অনেক অনিশ্চয়তা ও জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে চার বছর পর শনিবার (২৭ আগস্ট) পর্দা উঠছে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৫তম আসরের।
২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো এশিয়া কাপ। ২০১৮ সালের পর ২০২০ সালে এশিয়া কাপের ১৫তম আসর অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিলো। কিন্তু ২০১৯ সালের শেষ দিকে করোনা মহামারি শুরু হলে, ২০২০ সালের এশিয়া কাপ বাতিল হ মে বছর এশিয়া কাপের আয়োজক ছিলো পাকিস্তান।
আর সূচি অনুযায়ী ২০২১ সালে শ্রীলংকার মাটিতে হবার কথা ছিলো এশিয়া কাপ। করোনার প্রভাব অব্যাহত থাকায় ওন বছরও এশিয়া কাপও বাতিল হয়।
পরপর দুই বছর এশিয়া কাপ বাতিল হলে, এই টুর্নামেন্ট নিয়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে আলোচনায় বসে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। আলোচনা শেষে এসিসি ঘোষণা করে, ২০২২ সালে শ্রীলংকায় বসবে এশিয়া কাপ। আর ২০২৩ সালে পাকিস্তানের মাটিতে হবে এশিয়া কাপের ১৬তম আসর।
এসিসির ঘোষনা অনুযায়ী, এ মাসেই শ্রীলংকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো এশিয়া কাপ। কিন্তু এশিয় কাপের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় শ্রীলংকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। অচল অবস্থার সৃষ্টি হয় শ্রীলংকায়। সংকট তৈরি হয়। দেশটির স্বাভাবিক জীবনে মারাত্মক অবনতি হয়। তাই বাধ্য হয়ে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ আয়োজন করা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় শ্রীলংকা ক্রিকেট (এসএলসি)।
এসএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাশলে ডি সিলভা জানান, ‘শ্রীলংকার বর্তমান পরিস্থিতিতে এশিয়া কাপ আয়োজন করা সম্ভব নয়। নিরাপত্তার কারনে এশিয়া কাপের স্পন্সর-সম্প্রচারকরা শ্রীলংকায় আসতে রাজি নয়।’
পরবর্তীতে গেল মাসে আবারও আলোচনায় বসে এসিসি। সেই আলোচনায় সিদ্বান্ত হয়, এশিয়া কাপের ১৫তম আসর হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে। তবে আয়োজক স্বত্ব থাকবে শ্রীলংকারই। আয়োজক হওয়াতে অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকবে এসএলসির। অন্তত ৬৫ লাখ ডলার পাবে এসএলসি।
এসিসির নিয়মনুযায়ী, এই অর্থ ‘হোস্টিং ফি’ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এরপর গত ২ আগস্ট এশিয়া কাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষনা করে এসিসি। এতে সব জল্পনা-কল্পনা ও অনিশ্চয়তার পর কাল শুরু হবে এশিয়া কাপের ১৫তম আসর। আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এবারের আসরটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজন করছে এসিসি। যাতে বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নিতে পারে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া আসরটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হয়েছিলো। বাকী আসরগুলো হয়েছিলো ওয়ানডে ফরম্যাটে।
এবারের আসরে মূল পর্বের আগে বাছাই পর্ব অংশ নেয় চার দল হংকং, সিঙ্গাপুর, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ইতোমধ্যে বাছাই পর্ব শেষ হয়েছে। বাছাই পর্বের সেরা দল হয়ে মূল পর্বে খেলবে হংকং।
মূল পর্বে দু’টি গ্রুপ রয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে খেলবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত, পাকিস্তান ও বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা হংকং। ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান।
গ্রুপ পর্ব শেষে সেরা চার দলকে নিয়ে পরবর্তীতে হবে সুপার ফোর পর্ব। সেখানে একে অপরের বিপক্ষে খেলবে দলগুলো। সুপার ফোরের সেরা দুই দল খেলবে ফাইনালে। ১১ সেপ্টেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসরের প্রথম দিন মাঠে নামবে শ্রীলংকা-আফগানিস্তান।
এশিয়া কাপের মূল পর্বে ১৩টি ম্যাচ হবে শারজাহ ও দুবাইতে। শারজাহতে মাত্র ৩টি ম্যাচ রাখা হয়েছে। বাকী ম্যাগুলো দুবাইয়ে।
এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার শিরোপার স্বাদ পেয়েছে শ্রীলংকা। তিনবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি বাংলাদেশ। দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাকিস্তান।
এশিয়া কাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি :
২৭-০৮-২০২২ : শ্রীলংকা-আফগানিস্তান, দুবাই
২৮-০৮-২০২২ : ভারত-পাকিস্তান, দুবাই
৩০-০৮-২০২২ : বাংলাদেশ-আফগানিস্তান, শারজাহ
৩১-০৮-২০২২ : ভারত-হংকং, দুবাই
০১-০৯-২০২২ : শ্রীলংকা-বাংলাদেশ, দুবাই
০২-০৯-২০২২ : পাকিস্তান-হংকং, শারজাহ
সুপার ফোর :
০৩-০৯-২০২২ : ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘বি’ গ্রুপ রানার্স-আপ, শারজাহ
০৪-০৯-২০২২ : ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘এ’ গ্রুপ রানার্স-আপ, দুবাই
০৬-০৯-২০২২ : ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, দুবাই
০৭-০৯-২০২২ : ‘এ’ গ্রুপ রানার্স-আপ-‘বি’ গ্রুপ রানার্স-আপ, দুবাই
০৮-০৯-২০২২ : ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘বি’ গ্রুপ রানার্স-আপ, দুবাই
০৯-০৯-২০২২ : ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘এ’ গ্রুপ রানার্স-আপ, দুবাই
ফাইনাল :
১১-০৯-২০২২ : সুপার ফোরের সেরা দুই দল, দুবাই
এআই