রাজার মতোই বাংলাদেশের ক্লাব ফুটবলে রাজ করে বেড়াচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। এখনো পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের চলতি আসরের সবগুলো ম্যাচই জিতেছে ক্লাবটি। সবশেষ গতকাল গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে আবাহনীকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা। দৃষ্টিনন্দন ওভারহেড কিকে দলকে এগিয়ে নেন রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো। তিন ব্রাজিলিয়ানের গোছালো আক্রমণ থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করলেন মিগেল ফিগেইরা দামাশেনো। আবাহনীকে হারিয়ে টানা পঞ্চম জয় তুলে নিল প্রিমিয়ার লিগের চারবারের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করলো অস্কার ব্রুসনের দল।
২০২১ সালের স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে সবশেষ কিংসের বিপক্ষে জিতেছিল আবাহনী। এরপর এ নিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ছয় ম্যাচ কিংসের কাছে হারল আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। দুই বড় দলের লড়াইয়ে শুরুর দিকে উত্তাপ ছড়াচ্ছিল আবাহনীই। দ্বিতীয় মিনিটেই মাঝমাঠের একটু ওপর থেকে আচমকা দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেন জোনাথন ফের্নান্দেস, কিন্তু আনিসুর রহমান জিকোকে পরাস্ত করার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। ষষ্ঠ মিনিটে হৃদয়ের ক্রসে ওয়াশিংটন ব্রান্দাওয়ের হেড ঝাঁপিয়ে কর্নার করে দেন জিকো।
কর্নারে মিলাদ শেখ সুলেমানির দুর্বল হেড অনায়াসে গ্লাভসে নেন কিংস গোলরক্ষক। ২৪তম মিনিটে রবিনিয়োর ক্রসে ভালো জায়গা থেকে রাকি হোসেন হেড করেন, তবে এক ড্রপের পর বলের গতি কিছুটা কমে যায়, ঠেকিয়ে দেন আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। কিন্তু দুই মিনিট পর আর পারেননি শহিদুল। দামাশেনোর কর্নারে দূরের পোস্ট থেকে হেড পাসে বল বাড়ান দোরিয়েলতন, চোখ ধাঁধানো ওভারহেড কিকে শহীদুলকে হতভম্ব করে দিয়ে জাল খুঁজে নেন রবিনিয়ো।
৪০তম মিনিটে তপু বর্মনের লং পাস ধরে রবিনিয়ো বাড়ান দোরিয়েলতনের উদ্দেশে। বক্সে ঢুকে এই ব্রাজিলিয়ানের নেওয়া বাঁ পায়ের শট শহীদুলকে ফাঁকি দিয়ে পোস্টে লেগে ফিরে। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের শুরুটা হয় কিছুটা সাদামাটা। ৬৫তম মিনিটে আবাহনীর কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্টের কোনাকুনি শট যায় বাইরে। ৭২তম মিনিটে তিন ব্রাজিলিয়ানের সম্মিলিত আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে কিংস।
রবিনিয়োর পাস দোরিয়েলতনের পা ঘুরে পেয়ে যান দামাশেনো। নিখুঁত নিচু শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। শেষ দিকে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে আবাহনী। ৮১তম মিনিটে আসাদুজ্জামান বাবলুর দারুণ হেড গোললাইন থেকে ফেরান দামাশেনো। একটু পর এনামুল গাজীর শট ফিরিয়ে কিংসকে ম্যাচে রাখেন জিকো। এর পরপরই পাল্টা আক্রমণে ওঠা দামাশেনোর শট ঝাঁপিয়ে আটকে ব্যবধান বাড়তে দেননি শহিদুল।
৮৮তম মিনিটে কর্নেলিয়াসের শট আঙুলের টোকায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে জিকো বের করে দেন। নির্ধারিত সময়ের পর ৮ মিনিটের যোগ করা সময়েও আবাহনী পারেনি জিকোকে পরাস্ত করতে। টানা দুই জয়ের পর ফের তেতো স্বাদ পাওয়া আবাহনী পাঁচ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।