ধর্ষণ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে জামায়াত মহিলা বিভাগের মানববন্ধন

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
ধর্ষণ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে জামায়াত মহিলা বিভাগের মানববন্ধন

ধর্ষণ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে ৫ দাবিতে এবং শিশু আছিয়াকে পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ।

শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। 

মানববন্ধনে “বেঁচে থাকা ও নিরাপত্তার অধিকার দাও”, “ধর্ষকদের প্রকাশ্য জনসম্মুখে ফাঁসি চাই, দিতে হবে”, "ধর্ষণ মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি কর, করতে হবে", "ধর্ষণ মানলায় জামিন বিধান বাতিল কর, করত  হবে", " ধর্ষণ মামলায় এক বিধান, এক শাস্তি; ধর্ষককে ফাঁসি দিবি, দিতে হবে "- এই দাবিতে সহস্রাধিক উপস্থিত নারীর কণ্ঠে স্লোগান তুলে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।  

অনুষ্ঠিত মানববন্ধন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক নুরন্নিসা সিদ্দিকা বলেন, আছিয়া হত্যার মামলার রায় এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে এবং আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। সকল ধর্ষককে ফাঁসি দিতে হবে। ধর্মহীনতার চর্চা এবং নৈতিকতাহীন শিক্ষা মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে জনগণকে উজ্জীবিত করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। বিচারের দীর্ঘ সূত্রিতা পরিহার করতে হবে।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধর্ষণ মামলায় কারাদণ্ডের বিধান বাতিল করে শুধু মৃত্যুদণ্ডের (ফাঁসি) বিধান করতে হবে। ধর্ষকরা যুগে যুগে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারণেই সমাজ থেকে ধর্ষণ নামক ব্যাধি দূর করা যায় নি।

এসময় তিনি আরো বলেন, ধর্ষককে তার নিজ এলাকায় জনসম্মুখে ফাঁসি দিতে হবে। এতে পরবর্তীতে কেউ ধর্ষণের অপরাধ করার সাহস পাবে না। তিনি বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলা নিষ্পত্তি করার এবং জামিন বিধান বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে আমরা এই ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই। শিশু আছিয়াকে শুধু ধর্ষণ করা হয় নি হত্যাও করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের সরকারের ঘোষণা ও আমাদের ৫ দাবির আলোকে বিচার করতে হবে। নতুবা নারী সমাজ কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী, শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যা  দ্রুত বিচার আইনে ধর্ষকদের বিচার করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের ছত্রছায়ায় ধর্ষণের ঘটনা সমাজে বিস্তার করেছে। ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করেছে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তার বিচার করেনি। এতেই স্পষ্ট আওয়ামী লীগ ধর্ষণের বিস্তার ঘটিয়েছে।

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের কাছে নারী সমাজের ৫ দাবি তুলে ধরার অর্থ হচ্ছে সরকারকে জনস্বার্থে ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে প্রয়োজনীয় কাজ দেখিয়ে দেওয়া। সরকার এই ৫ দাবি বাস্তবায়ন না করলেই নারী সমাজকে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আগে মানুষের নৈতিকতার সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধীরা বেরিয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে না আসলে রাষ্ট্র সংস্কারের সুফল পাওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য নাজমুন্নাহার নীল বলেন, সমাজে মূল্যবোধ আর নৈতিকতার অভাব। তাই আমরা আর নিরব থাকতে পারি না। শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতার কোনো উপাদান নাই। শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নামার কারণেই সমাজের আজ করুন পরিণতি। আইন ও শালিস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী বিগত ১০ বছরে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ধর্ষণের মামলা হলেও একটি মামলারও বিচার হয়নি। তিনি সকল ধর্ষণ মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করে ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান ও মার্জিয়া বেগম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি রোজিনা আখতার, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য যথাক্রমে আয়েশা সিদ্দিকা পারভীন, সালমা সুলতানা, ইরানি আখতার, খোন্দকার আয়েশা সিদ্দিকা, মাহবুবা জাহান সহ মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

বিআরইউ