প্রশ্ন
ঈদের রাতে ও দিনে (আমার প্রশ্ন দুই ঈদ সম্পর্কে) সহবাস করার বিধান কি? আমি কিছু বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে শুনেছি যে, এটা জায়েয নেই।
উত্তর: আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে যা শুনেছেন, তা সঠিক নয়। বরং ঈদের রাতে ও দিনে স্ত্রী-সহবাস করা বৈধ। শুধুমাত্র রমজান মাসে দিনের বেলায় স্ত্রী-সহবাস করা হারাম। এছাড়া হজ কিংবা উমরার ইহরাম অবস্থায় হারাম। এবং নারীরা হায়েজ বা নিফাস অবস্থায় থাকলে হারাম।
হায়েজ কখন হয় এবং কতদিন
হায়েজ হওয়ার বয়স কমপক্ষে নয় বছর। নয় বছরের আগে যদি কোনো বালিকার রক্তস্রাব হয় তাহলে তা হায়েজ বলে গণ্য হবে না। সাধারণত পঞ্চান্ন বছর পর্যন্ত নারীদের হায়েজ হয়ে থাকে। পঞ্চান্ন বছরের পর রক্তস্রাব হলে একে হায়েজ বলে গণ্য করা হবে না। তবে এ বয়সে রক্তের রঙ যদি গাঢ় লাল হয় অথবা কালচে কাল হয় তাহলে তা হায়েজ বলে গণ্য হবে।
হায়েজের মেয়াদ বা সময়কাল কমপক্ষে তিন দিন তিন রাত এবং ঊর্ধ্বে দশ দিন দশ রাত। তিন দিন তিন রাতের কম রক্তস্রাব হলে তা হায়েজ বলে গণ্য হবে না। তেমনি দশ দিন দশ রাতের বেশি রক্তস্রাব হলে তা হায়েজ বলে গণ্য হবে না। একে বলা হবে ‘ইস্তিহাজা’ বলা হয়।
যদি কোনো নারীর অভ্যাস অনির্দিষ্ট থাকে- কখনো চার দিন, কখনো সাত দিন, কখনো দশ দিন রক্তস্রাব হয় তাহলে এসব হায়েজ বলে গণ্য হবে। তার যদি দশ দিনের বেশি রক্ত আসে, তাহলে দেখতে হবে গত মাসে কত দিন এসেছিল, ততদিন হায়েজ ধরা হবে আর বাকীদিনগুলো ইস্তিহাজা হিসেবে বিবেচিত হবে।
নিফাস কী ও সময়কাল
সন্তান প্রসবের পর স্ত্রীলোকের জরায়ু থেকে যে রক্ত বের হয় তাকে ইসলামী শরীআতের পরিভাষায় ‘নেফাস’ বলা হয়।
নিফাসের সময়কাল ঊর্ধ্বে চল্লিশ দিন। আর কমের নির্দিষ্ট সীমা নেই। সন্তান প্রসবের পর যদি কোনো স্ত্রীলোকের রক্তস্রাব না হয় তবুও তার গোসল কারা ওয়াজিব।
গর্ভপাত হওয়া অবস্থায় সন্তানের অঙ্গ গঠন হয়ে থাকলে, যে রক্তস্রাব আসে তা নিফাসের রক্ত বলে গণ্য হবে। চল্লিশ দিনের বেশি রক্তস্রাব হলে প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে চল্লিশ দিন নিফাসের সময় গণ্য হবে এবং বাকীদিনগুলো ইস্তিহাজা হিসেবে বিবেচিত হবে। আর যদি প্রথম সন্তান না হয় এবং নির্দিষ্ট অভ্যাস থাকে তাহলে তার অভ্যাসের দিনগুলো নিফাসের দিন হিসেবে ধরা হবে। বাকী দিনগুলো ইস্তিহাজার।
ইএইচ