বছর ঘুরে রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে বার বার আসে পবিত্র মাহে রমজান মাস। রমজান মাস হলো আল্লাহ তাআলার অধিক থেকে অধিকতর নৈকট্য লাভের সেরা সময়। তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল?
এই মাসের ফজিলত অনেক, আর এর ফজিলত পবিত্র আল কোরাআন, হাদিস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের এই আর্টিকেল পাঠকদের জন্য এই ফজিলতের কিছু বাণী ও তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল আপনারা জানতে পারবেন।
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল?
তারাবির নামাজ হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রমজান জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ। গুনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম হলো রমজান।
হাদিসে বর্ণনা করা আছে, রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়। রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য শুপারিশকারী হবে।
আর এই রমজান মাসে এশার নামাজের ৪ রাকাত সুন্নাত ও চার রাকাত ফরজ এবং ২ রাকাত সুন্নাত আদায় করার পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা তারাবির সুন্নত ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। তবে কেউ কেউ ১০ রাকাত নামাজ ও আদায় করে থাকেন।
দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘবের জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয় বলে এ নামাজকে ‘সালাতুত তারাবিহ’ বা তারাবি নামাজ বলা হয়।
রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবি নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রাসুল (সা.) নিজে তারাবি নামাজ পড়েছেন। এবং অন্যদেরকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা অধিক সওয়াবের কাজ। রাসুল (সা.) তারাবির নামাজের জন্য রাতের কোনো বিশেষ সময়কে নির্দিষ্ট করে দেন নি। তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তবে তারাবি নামাজ অবশ্যই এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে।
রোজার পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন। রোজার মাধ্যমে মানুষের আচার-আচরণ ও চরিত্র সুন্দর হয়। রোজা মানুষকে আখেরাত মুখী করে তুলে।
রোজা আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নিতান্ত গোপন ইবাদত।আর এই রমজান মাসে পড়তে হয় তারাবির নামাজ তাই রোজার মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্ক দৃঢ়তর হয়।
আমাদের সকলের প্রিয় নবী করিম (সা.) বেশির ভাগ সময় রাতের শেষাংশে তারাবি আদায় করতেন। তিনি কখনো ৮ রাকাত, কখনো ১৬ রাকাত, আবার কখনো ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু বিশেষ কারণ বশত নিয়মিত ২০ রাকাত পড়তেন না।
প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, রোজা ছাড়া আদম সন্তানের প্রত্যেকটি কাজই তার নিজের জন্য। তবে রোজা আমার জন্য। আমি নিজেই এর পুরস্কার দেব। রোজা জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার জন্য ঢাল স্বরুপ।
প্রিয় রাসুল (সা.) কোনো কাজ নিয়মিত করলে তা তার উম্মতের জন্য ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে যায়। এ কারণে তিনি তাঁর আমলে প্রতিনিয়ত ২০ রাকাত পূর্ণ তারাবির জামাত হতে দেন নি। যার কারনে সালাতুত তারাবিহ সুন্নত, ওয়াজিব নয়। তবে তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা জরুরি সুন্নত।
রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা রমজানের রোজাগুলোকে ফরজ করেছেন এবং রাতে তারাবি নামাজের জন্য দণ্ডায়মান হওয়াকে অশেষ পুণ্যের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাই আমাদের সকলের উচিৎ তারাবির নামাজ আদায় করা ও রমজান মাসে রোজা পালন করা।
এইচআর