আগেই চার সেমিফাইনালিস্ট নির্ধারিত হওয়ায় ভারত-নেদারল্যান্ডস ম্যাচটি তাই গুরুত্বহীন ম্যাচে পরিণত হয়। তবে নেদারল্যান্ডসের জন্য ম্যাচটি ছিল বিশেষ কিছু। কেননা বর্তমান সময়ের সেরা দলের বিপক্ষে খেলতে পারাটাই তাদের জন্য পরম পাওয়া।
তবে এমন স্মরণীয় দিনে ভারতের রান চাপায় পিষ্ট হয়ে ১৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় বরণ করে নিতে হয় ডাচদেরকে। এই জয়ে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচ জিতেই শীর্ষ দল হিসেবে সেমিফাইনালে পা রাখলো রোহিত শর্মার ভারত।
আর নেদারল্যান্ডসের এই পরাজয়ে শেষ দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে দশ দলের মধ্যে ৮ম হয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা নবম ও নেদারল্যান্ডস দশম হয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে যায়।
৪১১ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করাটায় প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে চলে যায় ডাচদের জন্য। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার বারেসিকে ৪ রানে ফিরিয়ে উইকেটের খাতা খোলেন মোহাম্মদ সিরাজ।
বারেসির আউটের পর বেশ ভালোভাবেই ভারতীয় বোলারদের মোকাবেলা করতে থাকে ডাচ দুই ব্যাটার ম্যাক্স ডি’অড ও কলিন অ্যাকারম্যান। প্রথম দশ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৬২ রান তোলে নেদারল্যান্ডস।
এই দুই ব্যাটারের জুটি ভাঙেন কুলদীপ যাদব। ১৩তম ওভারে ব্যক্তিগত ৩৫ রানে অ্যাকারম্যানকে আউট করেন যাদব। ওপর ওপেনার ম্যাক্স ডি’ওডও বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। তিনিও ব্যক্তিগত ৩২ রান করে আরেক স্পিনার জাদেজার শিকার হন।
৭২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে আবার বিপদে পড়ে নেদারল্যান্ডস। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এঙ্গেলব্রেখট ও স্কট এডওয়ার্ডস ৩৯ রান করে বিপর্যয় সামাল দেন। এদের জুটি ভাঙেন অপ্রত্যাশিতভাবে বোলিং করতে আসা কোহলি। ৩৫৭২ দিন পর কোহলি উইকেট পান স্কট এডওয়ার্ডসের।
এরপর উইকেটে আসা ডি লিড ১২ রান করে বুমরাহর বলে বোল্ড হন। অন্য প্রান্তে থাকা এঙ্গেলব্রেখটকে অর্ধশতক থেকে পাঁচ রান দূরে থাকতে সিরাজ তার শিকারে পরিণত করেন।
শেষদিকে একাই লড়াই করে যান ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিদামানুরু। ৩৯ বলে ৫৪ রান করে ডাচদের হারের ব্যবধান কমান তিনি।
বুমরাহ, সিরাজ, যাদব ও জাদেজা দুটি করে উইকেট পান। বিরাট কোহলি নেন একটি উইকেট।
আজ ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটারই তুলেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব সংগ্রহ। ওয়ানডে ক্রিকেটে এমন ঘটনা ঘটেছে এর আগে মাত্র দুইবার। দুইবারই এই রেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় দল এবার বিরল এই রেকর্ডে নাম লেখালো ভারত। সবমিলিয়ে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪১০ রানের পাহাড় গড়েছে রোহিত শর্মার দল। অর্থাৎ নেদারল্যান্ডসের সামনে লক্ষ্য ৪১১ রানের।
গুরুত্বহীন ম্যাচ। নেদারল্যান্ডস বাদ পড়েছে, ভারত সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আগেই। বেঙ্গালুরুর এম চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় ভারত।
১১.৫ ওভারের ওপেনিং জুটিতে ১০০ রান তুলে দেন রোহিত শর্মা আর শুভমান গিল। ৩২ বলে ৫১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন গিল। রোহিত আউট হন ৫৪ বলে ৬১ করে। বিরাট কোহলিও পান ফিফটি। ৫৬ বলে ৫১ রানে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।
এরপর শুরু হয় শ্রেয়াস আয়ার আর লোকেশ রাহুলের তাণ্ডব। চতুর্থ উইকেটে ১২৮ বলে ২০৮ রানের বিশাল জুটিতে ভারতকে চারশ পার করে দেন তারাই।
৮৪ বলে সেঞ্চুরি করেন আয়ার, রাহুলের তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে লাগে মাত্র ৬২ বল। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে আউট হন রাহুল।
৬৪ বলে ১০২ রানের ইনিংসে ১১টি চার আর ৪টি ছক্কা হাঁকান রাহুল। ৯৪ বলে ১২৮ রানে অপরাজিত থাকেন আয়ার। মারকুটে ইনিংসে তিনি ১০টি চারের সঙ্গে হাঁকান ৫টি ছক্কা। ডাচ পেসার বেস ডি লিডি ৮২ রান খরচায় নেন ২টি উইকেট।
আরএস