নূরুল ইসলাম বুলবুল

আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো বাজারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো বাজারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে

আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো বাজারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মূল কারণ হচ্ছে সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। জনগণকে স্বস্তি দিতে সরকারকে বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে কঠোর হতে হবে। বাজার কারসাজি জামায়াতে ইসলামী মেনে নিবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আজ থেকে বাজার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট এলাকায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, আজকে দেখা যায় চাঁদাবাজদের হাত বদল হয়েছে। পথে-ঘাটে, হাটবাজারে নতুন নতুন চাঁদাবাজ দেখা যাচ্ছে। জনগণও তাদেরকে চিনে রাখছে। আগামীতে তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

নূরুল ইসলাম বুলবুল উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে; অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। তিনি রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সিনেমা হল, মদের বার, দিনের বেলা খাবার হোটেল বন্ধ রাখতে আহ্বান জানান। রোজাদারদের শান্তি ও স্বস্তির জন্য রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণেও দাবি জানান মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।

সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, রমজান মাসে রোজাদারদের স্বস্তি দিতে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পণ্য দাম নামিয়ে আনতে হবে। সিন্ডিকেটের হাত থেকে জনগণকে মুক্ত করতে পারলে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার সীমায় থাকবে।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শুধু বাজার সিন্ডিকেট নয়, সিন্ডিকেট রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে চলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রোজাদারদের শান্তি ও স্বস্তি দিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন প্রদান করতে হবে। লোড শেডিং দিয়ে সেহরি, ইফতার ও তারাবীর নামাজে রোজাদারদের কষ্ট দেওয়া চলবে না। পুরো রমজান মাসে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দাবি করেন ড. মাসুদ। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ১১ মাস ব্যবসা করেন, এক মাস ব্যবসা না করলে ক্ষতি হবে না এবং আল্লাহ ব্যবসায় বরকত দান করবেন। রমজান মাসে অধিক মুনাফা না করে মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে সীমিত লাভে পণ্য বিক্রি করার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রমজান মাসে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে পণ্যের দাম কমানো হয়, যাতে করে রোজাদার শান্তি ও স্বস্তিতে রোজা রাখতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে সেই ব্যবস্থা নেই। জামায়াতে ইসলামী প্রতি বছর রমজানের শুরুতেই রাষ্ট্রের কাছে সেই দাবি জানিয়ে আসছে, কিন্তু রাষ্ট্র কর্ণপাত করেনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে রমজানে মাসে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার কারসাজি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, রমজানে প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উপর ভর্তুকি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে জনগণ উপকৃত হবে। জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা মোশারফ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, আবদুস সালাম, সৈয়দ সিরাজুল হক, কামরুল আহসান হাসান সহ মহানগরী ও বিভিন্ন থানার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিজয়নগর-কাকরাইল হয়ে শান্তিনগর বেইলী রোড গিয়ে মিছিল শেষ করেন।

ইএইচ