অস্ট্রেলিয়ার মিডল-অর্ডার ব্যাটার মার্কাস স্টয়নিসের ১৮ বলে ঝড়ো ৫৯ রানের ইনিংসের সুবাদে শ্রীলংকাকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরলো স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। এক কথায় বলতে গেলে স্টয়নিস ঝড়ে উড়ে গেছে লংকানরা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ-১এ আজ সুপার টুয়েলভে বর্তমান চ্যামিম্পয়ন অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে শ্রীলংকা। জবাবে ২১ বল বাকী রেখে ৩ উইকেটে ১৫৮ রান করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।
এই জয়ে ২ খেলায় ১ জয় ও ১ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে অস্ট্রেলিয়া। ২ খেলায় ১ জয় ও ১ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে তৃতীয়স্থানে শ্রীলংকা।
পার্থে টস জিতে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারেই প্যাট কামিন্সের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আগের ম্যাচের সেরা কুশল মেন্ডিস(৫)।
দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ৬৯ রান তুলে শ্রীলংকাকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যান আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ডি সিলভাকে ২৬ রানে থামিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার অ্যাস্টন আগার।
দলের রান ১শতে পৌঁছানোর আগে বিদায় নেন নিশাঙ্কা। ৪৫ বলে ২টি চারে ৪০ রান করে রান আউট হন তিনি। নিশাঙ্কার আউটের পর শ্রীলংকার মিডল-অর্ডারে ধ্বস নামে। ১৪ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা।
শেষ ১৫ বলে ৩৭ রান তুলে শ্রীলংকাকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন চারিথা আসালঙ্কা ও চামিকা করুনারত্নে। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৫ বলে অপরাজিত ৩৮ রান করেন আসালঙ্কা। ২টি চারে ৭ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন আসালঙ্কা।
শ্রীলংকার পতন হওয়া ৬ উইকেটের ৫টি ভাগাভাগি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ বোলার।
১৫৮ রানের টার্গেটে অস্ট্রেলিয়াকে ঝড়ো শুরু এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। প্রথম ৪ ওভারে চার-ছক্কা ছাড়া ২৬ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১১ বলে ১০ রান করে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন ওয়ার্নার।
ওয়ার্নারের বিদায়ে ফিঞ্চের সাথে জুটি বেঁধে দ্রুত রান তুলতে পারেননি মিচেল মার্শ। ৭ ওভারে ৩৮ রান তুলতে পারায় আস্কিং রেট বেড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার।
অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে ১৫ রান দেন শ্রীলংকার সেরা স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। আরেক স্পিনার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার পরের ওভারে মার্শকে হারালেও ১৩ রান তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ১৭ বলে ১৮ রান করেন মার্শ।
মার্শ ফেরার পর ক্রিজে এসেই ঝড় তুলেন ম্যাক্সওয়েল। ইনিংসের ১০ম ও হাসারাঙ্গার দ্বিতীয় ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১৯ রান তুলেন ম্যাক্সি। তবে মাত্র ১২ বলে ২৩ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে থামান করুনারত্নে।
ম্যাক্সওয়েল যখন ফিরেন তখন উইকেটে আসেন মার্কাস স্টয়নিস। এমন অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার জিততে প্রয়োজন ছিলো ৪৬ বলে ৬৯ রান।
পরের ওভারগুলোতে চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন স্টয়নিস। হাসারাঙ্গার করা তৃতীয় ও ইনিংসের ১৫তম ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১৯ রান তুলেন স্টয়নিস। থিকশানার করা ১৬তম ওভারে ৩টি ছক্কায় ২০ রান তুলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন স্টয়নিস। ১৭ বলে অর্ধশতক করে টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি মালিক হন স্টয়নিস।
শেষ পর্যন্ত ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত হয়। ১৮ বল খেলে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন স্টয়নিস। ৪২ বল খেলে ১টি ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন একবার জীবন পাওয়া ফিঞ্চ। শ্রীলংকার সেরা স্পিনার হাসারাঙ্গা ৩ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন।
আগামী ২৮ অক্টোবর নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। ২৯ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলবে শ্রীলংকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড :
শ্রীলংকা : ১৫৭/৬, ২০ ওভার (নিশাঙ্কা ৪০, আসালঙ্কা ৩৮*, ম্যাক্সওয়েল ১/৫)।
অস্ট্রেলিয়া : ১৫৮/৩, ১৬.৩ ওভার (স্টয়নিস ৫৯*, ফিঞ্চ ৩১*, ধনাঞ্জয়া ১/১৮)।
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মার্কাস স্টয়নিস (অস্ট্রেলিয়া)।