বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘এই সরকারের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা। জাতি চায় যারা চিহ্নিত স্বৈরাচারের দোসর, তারা যেন রাষ্ট্রের কোনো স্থানে না থাকে। এরা যদি থাকে তাহলে রাষ্ট্র, সরকার, দেশকে ব্যর্থ করে দেবে। বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দেবে। জনগণের স্বপ্নের মৃত্যু হবে। সরকারের কাছে সাফ বার্তা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে তাদের অবশ্যই সরিয়ে দিতে হবে। তারা খুনিদের ডান হাত, বাম হাত ছিল। খুনিদের সহচর ছিল। তাদেরকে এর প্রায়শ্চিত্ত বহন করতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের লোকনাথ ময়দানে জেলা জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা এমন একটি দেশ চাই, যে দেশ অন্য কোনো শক্তি কিংবা দেশের অধীনে তা মেনে নেবে না। পৃথিবীর ১০টা দেশ যেমন মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে। কিন্তু কোনো প্রভু আমরা মেনে নেব না। কেউ আমাদের প্রভুত্ব করতে আসলে জাতি তাকে সঠিক জবাব দেবে।’
শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিষ্ট সরকারের অন্যতম আবিষ্কার ছিল আয়নাঘর। আয়নাঘর থেকে খুব কম সৌভাগ্যবান মানুষ তাদের আপনজনের বুকে ফিরে এসেছেন। বেশিরভাগের কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের শেষ করে দেওয়া হয়েছে। বেঁচে থাকলে ফিরে আসতেন। কোথায় তাদের দাফন করা হলো পরিবারকে তাও জানতে দেওয়া হলো না।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘৩০ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ ৩০০ টাকা। এই ৩০০ টাকা করছিল বাণিজ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের যারা চেলাচামুন্ডা ছিল। তারা এই সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। ৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এখনো সেই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হয়নি। হয়তো সেই সিন্ডিকেট এখনো জাতির ঘাড়ে বসে আছে। এই সিন্ডিকেট ভেঙে তছনছ করে দিতে হবে।’
জামায়াত হিংসার রাজনীতি করে না জানিয়ে জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের একাধিকবার বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ২ দিনের মধ্যে তাদের ৫ লাখ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হবে। আমি জিজ্ঞেস করতে চাই, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর কি এদেশে ৫ লাখ মানুষ খুন হয়েছে? বাংলাদেশের জনগণকে সাবধান থাকতে হবে, এই বিপ্লবে যারা পরাজিত হয়েছে পতিত স্বৈরাচার তাদের অন্তরে জ্বালাও-পোড়াও সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মধ্যে তারা কিছু অঘটন ঘটাতে চাইছে।’
আরএস