নির্বাচন না সংস্কার এ প্রসঙ্গে নির্বাচনের বিকল্প কেবল নির্বাচনই হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের বিকল্প অন্য কিছু হতে পারে না।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘গণতন্ত্র, সংস্কার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, এখন আমি কথা বললেই বলবে যে মির্জা আব্বাস সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলে, সংস্কার চায় না। কিন্তু না, আমাদের জন্য, নির্বাচনের জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য যে সংস্কারটুকুর প্রয়োজন আমরা সেই সংস্কারটুকুই চাই।
সোশ্যাল অ্যাক্টটিভিস্টদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি একবার বলেছিলাম যে, আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন সব সংস্কারতো মানা যাবে না। সেই কথাটিকে টুইস্ট করে আমাদের বিদেশে অবস্থানরত তথাকথিত সাংবাদিক এমনভাবে বললো যে বিএনপি সংস্কার চায় না, মির্জা আব্বাস সংস্কার চায় না। এমনকি সালমান এফ রহমানের টাকা খেয়ে যার স্বাস্থ্য-চেহারা মোটা হয়েছে তিনি প্রায়ই ফেসবুকে এসে বলেন কেন মির্জা আব্বাস মানবেন না। আমি বলতে চাই, তোমার যেমন বিদেশে পালিয়ে থেকে কথা বলার অধিকার আছে, আমার কী দেশে থেকে কথা বলার অধিকার নাই?
তিনি আরও বলেন, আমি এই দেশে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে জেলে থেকেছি সহকর্মীদের নিয়ে। পালিয়ে যাইনি। আপনারা তো পালিয়ে গিয়ে লম্বা লম্বা কথা বলতেছেন। আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে সন্মান রেখেই বলতে চাই, যারা দেশের বাইরে আছেন, ইউটিউবার যারা আছেন, ভাই আমরা রাজনীতি ছেড়ে দিবো আপনারা দেশে আসেন। আপনাদের অনেক জ্ঞান, অনেক বুদ্ধি। আপনাদের জ্ঞান বুদ্ধি আমাদের অনেক প্রয়োজন। আপনারা দয়া করে দেশে আসেন। বুদ্ধি দেন, কথা বলেন, কাজ করেন, মেনে নেবো।
মির্জা আব্বাস বলেন, এনসিপির একজন বলে ফেললেন এখন নির্বাচন করা সম্ভব না। কারণ প্রসাশনের সব জায়গায় বিএনপির লোক বসা আছে। আরে ভাই, ১৭ বছর আওয়ামী লীগ দেশ শাসন করলো, আপনি বিএনপির লোক কই পাইলেন, আমি বুঝলাম না। এই সব কথা নেহাতই বাচ্চাদের কথার মতো বলতেছেন।
তিনি বলেন, ইদানিং একটা গ্রুপ ফেসবুকে বলার চেষ্টা করছে যে বিএনপি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে। আরে ভাই ১৭ বছর এদের (আওয়ামী লীগ) যন্ত্রনায় পাগল হয়ে গেছি। পরিবার-পরিজনসহ অশান্তিতে ভুগেছি। বিএনপির অনেকের পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কারণে। বরং আমি বলতে চাই আওয়ামী লীগকে যারা দেশে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এই দেশে আওয়ামী লীগের অবস্থান থাকতে পারে না। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সব নেতা কর্মীসহ প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ, তাদের সবার বিচার হতে হবে।
কৃতিত্বের দাবিদার একা হওয়ার চেষ্টা করবেন না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টে আমিও রাজপথে ছিলাম। টিয়ার সেলের মুখে। আমাদের ৪৬২ জন ছেলে মারা গেলো, ৩০ হাজারের মতো আহত হলো...আমাদের কোন অবদান নাই? যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা না বের হতো, যদি ইসলামী ছাত্র শিবির কিংবা বিএনপি না বের হতো, ছাত্রদল বের না হতো তাহলে কি অবস্থা দাঁড়াতো? সুতরাং কৃতিত্বের দাবিদার একা হওয়ার চেষ্টা করবেন না। ক্ষতি হবে দলের এবং দেশের।
গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
আরএস