সেপ্টেম্বরে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাঘিনীরা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২২, ০৮:২৬ পিএম
সেপ্টেম্বরে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাঘিনীরা

এ বছর  (১৯ সেপ্টেম্বর) রবিবার স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাঘিনীরা। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়াম শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ।

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ৬ষ্ঠ আসরে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। একে একে মুখোমুখি হওয়া সব প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে ফাইনালে উঠে আসে বাঘিনীরা।

ম্যাচের শুরতেই অবশ্য ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। খেলা শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় কাদায় পড়ে ব্যথা পান অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না। এরপর তাকে তুলে নেন কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন।

তবে এতে বাংলাদেশ মোটেও ভেঙে পড়েনি। ১৪ মিনিটে ডান প্রান্তে মনিকা চাকমার ক্রস খুঁজে পায় বদলি হিসেবে নামা শামসুন্নাহার জুনিয়রকে। পরে তার নিখুঁত ফিনিশিংয়ে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে নেপাল। ম্যাচের ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে বেশ কয়েকটি দারুণ আক্রমণও করে স্বাগতিকরা। তবে বাংলাদেশি গোলরক্ষক রুপনা চাকমার দৃঢ়তায় গোলবঞ্চিত হয় নেপাল। ৩৬ মিনিটে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন এক ডিফেন্ডার।

ম্যাচের ৪১ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের পাস থেকে বল পেয়ে যান গোলপোস্টের সামনে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণা রানী সরকার। ফাইনালে বাংলাদশে লিড দ্বিগুণ করতে তার কোনো ভুল হয়নি।

বৃষ্টির ফলে মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশা আর নেপাল দুদলকেই নিজেদের স্বাভাবিক খেলা চালিয়ে যেতে বেগ পেত হচ্ছিলো। তবে ম্যাচে ফেরার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে চাপে রাখে নেপাল। তার ফল আসে ৭০ মিনিটে। দলীয় আক্রমণে বাংলাদেশের ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে ব্যবধান কমান নেপালের আনিতা বেসন্ট।

নেপাল যখন সমতসূচক গোলের সন্ধানে ব্যস্ত, তখন তৃতীয় গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। ৭৭ মিনিটে মনিকা চাকমার ডিফেন্সচেরা পাস থেকে বল পেয়ে আগুয়ান নেপাল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন কৃষ্ণা রানী সরকার। সেই সঙ্গে স্বাগতিকদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন তিনি।

ম্যাচের বাকি সময়টায় গোলের জন্য নেপাল প্রাণান্ত চেষ্টা করলেও বাংলাদেশের রক্ষণভাগ স্বাগতিকদের আর কোনো সুযোগ দেয়নি। ফলে রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর ৩-১ গোলের জয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্ব খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে বাংলাদেশের নারীরা। পাশাপাশি জন্ম দেয় নতুন ইতিহাসও।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। তবে সেবার ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে ছয় বছর পর সেই দুঃস্বপ্নের ক্ষতে প্রলেপ দিল বাংলাদশের মেয়েরা।

এবি