প্রথম ম্যাচেই বরিশালের কাছে হার দিয়ে এবারের বিপিএল শুরু করেছিল রংপুর রাইডার্স। দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াল সাকিবের দল। বাবর আজম এলেন, খেললেন এবং দলকে দিলেন জয়ের স্বাদ। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এই দুই ব্যাটার।
বাবরের নামের পাশে অপরাজিত ৫৬ রান। ৪৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন আজমতউল্লাহ, তিনিও ছিলেন অপরাজিত। ১০ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেট হাতে রেখে সিলেটের করা ১২০ রানের লক্ষ্য টপকে যায় রংপুর রাইডার্স। ২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এসেছে রংপুর।
বিপিএল শুরু হওয়ার পর থেকেই যেন একটি সূত্র বেশ মন্ত্রের মতো কাজ করছে। টসে জেতো, আগে ফিল্ডিং নাও এবং ম্যাচ জেতো। গতকালকের ম্যাচেও হলো তাই। টসে জিতেই সিলেটকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
তবে কতটা খারাপ খেলা যায়, তারই যেন প্রতিযোগিতা করেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্স! আগে ব্যাট করা সিলেট ৫ উইকেট হারিয়েছিল মাত্র ৩৯ রানে। এরপর তাদের করা ১২০ রানের স্বল্প পুঁজির সামনেও রংপুরের টপ অর্ডাররা খাবি খেয়েছে। তারাও সমান ৩৯ রানে হারিয়ে বসেছিল ৬ উইকেট। যদিও সেখান থেকে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজমের হাফ-সেঞ্চুরি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে রংপুর ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে।
মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিজেরাই যেন ডেকে আনল চাপ। রিচার্ড এনগারাভার বাড়তি বাউন্সে ক্যাচ তুলে বিদায় রনি তালুকদারের। নুরুল হাসান সোহান তানজিম সাকিবের সাদামাটা ডেলিভারিতে ধরা দেন বাউন্ডারি লাইনে। এরপর হেমন্তের ঝলক। শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার এক ওভারেই পর পর ফেরান শামীম হোসেন পাটোয়ারি, মোহাম্মদ নবি ও শেখ মেহেদীকে।
৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভিত নড়ে উঠে রংপুরের। তবে বাবর টিকেছিলেন, তাকেই ভরসা করে এগুতে থাকে রংপুরের আশা। আফগান অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে পাশে পেয়ে নিজেকে মেলে ধরেন সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক। পরিস্থিতির দাবি ঠিকমতো পড়তে পেরেছিলেন দুজন। উইকেটেও ছিল না আহামরি কোন বিষ। রানের চাপ তীব্র না থাকায় প্রান্ত বদল করে বলে-রানের হিসাবটা মাথায় রেখেছেন ভালোভাবে। অনেক চেষ্টা করেও তাদের আর আলগা করতে পারেনি সিলেট। ৬৮ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রানের জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন তারা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চরম বিপদে পড়ে সিলেট। দ্বিতীয় ওভারে শেখ মেহেদীর বলে স্টাম্পিং হন মোহাম্মদ মিঠুন। তিনে নেমে ঝড় তোলার চিন্তায় ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। কিন্তু এই ফাটকা কাজে লাগেনি। ৭ বলে ৬ রান করে তিনি আলসে ভঙ্গিতে হন রান আউট। ইয়াসির আলি রাব্বি দুই চারে শুরু করেও শিকার শেখ মেহেদীর বলে। মোহাম্মদ নবির শিকার হয়ে ১ রানে থামেন জাকির হাসান।
এক প্রান্তে টিকে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত মন্থর গতিতে ২৪ বলে ১৪ করে ক্যাচ দেন পয়েন্টে। ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় সিলেট। এরপরই দুই বিদেশীর দারুণ জুটি। বেনি হাওয়েল-বেন কাটিং মিলে যোগ করেন ৬৮ রান। দুজনই করেন ৩৭ করে। দুজনকেই আউট করেন রিপন মন্ডল। শেষ ওভারে একাধিক উইকেট হারিয়ে ১২০ বলের খেলায় ঠিক ১২০ রানে থামে সিলেট।