জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে ভারত বা পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির কোন স্থান হবে না।"
শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে আরও বলেন, "হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা শুধুমাত্র একটি সরকারের পতন ঘটিয়ে আরেকটি সরকার বসানোর জন্য হয়নি। বরং জনগণ রাষ্ট্রে বসানো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দিকে এগিয়ে যেতে চেয়েছিল। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি অধিকারভিত্তিক এবং মর্যাদাভিত্তিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের স্বপ্নে বিশ্বাসী।"
তিনি জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল গঠনের প্রত্যয় নিয়ে কাজ করবে। "২৪ জুলাই ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু করেছে," তিনি বলেন।
নাহিদ ইসলাম সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, "স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সব সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে আমাদের একটি নতুন সংবিধান প্রয়োজন, যা জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুযোগ দেবে।"
এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, "বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র আমরা ভেঙে দিয়েছি। আর কখনো বাংলাদেশকে বিভাজিত করা যাবে না। বাংলাদেশে ভারত-পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির কোনো ঠাঁই হবে না।"
তিনি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে সমান গুরুত্ব ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বলেন, "আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি চাচ্ছি, যেখানে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বিভেদের বদলে ঐক্য, প্রতিশোধের বদলে ন্যায়বিচার এবং পরিবারতন্ত্রের বদলে মেধা মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না।"
"আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকেশনে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে মূলধারায় তুলে আনা হবে। সাধারণ মানুষই হবে ক্ষমতার উৎস, এবং তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে," তিনি বলেন।
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানটি বিকেল সোয়া চারটায় শুরু হয় এবং সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনটির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন, যা এক পর্যায়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
ইএইচ