এবি পার্টির নেতারা বলেছেন; দেশের মানুষ আজ চরম সমস্যায় দিনাতিপাত করছে। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে সবচেয়ে বেশী সংকটে পড়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। তারা না পারছে কারও কাছে হাত পাততে না পারছে সীমিত আয় দিয়ে সংসার চালাতে। এক চরম মানসিক কষ্টে চলছে তাদের জীবন। তাই নিজেদের সীমিত সামর্থ্যে পুরো রমজান মাসে সমস্যাগ্রস্ত ৫০ হাজার মানুষের জন্য পুষ্টিকর খাবার বিতরণের মানবিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এবি পার্টি।
আজ বিকেল তিনটায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। “মাহে রমজানে দ্রব্যমূল্য কমান, অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান। নৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় রমজান হোক প্রেরণা।”
এই দাবি ও আহ্বান সূচক সংবাদ সম্মেলনে জনাব মঞ্জু বলেন; রাজনৈতিক দলের কাজ সরকার এবং রাষ্ট্রকে তার দায়িত্ব ও ব্যর্থতা সম্পর্কে সতর্ক করা পাশাপাশি মানুষকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করা। সকল নাগরিকদের দুর্দশা লাঘবে রাজনৈতিক দল নিজে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনা এটা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু ডামি সরকারের চরম গাফলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের সামর্থানুযায়ী বিপন্ন জনগণের পাশে এসে দাঁড়াতে হয়।
এবি পার্টি এ কারণেই রমজানে প্রতিদিন সমস্যাগ্রস্ত ১৫০০ মানুষের জন্য নিরাপদ পুষ্টিকর খাবারের আয়োজন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন; গত বছর কিছুটা অপরিকল্পিত ও পরীক্ষামূলকভাবে আমরা এরকম সমস্যাগ্রস্ত মানুষদের জন্য পবিত্র রমজানকে উপলক্ষ্য করে ইফতারের সময় ‘গণ-ইফতার’ আকারে একবেলা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার প্রদানের ব্যবস্থা করেছিলাম।
গত বছরের মত এবারও আমরা সাহস করে সে কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। পুষ্টিকর নিরাপদ খাবার প্রদানের আইডিয়াটিকে আমরা মডেল আকারে ছড়িয়ে দিতে চাই। ইতোমধ্যে অনেকে আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকায় সীমিত ও বৃহৎ আকারে এ কর্মসূচি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি সেসকল উদ্যোক্তাদের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
সংবাদ সম্মেলনে গণ-ইফতার কর্মসূচির আহ্বায়ক ও দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন; প্রতিদিন এক দেড় হাজার সমস্যাগ্রস্ত মানুষকে একসাথে বসিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইফতার করানোর যে কর্মসূচি গত বছর হাতে নিয়েছিলাম তা এবার আরও সুন্দরভাবে করার পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।
তিনি বলেন, শৃঙ্খলার সাথে খাবার বিতরণ রমজান ছাড়া অন্য সময়ে করা খুব কঠিন। আমরা এই মডেল নিয়ে গবেষণা করছি এবং সাফল্যের সাথে অনুভব করছি যে, এ ধরনের মানবিক কর্মসূচি রাষ্ট্রীয়ভাবে সততার সাথে করতে পারলে মহৎপ্রাণ বিত্তবানেরা আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন কিন্তু আমাদের সরকার হলো পীড়নমূলক সরকার। জনগণের অধিকার হরণ করা এবং জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলাই তার কাজ।
তিনি রমজানে দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতি রোধে সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতার সমালোচনা করে বলেন, সরকারি দলের মাস্তানদের চাঁদাবাজিতে প্রতিটি পাড়া মহল্লা আজ দোজখখানায় পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি দলের নেতারা বলেছেন অর্থ সংকটে নাকি তারা ইফতার মাহফিল করবেনা। আসলে এটা এ দেশের নব্বই ভাগ মানুষের ধর্মীয় যে সংস্কৃতি সেটা ধ্বংসেরই একটা চক্রান্ত। আমরা দেখতে পাচ্ছি নানা দিবস উদ্যাপন, নব্য সৃষ্ট লুটেরাদের বিনোদনের মাহফিল, বেগম পাড়ায় বাড়ি নিয়ে তাদের কোন বক্তব্য নেই, কিন্তু রমজানের ইফতার নিয়ে তাদের সংকট। এটি দেশের নব্বই শতাংশ মানুষের ধর্মীয় সংস্কৃতিকে মুছে ফেলার একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমাদ বারকাজ নাসির, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমেনা বেগম, ফেরদৌসী আক্তার অপি, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুর রব জামিল, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বায়ক সিএম আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিআরইউ