নতুন বাংলাদেশ গঠনে এক লাখ তরুণ খুঁজছে ‘ন্যাশনাল মুভমেন্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
নতুন বাংলাদেশ গঠনে এক লাখ তরুণ খুঁজছে ‘ন্যাশনাল মুভমেন্ট’

নতুন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে এক লাখ সৎ, সচেতন ও নির্ভরযোগ্য তরুণ খুঁজছে ‘ন্যাশনাল মুভমেন্ট’।

রোববার বিষয়টি জানিয়ে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট রাষ্ট্রচিন্তক মুহিব খান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে এ ঘোষণা দেন।

এর আগে ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর ‘নতুন চিন্তা, নতুন শক্তি, নতুন বাংলাদেশ’ স্লোগান সামনে রেখে "ন্যাশনাল মুভমেন্ট" নামে এ সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। সংগঠনটি স্বাধীনতা, সুশাসন, উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও গণঅধিকার—এই পাঁচটি রাজনৈতিক মূলমন্ত্রকে ধারণ করে গঠিত হয়।

মুহিব খান বলেন, এ দেশ ও জাতির হাজার বছরের ইতিহাস অধ্যয়ন এবং রাজনৈতিক, ভৌগোলিক বাস্তবতা ও জাতীয় চরিত্র বিশ্লেষণ করেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তবে সে সময় বাংলাদেশের রাজনীতির বাস্তবতায় অনেকে এর তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারেননি। একজন কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তাঁর এই উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অবমূল্যায়ন করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আট বছর পর ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান তাঁর ২০১৬ সালের ঘোষণারই প্রতিফলন বলে তিনি মনে করেন। এমনকি তাঁর ১৬ কোটির ১৬ দফায় উল্লেখিত সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনাগুলোও বর্তমানে বিভিন্ন সংগঠনের আলোচনায় এসেছে।

তিনি জানান, সে সময় অনেকে ‘ন্যাশনাল মুভমেন্ট’ নামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল। অথচ জাতীয় কেরাত সম্মেলন, জাতীয় কনভেনশন, জাতীয় নির্বাচন, জাতীয় কবি, জাতীয় অধ্যাপক কিংবা জাতীয় ফল-ফুল নিয়ে কোনো বিতর্ক না থাকলেও ‘জাতীয় আন্দোলন’ নামটি নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। সে কারণেই তিনি তখন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা না করে গবেষণা ও নীরব গণসংযোগের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে গেছেন।

তিনি মনে করেন, দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মী-সমর্থকদের নিজেদের অবস্থান ও নেতৃত্ব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়ার জন্য আরও সময় দরকার ছিল। ইসলামী ছাত্র ও তরুণ সমাজেরও তাঁদের রাজনৈতিক দল, নেতৃত্বের যোগ্যতা, কর্মপদ্ধতি ও ভবিষ্যৎ আন্দাজ করার প্রয়োজন ছিল। এই সময়ের মধ্যে তিনি তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা, কবিতা, সংগীত ও বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এসব বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন।

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাঁর সেই ভাবনার বাস্তব রূপ বলেই মনে করেন তিনি। তার দেওয়া ‘নতুন বাংলাদেশ’ স্লোগানই দেশের তরুণদের জাগিয়ে তুলেছে। যদিও দেশের নবগঠিত সরকার, সেনাপ্রধান ও ছাত্র নেতৃত্ব নিয়ে অনেকে আত্মতুষ্ট, তিনি এখনো পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। বরং দেশ গঠনের জন্য সততা, দেশপ্রেম ও সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনাসম্পন্ন তরুণদের একত্রিত করার সময় এসেছে।

এ কারণেই তিনি এক লাখ তরুণ বেছে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন, যাঁদের রাজনৈতিক পাঠ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হবে। তিনি এমন তরুণদের খুঁজছেন, যারা দেশ, জাতি, ধর্ম ও সমাজবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে চিন্তা, শ্রম, সময় ও জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত, ন্যায়ভিত্তিক ও নিরাপদ রাষ্ট্র গঠনে আগ্রহী, সুশিক্ষিত ও উন্নত মানসিকতার অধিকারী এবং একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে আত্মবিশ্বাসী।

তিনি আরও উল্লেখ করেন— এখন সময় নতুন বাংলাদেশ গঠনের। তাই তিনি এমন এক দল তৈরি করতে চান, যারা ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আপাতত মাত্র এক লাখ তরুণ তার প্রয়োজন, যাঁরা দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ।

ইএইচ