নুরুল হক নুর

অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও ২ বছর সময় দিতে হবে

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ১১:১৫ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও ২ বছর সময় দিতে হবে

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও দুই বছর সময় দিতে হবে। দেশের সংস্কারের ক্ষেত্রে এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। হাসিনার পতন না ঘটলে তো আরও ৪ বছর থাকতো, তাই এই সরকারকে দুই বছর সময় দিলে তো কোন ক্ষতি নেই।

বলেছেন, কোন উপদেষ্টা ব্যর্থ হলে তাদের সমালোচনা করতে হবে, দরকার হলে তাদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করতে হবে। কিন্তু দেশের সংস্কারের কাজ ও গণহত্যার বিচারগুলো, এই সরকারকেই করতে হবে। শুধু পুলিশের সংস্কার নয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিচারবিভাগ, নির্বাচন কমিশন, সশস্ত্র বাহিনীসহ সব ক্ষেত্রে সংস্কার লাগবে।

রোববার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে এক আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন।

ডাকসু ভবনে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর তৎকালীন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের উপর নৃশংস হামলা করে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ডাকসু হামলার সাথে জড়িতদের বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

নুরুল হক নুর বলেন, ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছিল। সেদিন ঢাবির প্রক্টরকে কল দিয়েও আমরা সহযোগিতা পাইনি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের হামলাগুলোর পিছনে ঢাবির প্রক্টর গোলাম রব্বানী ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করতো। ছাত্রলীগের সকল অপকর্মের দায় এই গোলাম রাব্বানী ও সাবেক ভিসি আখতারুজ্জামানকে নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমে শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করে। সেখানে পড়াশোনা করে কেউ কেউ বিসিএস ক্যাডার হয়। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবার এত খারাপ যে, খাবার খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই বিশ্বিবদ্যালয়ে গবেষণা ও খাবারের ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সারাদেশে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আগামীতে দেশের তরুণরাই নেতৃত্ব দিবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, শুধুমাত্র ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এদেশীয় ‘র’ এর এজেন্ট কুখ্যাত মাফিয়া সাদ্দাম ও সনজিতের নেতৃত্বে ডাকসুতে নারকীয় হামলা করে জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বিচারহীনতার ৫ বছর। আজও আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেসময় পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলো, কোন হামলা হয়নি, হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ঐ সময় শিক্ষক নামের কলঙ্ক প্রক্টর গোলাম রাব্বানীকে কল দিলে, সে বলে, বন্ধ ক্যাম্পাসে কেন এসেছি? তাকে বারবার কল দিলেও সে আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। ওই হামালায় সাবেক উপাচার্য আক্তারুজ্জামানেরও ইন্ধন ছিলো। এসব শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করতে হবে, যারা হামলা করেছে, এদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। অবৈধভাবে যারা ডাকসুতে বিজয়ী হয়, তাদের ডাকসু পদ বাতিল করতে হবে এবং ডাকসু নির্বাচনের তদন্ত করতে হবে। যে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের হত্যা, নির্যাতন করেছে তাদের নাম মুছে ফেলতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে অনেক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, ছাত্রলীগের ক্যাডার প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে চাকরি করে। এদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি সানাউল্লাহ, সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম। আলোচনা সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতির শিক্ষক রাশাদ ফরিদী এছাড়াও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ডাকসু হামলায় আহত ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা আবু হানিফ, মাহফুজুর রহমান খান, মনজুর মোর্শেদ মামুন, রবিউল হাসান প্রমুখ।

ইএইচ