রিপন আনসারির উদ্ভাবিত ভূমিকম্প প্রতিরোধী মোড়ানো বাঁধ পেটেন্ট পেল

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৪, ০৬:৪৬ পিএম
রিপন আনসারির উদ্ভাবিত ভূমিকম্প প্রতিরোধী মোড়ানো বাঁধ পেটেন্ট পেল

বর্তমান বিশ্বে বড় আতঙ্কের নাম ভূমিকম্প। বাংলাদেশ এ আতঙ্কের বাইরে নয়। ভূতাত্ত্বিক ও ভূমির গঠন অনুসারে বাংলাদেশ ভূকম্পনপ্রবণ অঞ্চল। বিগত ২০০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে ৮টি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় ভূমিকম্প হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত বড় কোনো ভূমিকম্পের আগে বা পরে এমন দফায় দফায় মৃদু কম্পন হতে পারে।

বাংলাদেশে যদি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিভিন্ন স্থাপনা ও সড়ক-মহাসড়কগুলো। যদিও আধুনিক যুগে সুউচ্চ ভবন কিংবা স্থাপত্য নির্মাণে ভূমিকম্প সহনশীল প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু দেশের সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের বিষয়টি এখনো অবহেলিত।

এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশে ভূমিকম্প সহনশীল সড়ক বা মহাসড়ক নির্মাণে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিলেন ড. রিপন হোড় এবং অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারি সমন্বয়ে গঠিত গবেষক দল।

২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় বছরের গবেষণায় উদ্ভাবিত ‘র‌্যাপ ফেস ইমব্যাংকমেন্ট (wrape face embankment)’ নামের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে বাঁধ, সড়ক-মহাসড়ক কিংবা রেললাইন বড় মাত্রার ভূমিকম্পেও অক্ষত থাকবে। পাশাপাশি চলমান পদ্ধতিতে নির্মাণের তুলনায় আর্থিক ব্যয় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে আসবে।

সবচেয়ে আশার কথা হলো, এ প্রযুক্তি অনেক কৃষিজমি বাঁচিয়ে দেবে। মূলত, আমাদের দেশে নতুন সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণে দুই পাশের ব্যাপক কৃষিজমি নষ্ট হয়। ‘র‌্যাপ ফেস ইমব্যাংকমেন্ট’ প্রযুক্তি ব্যবহারে উঁচু বাঁধ বা রাস্তা নির্মাণে দুই পাশের জমির ব্যবহার অনেক কমে যাবে।

তাদের উদ্ভাবিত ভূমিকম্প রোধে মোড়ানো বাঁধের প্রস্তুত কৌশল বাংলাদেশের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর হতে পেটেন্ট অনুমোদন দিয়েছে। গত ৫ মার্চ পরিচালক (পেটেন্ট) কর্তৃক স্বাক্ষরিত সনদে এ উদ্ভাবন কৌশলকে অনুমোদন দেওয়া হয়।

ইতোমধ্যে জাপান ও আমেরিকার শক্ত মাটিতে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহারে সফলতা মিলেছে। তবে বাংলাদেশের মতো নরম মাটির দেশে এ প্রযুক্তি কার্যকর কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে রিপন-আনসারি উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নরম মাটিতেও বেশ কার্যকর। ইতোমধ্যে ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় তা প্রমাণিত হয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, তাদের গবেষণার ফলাফলকে পাঁচটি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নালও স্বীকৃতি দিয়েছে। সেখানে তাদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

জার্নালগুলো হলো- জিওটেকনিক্যাল অ্যান্ড জিওলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব জিওসিন্থেটিকস অ্যান্ড গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ট্রান্সপোর্টেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার জিওটেকনোলজি।

ইএইচ