বেহেশতে হুরের বর্ণনা

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২২, ০৫:৪৮ পিএম
বেহেশতে হুরের বর্ণনা

বেহেশতে হুর দেখতে কেমন হবে?

জান্নাতের রমণীদের হুর বলা হয় যা আল্লাহতালা জান্নাতি পুরুষদের
জন্য উপহার হিসেবে রেখেছেন ।
আল্লাহ তা’আলা বলেন
এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল (হুর) থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে। (সূরা বাকারা ২৫)

জান্নাতের হুর ,যারা হবে উঠতি বয়সের যুবতী রমণী। তাদের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত থাকবে নবযৌবনের স্বর্গীয় সুধা। একবার তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে পুনরায় তাকালে তাদের সৌন্দর্য ৭০ গুণ বেড়ে যাবে। তাদের গাল হবে গোলাপ ও আপেলের মতো লালমিশ্রিত সাদা বর্ণের। গলায় পরানো থাকবে মণি-মুক্তার অলংকার। তাদের চেহারা সূর্যের মতো উজ্জ্বল চকচকে হবে। তারা যখন হাসবে, তখন তাদের মুখমণ্ডল থেকে বিজলির মতো আলোর চমক বের হতে থাকবে। জান্নাতবাসী তাদের চেহারায় নিজের চেহারা দেখতে পাবে। যেমন আয়নায় নিজের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মাংস ও পোশাকের ভেতরে আচ্ছাদিত হাড়ের মগজসমূহ বাইরে থেকে দেখা যাবে। জান্নাতি পুরুষরা জান্নাতি হুরেদের নিয়ে খুব সুখ শান্তিতে বসবাস করবে । তাদের যৌবন কোনদিন শেষ হবে না ।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ জান্নাতীদের শরীরে কোন লোম থাকবে না, দাড়ি–গোঁফ থাকবে না এবং চোখে সুরমা লাগানো থাকবে। কখনো তাদের যৌবন শেষ হবে না, জামাও পুরনো হবে না।

(তিরমিজি-জান্নাতের বর্ণনা)

জান্নাতের হুর হবে চিরকুমারী ও সমবয়সের প্রেম-সোহাগিনী। জান্নাতের একজন হুর যদি দুনিয়ায় একবার দৃষ্টি দিত, তাহলে আকাশ ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থান সুবাসে ভরে যেত, পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তকে তথা সমগ্র পৃথিবীটাকে সুসজ্জিত করে দিত, প্রতিটি চোখ সব জিনিস থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে তার দিকে চেয়ে থাকত,
এবং সৃষ্টিকূল আল্লাহর প্রশংসা ও বড়ত্ব বর্ণনা করত ।

জান্নাতি হুরের মাথার একটি ওড়নার মূল্য দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী সব বস্তু থেকেও বেশি হবে।
জান্নাতি পুরুষেরা যখনই তাদের দিকে তাকাবে, আনন্দে মন ভরে যাবে। যখন কথা বলবে, ছন্দময় মিষ্টি কথা দ্বারা হূদয় ভরে দেবে। জান্নাতের রুমসমূহে যখন তারা ঘুরাফেরা করবে, তখন তাদের আলোতে রুমগুলো আলোময় হয়ে যাবে। জান্নাতের অধিবাসী নারী-পুরুষগণ হবে একই বয়সের পরিপূর্ণ যুবক-যুবতী। তাদের চোখের রং হবে পরিষ্কার সাদার মাঝে কাকের কালো চোখের মতো কালো বর্ণের। তাদের শরীরের কোমলতা হবে বৃক্ষের কচি শাখা-পাতার ন্যায় নরম ও কোমল।

জান্নাতের হুর যখন তার স্বামীর চেহারার দিকে তাকাবে, তখন তার হাসিতে জান্নাত আলোময় হয়ে উঠবে। যখন তারা স্বামীর সঙ্গে কথা বলবে, তখন কতই না সুন্দর হবে সেই কথোপকথন। যখন তারা স্বামীর সঙ্গে আলিঙ্গন করবে, তখন কতই না সুন্দর হবে সেই আলিঙ্গন। যখন জান্নাতী পুরুষ তাদের সঙ্গে মেলামেশা করবে, কতই না আনন্দময় হবে সেই মেলামেশা। তাদের অন্তরে কোন্দল ও হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। তারা কখনো রোগাক্রান্ত হবে না। তারা কখনো অপবিত্র হবে না,। তাদের চিরুনি হবে সোনার চিরুনি। তাদের গায়ের গন্ধ হবে কস্তুরির মতো সুগন্ধি। জান্নাতের হুরগণ এক জায়গায় সমবেত হয়ে উচ্চ আওয়াজে এমন সুন্দর সুরে গান গাইবে, সৃষ্টজীব অনুরূপ সুর কখনো শুনতে পায়নি।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে হুরদের সমবেত হওয়ার একটি জায়গা রয়েছে। তারা সেখানে এমন সুরেলা আওয়াজে গান গাইবে, যে আওয়াজ কোন মাখলূক ইতিপূর্বে কখনো শুনেনি।
তাদের গানের কথাগুলি হবে, আমরা তো চিরঙ্গিনী, আমাদের ধ্বংস নেই। আমরা তো আনন্দ-উল্লাসের জন্যই। আমাদের দুঃখ-কষ্ট নেই । আমরা চির সন্তুষ্ট, আমরা কখনো অসন্তুষ্ট হব না। তাদের কতই না সৌভাগ্য যাদের জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যারা।
জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৫৬৪

পৃথিবীতে যে সমস্ত নারী আল্লাহকে ভয় করে চলে তারা জান্নাতের মধ্যে হুরদের চাইতে বেশি সুন্দরী হবে । পৃথিবীর স্বামীরা তাদের প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হবে ।

প্রিয় পাঠক
আমাদের পরবর্তী সুন্দর সুন্দর ভিডিও গুলো পেতে হলে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সঙ্গে থাকুন ।

হে যুবক! চিন্তা করে দেখ, দুনিয়ার ধার্মিক সুন্দরী রমণী পেতে হলে কত কষ্ট করে নিজের চরিত্রের হেফাজত করতে হয়, তাহলে জান্নাতের সেই হুর পেতে হলে কী করতে হবে?
হুর কাদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তুমি জান কি ?
জেনে রাখো, আল্লাহ তায়ালা ঐ সব বান্দাদের জন্য হুর সৃষ্টি করছেন, যারা তাদের কামনা-বাসনা একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য বিসর্জন দেয় ।

হে আল্লাহ আমাদের সকলকে সৎ পথে চলার তৌফিক দান করো এবং জান্নাত নসীব করুন । আমিন
লেখক; আব্দুল আজিজ কাদেরি