মহিমান্বিত শবে বরাতের ফজিলত ও আমল

মাওলানা মুহাম্মদ বোরহান উদ্দীন প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ১১:২৯ এএম
মহিমান্বিত শবে বরাতের ফজিলত ও আমল

আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি, যিনি পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু। অসংখ্য দরুদ ও সালাম দু’জাহানের বাদশা প্রিয়নবী হুজুর হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা আহমদ মোজতবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর। যার নূরাণী কদমের উসিলায় মেরাজ, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, শবে ক্বদর ও শবে বরাতের মতো মহিমান্বিত রাত পেয়েছি।

মাহে শাবান আরবি হিজরি সনে অষ্টম (৮ম) মাস। আর এই মাসেই রয়েছে বছরের শ্রেষ্টতম পঞ্চম রজনি অন্যতম লাইলাতুল বারাআত বা শবে বরাত।

পবিত্র হাদিসে পাকে যার পরিচয় ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’ অর্থাৎ শাবান মাসের চৌদ্দতম দিবাগত রজনি বারাত।

শাবান শব্দের বিশ্লেষণ

আর শাবান আরবি শব্দের অক্ষর পাঁচটি: ইসলামি মনীষা ও দার্শনিকগণ এই ৫টি অক্ষর  তথা ১. শীন ২. আইন ৩. বা ৪. আলিফ ও ৫. নুন এর আক্ষরিক অর্থ ও তাৎপর্য তুলে ধরেছেন এভাবে (১) শীন: দ্বারা শরীফ বা মর্যাদা অর্থ নিয়েছেন। অর্থাৎ এ মাস অতীব মর্যাদাপূর্ণ। (২) আইন: দ্বারা উলুবু তথা সুউচ্চ উন্নতির বাহন অর্থাৎ আল্লাহ ইবাদতের মাধ্যমে পরকালীন ও আধ্যাত্মিক উন্নতির উচ্চ শিখর অর্জন করতে সক্ষম হয়/ হবে। (৩) বা দ্বারা: বিররু অর্থ পূর্ণতা ও নেক আমল অর্থাৎ এ মাসে পরিপূর্ণ নেক আমল বা পুণ্যময় কাজ করা করার সুযোগ রয়েছে। (৪) আলিফ : দ্বারা ‘উলফত’ অর্থ ভালবাসা অর্থাৎ আল্লাহ ও বান্দার ২ জনের মধ্যে ভালবাসা সৃষ্টি ও বৃদ্ধির প্রবণতা থাকে/হয়। (৫) নুন: দ্বারা নুর বা আলো, অর্থাৎ এমাসে আল্লাহর দয়া, রহমত ও কল্যাণে এবং মহানবীর (দ.) ওপর দরুদ-সালাম পাঠের মাধ্যমে বান্দার  অন্তরে সৃষ্ট নূর বা আলো ধারণে সক্ষম হয়। (গুনিয়াতুত তালেবীন- ৩৬৫ পৃ.)

শবে বরাতের নামসমূহ

এই রাতের আরও ১২টি নাম পরিলক্ষিত হলেও মুসলমানদের নিকট এই রাত দু’নামে বেশি পরিচিত (১) লাইলাতুল বারাআত (২) শবে বরাত, লাইলাতুল বরাত আরবি এবং শব ফার্সী শব্দ, সুতরাং শব্দদ্বয়ের অর্থ রাত বা রজনি। আর ‘বারাআত’ শব্দের প্রকৃত অর্থ পৃথক হওয়া, দূর হওয়া ইত্যাদি। অর্থ হয় পৃথক হওয়ার রাত বা দূর হওয়ার রজনি। একে আবার মানব জাতির ভাগ্য নির্ধারণী বা বাজেট বরাদ্দের রাতও বলা হয়। যেহেতু এই মহান রাতে মানুষের জীবনের সামনের এক বছরের বয়স, রিজিক এবং কে জম্মগ্রহণ করবে আর কে মৃত্যু বরণ করবে আল্লাহর তায়ালার নির্দেশে নির্ধারণ করা হয় বিধায় শাবান মাসের চৌদ্দ (১৪ তম দিবাগত) রজনীকে শবে বারাআত বা বণ্টনের রজনি বলা হয়। (গুনিয়াতুত তালেবীন, কৃত-বড়পীর শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু )

কুরআনে শবে বরাত

মহাগ্রন্থ আল কুরআনেও এই রাতের প্রতি নির্দেশ করে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ইন্না আনজালনাহু ফি লাইলাতিম মুবারাকা অর্থাৎ ‘নিশ্চয় আমি (কুরআন মজিদকে) নাজিল করেছি বরকতময় রাতে : ‘লাইলাতিম মুবারকা’র তাফসীরে মুফাসসিরগণ যেমন সাহাবীয়ে রাসূল প্রখ্যাত মুফাস্সির আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), হজরত ইকরামা (রা.), হজরত আবু হুরাইরা (রা.) সহ অনেকেই বলেছেন, ‘লাইলাতিম মুবারাকা’ দ্বারা চৌদ্দই শাবান দিবাগত রাত বা শবে বারাকাকে বুঝানো হয়েছে। তাফসীরে দুররে মনসুরে উল্লেখ রয়েছে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) কুরআনের শপথ করে বলেছেন ‘লাইলাতুম মুরাবাকা হলো মাহে শাবানের চৌদ্দতম দিবাগত রাত্রি। (খন্ড-৭, পৃ:৪০১)

তাফসীরে কাশফুল আসরারে আল্লামা হজরত খাজা আনসারী (রা.) বলেছেন ‘এই রজনীতে খায়ের-বরকত, রহমত-কাল্যাণে পরিপূর্ণ থাকে,  বান্দা যা প্রার্থনা করে তা দেয়া হয়, বান্দার প্রার্থনা-দোয়া কবুল করা হয়, সারা রাত সকল আসমানের রহমতের দরজা সমূহ এবং জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয় বলে লাইলাতুম মুবারাকা বলা হয়” (৭ম খণ্ড)। আর হাদিসে পাকে রাসুলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “নিসফে শাবান” শব্দদ্বয় উল্লেখ করে বস্তুত শবে বরাতকে সম্বোধন/ইঙ্গিত করেছেন। অর্থাৎ:- প্রখ্যাত সাহাবী হজরত আনস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “শাবান মাসের পরবর্তী মাস রমযানের অসংখ্য কল্যাণ ও বরকত হাসিল তথা অর্জনের (আল্লাহর কুদরতের) দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয় এজন্য শাবানকে শাবান করে নামকরণ করা হয়েছে। আর রমজানকে রমজান করে নাম রাখার কারণ হল এই মাসে মানুষের গুনাহ সমূহ জ্বালিয়ে ধ্বংস করা হয়।

হাদিসে শবে বরাত

প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (রা.) তার লিখিত “মা সাবাতা বিস-সুন্নাহ” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন- “লাইলাতুম মুবারাকা বা বরকতময় রজনি দ্বারা শবে বরাত নেয়াই উত্তম। তার পরও কেউ যদি তর্ক করে বলেন- তা দ্বারা শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে, তবুও অসুবিধা নেই। কারণ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই এই মহান রজনীর ফজিলত তথা গুরুত্ব বর্ণনা করায় এই রজনীর মর্যাদাকে শঠতার চোখে খাটো করে দেখা প্রকৃত মুমিন-ইমানদার মুসলিমের উচিত নয় এবং বিদ্রুপকারীদের অস্বীকার করার জো নেই। বিশেষত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই শাবান মাসকে নিজের মাস বলে ঘোষণা করেছেন। আর এই মাস আল্লাহর মাস “রজব” এবং আল্লাহর বান্দা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের মাস “রমযান’র মধ্যবর্তী হওয়ায় আলাদা এক ফজিলত ও মর্যাদা দান করেছেন।

শবে বরাতের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে বহু হাদিসে পাক রয়েছে। ফজিলতের মধ্যে রয়েছে- বান্দার গুনাহ ক্ষমা ও প্রার্থনা কবুল হওয়া, কল্যাণ ও রহমতের দ্বার সমূহ বান্দার জন্য খুলে দেয়া ইত্যাদি। মাগফিরাত তথা ক্ষমা ও দোয়া কবুল হওয়া সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস “হজরত ওসমান ইবনে আবুল আস (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন- মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রজনীতে প্রথম আসমানে একজন ফেরেশতা আহ্বান করে ডাকতে থাকেন ‘ কেউ কি কোন ফরিয়াদ বা প্রার্থনা করার আছ? করলে তা কবুল বা গ্রহণ করা হবে।  যা চাওয়া হবে তা প্রদান করা হবে। (সুনানে বায়হাকী)

আর কল্যাণ ও রহমত সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার হাদিস। যেমন ইরশাদ হচ্ছে- উম্মুল মোমিনীন হজরত মা আয়েশা (রা.) বলেন- হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি তিনি ইরশাদ করেন- সারা বছরের মাত্র চার রাতে আল্লাহ পাক কল্যাণের দরজা সমূহ খুলে দেন। তা হলো ‘কুরবানি ঈদের রাত, আরাফার রাত (৮ই জিলহজ্ব দিবাগত রাত), ঈদুল ফিতরের রাত এবং শাবান মাসে চৌদ্দতম রজনি, যে রজনীতে মৃতের তালিকা, বান্দার রিজিক নির্ধারিত করা এবং কারা হজ্জ,বিয়ে করবে তাদের তালিকা ও তৈরি করা হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ- ১০০ পৃ.) নাজহাতুল মাজালিস নামক কিতাবে উল্লেখ রয়েছে- এ রাতে আল্লাহ জিব্রাইল (আ.) কে বেহেশতে প্রেরণ করেন এবং তিনি বেহেশতে সুসজ্জিত হতে নির্দেশ দেন। আর আল্লাহ এই রাতে আকাশের তারকা এবং জমিনের দিবারাতের  সংখ্যানুযায়ী অগণিত বান্দাকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দেন।

হাদিসে পাকে আরো উল্লেখ রয়েছে, এই রাতে মহান রাব্বুল আলামিন অসংখ্য রহমতের দরজা সমূহ খুলে দেন। যেমন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন- মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- এই রাতে জিব্রাঈল আমার কাছে আসেন এবং বলেন হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আকাশের দিকে আপনার মাথা মুবারক উঠান, আমি বলি এ রাতে কি হচ্ছে? জিব্রাঈল (আ.) বলেন- এ রাতে আল্লাহ তার রহমতের তিনশ (৩০০) দরজা খুলে দেন এবং অসংখ্য গুনাগারকে ক্ষমা করেন।

এ রাতে যাদের জন্য সুসংবাদ

হাদিসে পাকে এসেছে- ‘জিব্রাঈল (আ.) রাতের এক চতুর্থাংশে এসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেন- হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার মাথা মুবারক উঠান আমি উঠিয়ে দেখি বেহেশতের আট দরজাই খুলে দেয়া হয়েছে। প্রথম দরজা থেকে অষ্টম দরজা পর্যন্ত আট জন ফেরেশতা ৮টি সুসংবাদ প্রদান করেন। যথাক্রমে ১. যে রুকু করবে, ২. যে সিজদা করবে, ৩. যে দোয়া করবে, ৪. যারা আল্লাহর জিকির করবে, ৫. যারা চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কাঁদবে, ৬. যারা আল্লাহর সামনে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করবে তাদের জন্য সুসংবাদ, ৭. কোন প্রার্থী আছ কি? যা চাইবে দেয়া হবে, ৮. গুনাহ ক্ষমা প্রার্থী আছ কি? তাকে ক্ষমা করা হবে। আর রহমত ও জান্নাতের দরজা সমূহ ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত খোলা থাকবে। ফলে বনু ক্বলব গোত্রের অসংখ্য বকরীর লোম-সম-সংখ্যক জাহান্নামি বান্দাকে আল্লাহ মুক্তি দেবেন।

এ রাতে যারা গুনাহ হতে ক্ষমা পাবে না

এত রহমতের ফলেও যারা গুনাহ হতে ক্ষমা পাবে না সে হতভাগ্যরা হলো শিরককারী, জাদুকর, গণক, ব্যভিচারক, সুদখোর, মদপানকারী, মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারীর এবং মুসলিম ভাইয়ের সাথে ঝগড়া-বিবাধকারী। হজরত আবু সিদ্দিক (রা.) বলেন- আল্লাহ এই রাতে মুশরিক এবং হিংসুক ছাড়া অন্য গুনাগারদের ক্ষমা করেন (বায়হাকী শরীফ)।

বরাত রাতের আমল সমূহ

এই রাতে ও পরদিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় আমল রয়েছে। তার মধ্যে নফল রোজা, নফল ইবাদত-যেমন কোরাআন তেলাওয়াত, কবর জিয়ারত, জিকির আজকার, দান-খায়রাত করা ইত্যাদি। নফল সালাত আদায় শবে বরাতের অন্যতম আমল তৎমধ্যে সালাতুস তাসবির নামাজ।

নফল নামাজ

শবে বরাতের নামাজ নির্ধারিত না থাকায় যত অধিক নফল সালাত আদায় করা যায় তত বেশি সওয়াব হবে। তবে কম পক্ষে বার রাকাআত নামাজ আদায় সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এ রাতে বার রাকাআত নফল নামাজ আদায় করবে এর প্রতি রাকাতে ১ বার সূরা ফাতিহার সাথে ১০ বার সূরা ইখলাছ পড়বে এর বদৌলতে আল্লাহ তার জীবনের গুনাহ ক্ষমা করে বরকত দান করবেন (নুজহাতুল মাজালিস)।

নফল রোজা

নফল রোজা ও আদায়/রাখা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে অধিক রোজা রাখতেন। তিনি বলেন- রাতে নামাজ ও ইবাদত বান্দেগীতে কাটাবে, দিনে রোজা রাখবে। রোজা কমপক্ষে দুটি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ১৪ ও ১৫ তারিখে, যেহেতু আহলে কিতাবগণ একটি রোজা রাখার নিয়ম চালু করছিল। শাবানের ১৫ তারিখ যে ব্যক্তি রোজা রাখবে তার জীবনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং তাকে জাহান্নামের আগুনও স্পর্শ করবে না। 
কুরআন তিলাওয়াত

এ রাতে কোরআন তিলাওয়াত অন্যতম প্রধান আমল যেহেতু কুরআন নাজিল হওয়ায় এই রাতের এতোই মর্যাদা, তাই যত বেশি সম্ভব কোরআন তেলাওয়াত করা অত্যন্ত সওয়াবজনক।

কবর জিয়ারত

আর শরিয়ত সম্মত পন্থায় মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, পীর-আউলিয়া ও বুজর্গদের কবর জিয়ারত করা অতি সওয়াবের যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতের গভীরে নিদ্রাত্যাগ করে জান্নাতুল বাকিতে অবস্থিত সাহাবায়ে কেরামের কবর জিয়ারতে ছুটে গিয়েছিলেন যার বর্ণনা হাদিসে পাকে পাওয়া যায়।

যে দোয়াটি বেশি পাঠ করবেন

শবে বারাআত ও শবে ক্বদরের রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা আয়শা সিদ্দিকা (রা.) কে যে দোয়াটি বেশি পড়তে বলেছেন- “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন কারীমুন রাহীমুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা-য়াফো আন্নি ইয়া গাফুর ইয়া গাফুর”। সাথে যত বেশি আল্লাহ তা’আলার জিকির ও নবীর প্রতি দরুদ-সালাম, দান-খায়রাতও অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আমাদের সমাজে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আশুরা, শবে মেরাজ, ঈদুল আজহা, ঈদুল ফিতর, রমজান,শবে কদর ইসলামি সংস্কৃতিতে মুসলমানদের অন্তরে দ্বিনি মান-মানসিকতা সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে ।

তবে আজকাল কিছু নামধারী মুসলমান-ফেরেশতার মত কথা বলে, শয়তানের মত ধোঁকা দেয়। এসব বরকতময় রাতে-দিনে বিশেষ ইবাদত করাকে কোরআন-হাদিসের নাই বলে বিভিন্ন মিডিয়া ও অনলাইনে অপপ্রচার করে। যারা পবিত্র দিন-রাতসমূহ পালন না করার অপপ্রয়াস ও অপচেষ্টা চালায়-তাদেরকে চিনে রাখবেন। কারণ তারা সরল প্রাণ মুসলমানকে ধোঁকা দিয়ে বরকতময় ইবাদত-বন্দেগি করা থেকে মুসলমানদেরকে বিরত রাখার অপচেষ্টা চালায়। মূলত তারা বেশভুশে মানুষরূপী শয়তান! তবে এই রাতকে কেন্দ্র করে শরিয়ত বিরোধী কোন কাজ হলে তা বন্ধ করে কোরআন-হাদিসের আলোকে তা পালন করা প্রয়োজন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই মহিমান্বিত রজনীর গুরুত্ব-মর্যাদা অনুধাবন করার তাওফিক এবং তা পালনের মধ্য দিয়ে এই রাতের বরকত- ফজিলত ও শরাফত আমাদেরকে দান করুক। আমিন

লেখক: প্রাবন্ধিক -মুদাররিস- জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মহিলা কামিল মাদরাসা, ষোলশহর, চট্টগ্রাম।

ইএইচ