যেকোন খেলার প্রাণ দর্শক। ক্ষয়িষ্ণু জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট যেন ওই প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার লড়াইয়ে স্টেডিয়াম দর্শকে ভরা ছিল।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচেও প্রাণের জোয়ার ছিল গ্যালারিতে। ভক্তদের নিরাশ করেনি তারা। অন্যদিকে তারুণ্যের পরীক্ষায় ফেল করেছে বাংলাদেশ। নুরুল হাসানের নেতৃত্বের শুরু হয়েছে ১৭ রানের হারে।
সিনিয়রদের কেউ নেই। নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বে এক ঝাঁক তরুণ নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নতুন যুগে পা রেখেছে বাংলাদেশ। নতুন দিনের শুরুটা হলো হার দিয়ে।
হারারেতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের কাছে ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে গেছে ১-০তে।
লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্তর পর ‘নতুন’ দলের তরুণ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ব্যাটিংয়ে সবাই একটু একটু করে অবদান রাখলেন। তবে তা জিম্বাবুয়ের বিশাল রান তাড়ায় যথেষ্ট ছিল না।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া রেকর্ড ২০৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১০ রান আগেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
শনিবার শুরুতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশ দলের ছন্নছাড়া বোলিং ও দুর্বল ফিল্ডিংয়ের সুবাদে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় জিম্বাবুয়ে।
২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ফিরে যান মুনিম শাহরিয়ার।
তারপর দারুণভাবে ব্যাট করা লিটন দাস অদ্ভূতভাবে আউট হন। শন উইলিয়ামসের বলে স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। রিচার্ড এনগারাভা ক্যাচ নিলেও তা হাতে রাখতে পারেননি।
কিন্তু লিটন সেটি খেয়ালই করেননি। নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা এনামুল হক বিজয়ের ডাকে সাড়া না দিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা ধরেন। তখন আম্পায়াররা থামান তাকে।
তবে এরই মধ্যে উইলিয়ামস নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে দেন। উইলিয়ামস যখন নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভেঙেছেন, লিটন তখন ক্রিজের বাইরে। ফলে রান আউট হলে যান লিটন।
এর দুই ওভার পরই ২৬ রান করে আউট হয়ে যান এনামুল হক বিজয়ও। সিকান্দর রাজার বলে ক্যাচ তুলে দেন বিজয়।
কিছুক্ষণ পর আফিফ হোসেনও ১০ করে আউট হয়ে গেলে বড় চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
স্বল্প বিরতির পর শান্ত ও আফিফও ফিরে যান। এরপর মোসাদ্দেকও ফিরে যান ১৩ রানে।
সবশেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ থামে ৬ উইকেটে ১৮৮ রানে।
এর আগে ওয়েসলি মাধেভেরে ও সিকান্দর রাজার জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ১ম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ২০৬ রানের বড় টার্গেট দেয় জিম্বাবুয়ে।
প্রথম ১০ ওভারে এসেছিল মাত্র ৭টি বাউন্ডারি, সব কটিই ছিল চার। সেই জিম্বাবুয়ে ইনিংস শেষ করল ২৩টি চার ও ৫টি ছয় নিয়ে।
বাংলাদেশের দুর্বল বোলিং ও ফিল্ডিং এবং ওয়েসলি মাধেভেরের হাফ সেঞ্চুরি, সিকান্দার রাজার ২৬ বলে ৬৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে জিম্বাবুয়ে তুলেছে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটিই সর্বোচ্চ স্কোর তাদের, সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৮৮/৬ (মুনিম শাহরিয়ার ৪, লিটন দাস ৩২, এনামুল হক বিজয় ২৬, নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৭, আফিফ হোসেন ১০, নুরুল হাসান ৪২*, মোসাদ্দেক ১৩, নাসুম ০*)। রিচার্ড এনগারাভা ২-০-৪৩-১, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩-০-২৩-১, সিকান্দর রাজা ৩-০-৩০-১, লুক জংউই ৪-০-৩৪-২)।
জিম্বাবুয়ে: ২০৫/৩ (মাধেভেরে ৬৭* রিটায়ার্ড হার্ট, সিকান্দর রাজা ৬৫*, শন উইলিয়ামস ৩৩, আরভিন ২১, চাকাভা ৮)। তাকসিন ৪-০-৪২-০, নাসুম ৪-০-৩৮-০, মোস্তাফিজ ৪-০-৫০-২, মোসাদ্দেক ২-০-২১-১, শরিফুল ৪-০-৪৫-০, আফিফ ১-০-৬-০।
আমারসংবাদ/টিএইচ