আর্জেন্টিার গোলকিপাপর এমিলিয়ানো মার্টিনেজের কারণেই বদলে যেতে পারে পেনাল্টির নিয়ম। কী এমন করেছেন মার্টিনেজ যার জন্য ফিফার কাছে অভিযোগ করেছে ফ্রান্স। আর যার জন্য পেনাল্টি নিয়মে বদল আনার চিন্তাভাবনা করছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ফিফা)।
বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে টাইব্রেকার নানা রকম কায়দা করেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। সেই কারণে নিয়মে বদল করতে পারে ফিফা। কাতার বিশ্বকাপে টাইব্রেকারে নজর কেড়েছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। প্রথমে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস ও পরে ফাইনালে ফ্রান্সকে হারাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন আর্জেন্টিনার এই গোলরক্ষক।
প্রতিপক্ষ ফুটবলারের শট বাঁচানোর জন্য সব রকম কায়দা করেছেন মার্টিনেজ। তার জন্য বিতর্কও হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছেন মার্টিনেজরাই। তার নানা রকম কায়দার জন্য এ বার বদলে যেতে পারে পেনাল্টির নিয়ম। অন্তত তেমনটাই শোনা যাচ্ছে ফিফা সূত্রে।
ফুটবলের সব নিয়মকানুন ঠিক করে আন্তর্জাতিক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড। তারা ইতিমধ্যেই ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছে। পেনাল্টি নেওয়ার সময় গোলরক্ষকদের নড়াচড়ায় আরও বিধিনিষেধ আসতে পারে।
সংবাদপত্র ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, নতুন নিয়ম আরও কঠিন হবে গোলরক্ষকদের জন্য। কারণ, সেই নিয়ম চালু হয়ে গেলে অবৈধ ভাবে স্ট্রাইকারকে বিরক্ত করা যাবে না। অযথা দেরি করাতে পারবেন না গোলরক্ষক। এই সংক্রান্ত নতুন নিয়মের খসড়া করে মার্চ মাসে লন্ডনে অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভার বৈঠকে তা পেশ করা হবে।
বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকার শুরু হওয়ার পরে দেখা গিয়েছিল মার্টিনেজের অনেক রূপ। কিলিয়ান এমবাপে পেনাল্টি নিতে যাওয়ার সময় তিনি রেফারির কাছে বার বার অভিযোগ করছিলেন, বল ঠিক জায়গায় বসানো হয়েছে কি না তা দেখার। প্রথম বার রেফারি পাত্তা না দিলেও কোম্যানের পেনাল্টির আগেও মার্টিনেজ একই অভিযোগ করায় রেফারি দেখতে গিয়েছিলেন ঠিক জায়গায় বল বসানো হয়েছে কি না।
ঠিক তখনই কোম্যানের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন মার্টিনেজ। তার মুখের সামনে গিয়ে নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন। তাতে কিছুটা হলেও মনোযোগ নষ্ট হয়েছিল কোম্যানের। তার নেওয়া শট বাচিয়ে দিয়েছিলেন মার্টিনেজ। চুয়ামেনি ফ্রান্সের হয়ে তৃতীয় পেনাল্টি নেওয়ার সময় অন্য কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন মার্টিনেজ।
তিনি বল নিয়ে গোলের পিছনে থাকা আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাছে গিয়ে তাদের চিৎকার করতে বলেছিলেন। তার পরে চুয়ামেনিকে বল না দিয়ে অন্য দিকে ছুড়ে দিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে চুয়ামেনিকে বল আনতে হয়েছিল। এই সব ঘটনায় তারও মনোযোগ নষ্ট হয়েছিল। বাইরে মেরেছিলেন তিনি। চুয়ামেনি পেনাল্টি নষ্টের পরে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গিয়েছিল মার্টিনেজকে। সঙ্গে অনেক কিছু বলছিলেন তিনি।
ফ্রান্সের হয়ে শেষ পেনাল্টি নিতে এসেছিলেন কোলো মুয়ানি। তার কাছে গিয়েও অনেক কিছু বলেছিলেন মার্টিনেজ। রেফারি বাধ্য হয়ে তাকে ঠেলে গোলপোস্টে নিয়ে যান। মার্টিনেজকে হলুদ কার্ডও দেখানো হয়েছিল। তাতে অবশ্য ভ্রুক্ষেপ করেননি তিনি।
কোলো মুয়ানি গোল করলেও পরের পেনাল্টি থেকে মন্টিয়েল গোল করায় বিশ্বকাপ জিতে যায় আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকারে মার্টিনেজের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশ্বকাপের পরে ফিফার কাছে অভিযোগ করে ফ্রান্স। তার পরেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। মার্টিনেজের কারণে এ বার বদলে যেতে পারে পেনাল্টির নিয়মই।
টিএইচ