নাহিদ ইসলাম

সংবিধান সংস্কারে প্রয়োজন গণপরিষদ নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম
সংবিধান সংস্কারে প্রয়োজন গণপরিষদ নির্বাচন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন সম্ভব। বিদ্যমান সংবিধান ত্রুটিপূর্ণ, এর সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন।’

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিদেশি মিশনের কূটনীতিকদের নিয়ে এনসিপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম জানান, এনসিপি তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করছে—জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার এবং সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন। তিনি বলেন, ‘এনসিপি একটি দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের স্বপ্ন দেখে। আমাদের সংস্কার এজেন্ডা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, তবে প্রয়োজনীয়। আমাদের লক্ষ্য বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভেঙে ফেলা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি এই যাত্রা কঠিন হবে, তবে বাংলাদেশ প্রস্তুত। জনগণ কেবল পরিবর্তন নয়, একটি মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ চায়।’

আইন ও মানবাধিকারের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের এনসিপির সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছে। ১৯৪৭ সালের উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত, আমাদের জনগণ স্বাধীনতা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছে। আমরা সেই ইতিহাসের উত্তরাধিকারী।’

গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চলমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মানবিক সংকট আমাদের সম্মিলিত বিবেকের ওপর কলঙ্ক। প্রতিটি জাতি ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক শক্তির এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত।’

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে উদারতা দেখিয়েছে, তবে এককভাবে এই বোঝা বহন করতে পারে না। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানাই।’

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে মর্যাদা, ন্যায়বিচার, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেখানে কোনো দেশ আধিপত্য বিস্তার করবে না।’

গত জুলাইয়ের গণআন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছাত্র, নারী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দেশের জন্য জেগে উঠেছিল। এটি ছিল অন্যতম শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বিদ্রোহ, যা নতুন রাজনৈতিক সমাধানের দাবি তুলেছিল। জনগণের এই আন্দোলন পূর্ববর্তী শাসনামলের নিপীড়ন, বলপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি ও সাংবিধানিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিল। এই অন্যায় ও নৃশংসতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।’

ইএইচ