ব্রিটিশ সাপ্তাহিক ‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিন তাদের চলতি সংখ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি প্রকাশ করেছে। “Destiny’s Child” বা ‘নিয়তির সন্তান’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের বিএনপি ভাঙার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তারেক রহমানের নেতৃত্বেই দলটি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে এবং তার জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে তিনি বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
‘দ্য উইক’-এর নয়াদিল্লি ব্যুরো চিফ নম্রতা বিজি আহুজা’র লেখা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারেক রহমানের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব ও নেতৃত্বগুণ তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সন্তান তারেক, বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করলেও দল পরিচালনায় সক্রিয় রয়েছেন এবং ভার্চুয়ালি নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।
তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন জানান, তারেক ইতোমধ্যে দেশের জন্য একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ও উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, “আমরা একটি জ্ঞানভিত্তিক ও উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতি গড়তে চাই, যেখানে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হবে।”
জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ বিন আলী বলেন, “তারেক রহমানকে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং রাজনীতি না করার মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল—যা ছিল তার রাজনৈতিক অধিকার হরণ। তবুও, তিনি বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন এবং প্রভাবশালী নেতৃত্ব দিয়েছেন।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০৯ সালে দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ২০১৬ সালে পুনরায় ওই পদে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাবরণের পর থেকে তিনি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
তারেক রহমান ১৯৮৮ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ২০০১ সালে দলের নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে, খালেদা জিয়ার শাসনামলে আনুষ্ঠানিক পদ ছাড়াই ক্ষমতা প্রয়োগের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উঠেছিল।
২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং পরে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
প্রতিবেদনের শেষাংশে বলা হয়, এখন নজর থাকবে এই দিকে—তারেক রহমান কীভাবে দেশে ফিরে নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং নিজস্ব রাজনৈতিক উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
ইএইচ