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করেছে? এই সময়ে, বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে কেন ১১ জন কর্মীকে কারাগারে হত্যা করেছে?

এই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরেই নিহিত, দেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে, গণতন্ত্রের পক্ষের প্রধান শক্তি হিসেবে, বিএনপির আত্মত্যাগ তথা সার্থকতা। কারণ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে এবং শান্তিপূর্ণ ও অহিংস কর্মসূচিতে, বিএনপি মোকাবেলা করে চলেছে সহিংস শেখ হাসিনা সরকারকে। অন্যদিকে ক্ষমতার মোহে অন্ধ আওয়ামী লীগ, একটি দানবীয় অপশক্তিতে পরিণত হয়ে, মানবাধিকার লঙঘনকে ধারণ করেছে ঘৃণ্য রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে।

গত ১৫ বছর ধরে, বিএনপির সাথে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের উপর যে নৃশংস অত্যাচার-অবিচার হয়ে আসছে, দেশী-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের অজস্র প্রতিবেদনে তা লিপিবদ্ধ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শামিল হওয়ার অপরাধে, ফ্যাসিবাদের সাথে আপোষ না করার অজুহাতে, বিএনপির ৫০ লক্ষ নেতা-কর্মী তাঁদের নাগরিক জীবন থেকে বঞ্চিত। আমাদের প্রত্যেকে, প্রতিদিন, পুলিশি নিপীড়ন ও বিচার বিভাগের অবিচারের শিকার হচ্ছি।
গায়েবি ও বানোয়াট মামলায়, কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই, তালিকা করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিএনপি ও সকল অঙ্গ-সংগঠনের সর্বস্তরের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

আরও দাবী তোলা হয়,রাষ্ট্রপরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকারের যে ব্যর্থতা, তার খেসারত দিতে হয়েছিল পুরো বাংলাদেশি জাতিকে দূর্ভিক্ষে অকাতরে প্রাণ দিয়ে। যে সরকারের আমলে ১৫ লক্ষ লোক না খেয়ে দুর্ভিক্ষে মারা যায়, তার চাইতে অথর্ব-অযোগ্য-ব্যর্থ প্রশাসন, আর কি হতে পারে?শেখ হাসিনা বাকশালের মতো করেই বাংলাদেশে আবারও ৭৫ এর মত একদলীয় শাসন কায়েম করতে চাচ্ছে। হাসিনার একমাত্র সাফল্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত রেখে পৃষ্ঠপোষকতা করছে লাগামহীন নৈরাজ্য ও লুটপাটে,চালাচ্ছে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি। বিভিন্ন দেশের রাস্তা নির্মাণের ব্যয় তুলনা করে বিশ্বব্যাংক দেখিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করতে খরচ পড়ে ১১ মিলিয়ন ডলার - যা কিনা বিশে^ সর্বোচ্চ! শুধু রাস্তই নয়, প্রতিটি খাতের প্রতিটি খরচেই হাসিনা সরকারের অস্বাভাবিক লুটপাটে বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমার রহমান, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল রিজভী সহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ আর/বিআরইউ