নৈতিক অবক্ষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা

বেলাল হোসেন প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২, ১২:৪৫ এএম
নৈতিক অবক্ষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা

দেশের শিক্ষাঙ্গনে বর্তমানে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ক্রমেই শিক্ষাব্যবস্থার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনীতির নষ্ট দিক, নেতিবাচক নানা কালচারই রপ্ত করছে শিক্ষার্থীরা। 

বরেণ্য শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এ পরিস্থিতির জন্য শিক্ষা প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে। পারিবারিক শাসনের অভাবে কেমন যেন বিধ্বংসী হয়ে উঠছে কতিপয় শিক্ষার্থী। যার প্রভাব গোটা শিক্ষাব্যবস্থায় গিয়ে পড়ছে। এতে করে আগামী প্রজন্মের কাছে বর্তমান পৃথিবী কি বার্তা দেবে তা নিয়েই শঙ্কিত শিক্ষিতসমাজ। 

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাভারের আশুলিয়ায় কলেজের ভেতর শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যা ও নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনা হীনম্মন্যতা, মানবিকতা, শ্রদ্ধাবোধ না থাকারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। 

তারা বলছেন, শুধু কারিকুলামের শিক্ষাব্যবস্থা আর জিপিএ-ফাইভের জন্য ছোটাছুটি করে হবে না। মানবিক শিক্ষা, শ্রদ্ধাবোধ শেখাতে হবে। শিক্ষা প্রশাসনকে আরও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে হবে। অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের প্রতি শিক্ষার পাশাপাশি গুরুজনদের কিভাবে শ্রদ্ধা করতে হয় তার বাস্তব কিছু চিত্র তুলে ধরতে হবে ও তাদের গাইড করতে হবে। 

গতকালও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দীকাকে হেনস্তা করার অভিযোগে একই বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। আগেও এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ এবং হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া কক্সবাজারের পেকুয়ায় ক্লাস চলাকালীন মাদ্রাসায় ঢুকে শিক্ষিকাকে ইট দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটায় আকিব (১৬) নামে এক বখাটে। গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের গোঁয়াখালী উত্তর বটতলীয়াপাড়া এলাকা ছৈয়দ মুহাম্মদ নূরী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। 

এর আগে চলতি বছরের মার্চে মুন্সীগঞ্জের স্কুলশিক্ষক হূদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। 

এ বিষয়ে গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রধান নির্বাহী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, ‘শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনা যেভাবেই হোক কখনো তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটি তার মানবাধিকার লঙ্ঘন।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে যদি মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে থাকে তার দায়িত্ব কিন্তু ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও নিতে হবে। দায় অভিভাবকদেরও নিতে হবে— তাদের সন্তানরা উগ্রমনষ্ক কিভাবে হলো।’ 

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘সাভারের শিক্ষক মৃত্যুর ঘটনা ও নড়াইলে অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে অপদস্ত করা। দুটো ঘটনা কিন্তু একই সূত্রে গাথা। সেটা হলো পরিচালনা কমিটি। পরিচালনা পর্ষদ যেখানে তাদের প্রভাবটা এমনভাবে খাটায় যে, অপরাধীরা ধরা পড়ে না, অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হয় না। যিনি লাঞ্ছিত হলেন তাকে শাস্তি দেয়া হলো, তিনি অপদস্ত হন।’ 

তিনি বলেন,‘একজন শিক্ষককে আমরা হারালাম অথচ সেখানে অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রেখেছেন রাজনৈতিক নেতৃত্বের ছত্রছায়ায়। এটি খুবই দুঃখজনক, এটি হওয়া উচত নয়। শিক্ষকদের হাতে আমাদের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। সেই শিক্ষকদের যদি ঠুনকো ঘটনায় মৃত্যুমুখে ঢলে পড়তে হয়, লাঞ্ছিত হন। 

তাহলে এত উন্নয়ন করে আমরা কোথায় যাচ্ছি। আমরা অগ্রযাত্রার কথা বলছি। কিন্তু আগামী প্রজন্ম যদি অন্ধকারের মধ্যে থাকে তাহলে তো অগ্রগতিও ব্যাহত হবে। একটা মেয়ে শিক্ষার্থীর শালীনতা রক্ষার্থে সাভারের যে শিক্ষকে প্রাণ দিতে হলো— যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একজন নারী, আরও বিভিন্ন সেক্টরে নারী নেতৃত্ব আছে। যেখানে নারী নেতৃত্বের জন্য আমরা সারা বিশ্বে গর্ব করে থাকি। সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

?ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আমার সংবাদকে বলেন,  ‘আমাদের শিক্ষা প্রশাসনের শিথিল এবং মানবিক শিক্ষা কার্যক্রমের উপর যথাযত গুরুত্ব না দেয়ার কারণে এ ধরনের অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, সাভারের যে কলেজের শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে মেরেছে ওই শিক্ষার্থী এলাকার প্রভাবশালীর সন্তান এবং তার আত্মীয় কলেজের সভাপতি আরেক আত্মীয় কলেজের পরিচালক। যার কারণে সে শিক্ষককে মেরে ফেলার পরও সন্ধ্যা পর্যন্ত কলেজটিতে অবস্থান করেছিল। 

সেখানে শিক্ষককে পেটানোর সময় উপস্থিত অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা থাকলেও কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। এ ধরনের অবস্থা তো কখনোই আমরা কল্পনা করতে পারি না।’  

ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘এই শিক্ষার্থী ছোটবেলা থেকে কোনো মানবিক শিক্ষা পায়নি’। সে পরিবারের প্রভাব খাটিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে বলে মনে করেন ঢাবির এ সাবেক উপাচার্য। 

তিনি আরও বলেন, ‘কলেজের অধ্যক্ষকে পুলিশের সামনে দিয়ে জুতার মালা পরিয়ে যেভাবে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়— এখানে প্রশাসনের উচিত ছিল তাৎক্ষণিক দোষীদের গ্রেপ্তার করে তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা। তা না করে সেই শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো— তার মানে গোটা জাতির গলায় কিন্তু এই জুতার মালা পরানো হয়েছে। 

এই ঘটনাগুলো কেন ঘটছে এর কারণ হিসেবে ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রশাসনে যারা আছেন তারা এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা, তদন্ত করা, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা এই জিনিসগুলো করছেন না। শুধু এই দুটো ঘটনা ঘটেছে তা নয়। এর আগেও বহু ঘটনা ঘটেছে।  

শিক্ষক-শিক্ষর্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু কিছু শিক্ষকও নানান অপকর্মের সাথে যুক্ত আছেন এটা অস্বীকার করা যাবে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তো মানুষ যখন এই মানুষের মতো আচারণ না করে অমানুষের মতো আচরণ করে তখন বোঝা যাচ্ছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটা বড় ধরনের গলদ রয়ে গেছে। 

প্রথম গলদ হিসেবে এ সাবেক উপাচার্য বলেন,  আমরা একজন শিক্ষার্থীর সাফল্য হিসেব করি জিপিএ-৫ দিয়ে। তবে সে কি  মানুষ হলো? তার মধ্যে কি মানবতা বোধ জাগ্রত হলো? তাকে কি আমরা মানবিক শিক্ষা দিয়েছি। সেগুলো আমরা শিক্ষকরা হিসেবে নেই না, পরিবার এ বিষয়গুলোকে চিন্তায় করে না। আর যারা নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় আছেন যা করা দারকার সেটা তারা করছেন না। 

সেখানে ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, ইংরেজি ভাষা, বাংলা ভাষা পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মানুষের যে স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, গণবিকাশ, আচার-আচরণ, প্রবীণদের শ্রদ্ধা-সম্মান করা, শিক্ষকদের সম্মান করা এগুলো আমরা দেখছি না। 

তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শিক্ষকদের দেখে দাঁড়িয়ে যান, পায়ে সালাম করেন। এ বিষয় তো আমার টিভি চ্যানেলগুলোতে দেখেছি। সেখান থেকে কি আমাদের শিক্ষার্থীরা কি কোনো শিক্ষা পায় না। এ বিষয়গুলো শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বলেন না নাকি শ্রেণিকক্ষে শুধু সিলেবাস নিয়ে আলোচনা করেন। 

এ বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যালোচনা করা দারকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেন শিক্ষকদের সম্মান করছে না তা খুঁজে বের করা দরকার। শিক্ষকদের পাশাপাশি একই সাথে সমাজেরও দায়িত্ব বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে।

ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কেমন যানি এখন সার্বিক একটা অবক্ষয় ঘটে গেছে। এর থেকে উত্তরণে আমাদের কিছু বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।  
 
এদিকে শিক্ষকদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। ৮১ শিক্ষক এক বিবৃতিতে গতকাল বুধবার এ দাবি জানিয়েছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধন-উৎসবের ডামাডোলে ঢাকা পড়ে গেছে অন্তত দুটি ঘটনা। এ দুই ঘটনা শিক্ষাঙ্গনের জন্য অশনি সংকেত। দুটি ঘটনায় শিক্ষক হিসেবে আমরা যারপরনাই ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। নড়াইলে এক কলেজ অধ্যক্ষের গলায় পরানো হয়েছে জুতার মালা। আর সাভারে এক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট দেয়। তাতে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। স্বপন কুমার পরিস্থিতি বুঝে অভিযুক্ত ছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে অধ্যক্ষ ছাত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। 

এতে ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন স্থানীয় বাসিন্দারাও কলেজে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছিল হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিয়ে। সে সময় কলেজ ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি)। তাদের সাথে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ পুলিশ সদস্য।

১৮ জুনের এ ঘটনায় পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ে এভাবেই অপমাণিত হন। ছাত্র এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে আর অধ্যক্ষ নিরাপত্তার কারণে প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। এ-বাড়ি ও-বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে নিজেকে রক্ষা করছেন। এও জানা যাচ্ছে, তাকে পদচ্যুত করে আরেকজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। 

এ ছাড়াও ২৫ জুন সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল কুমার সরকারকে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুলের মেয়েদের ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে ছাত্রটি হঠাৎ শিক্ষককে স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। আহত উৎপল কুমার পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

১৬ বছর বয়সি ছাত্রটি স্কুল কমিটির এক সদস্যর আত্মীয়। ছাত্রকে পুলিশ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়েও দিয়েছে। অথচ বিষয়টি হত্যাকাণ্ড! এক ছাত্র হত্যা করেছে এক শিক্ষককে। অধ্যক্ষ স্বপন কুমারের আচরণটি শিক্ষক বা নাগরিকসুলভই ছিল। তিনি ছাত্রকে জনতার হাতে ছেড়ে না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন। যদি সে কোনো অপরাধ করে থাকে, প্রচলিত আইনে বিচার হবে। 

কিন্তু তিনি ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন, এ গুজবের কারণে তাকে এমন অপমাণিত হতে হলো। প্রভাষক উৎপল কুমার স্কুল ও কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ছিলেন, দায়িত্বের অংশ হিসেবেই উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রদের তার শাসন করতে হতো, তাদের অন্যায়-অপকর্মের জন্য বিচারের মুখোমুখি করতে হতো। ছাত্রটির বিরুদ্ধে শিক্ষক উৎপল কুমারের শৃঙ্খলাজনিত পদক্ষেপ নেয়ার কারণেই সে বিক্ষুব্ধ ছিল।

বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেছে, দেখা যাচ্ছে, শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনো উচ্ছৃঙ্খল জনতার বা কখনো বিক্ষুব্ধ ছাত্র দ্বারা আক্রান্ত-অপমাণিত হচ্ছেন, মৃত্যুবরণ করছেন। শিক্ষকদের যে সম্মান এই সমাজ দিত একসময়, আজকাল তা তো অপসৃতই, সঙ্গে জুটছে সহিংসতা, এমনকি মৃত্যুও। 

আজ এমন এক সমাজ-রাষ্ট্র দেখা দিয়েছে, শিক্ষাব্যবস্থাকে যেনতেন রকমে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তা দিয়ে কেরানি-আমলা হবে, কিন্তু শিক্ষার যে মূল লক্ষ্য, জ্ঞানচর্চা ও মানবিক মূল্যবোধের লালন, সেসবের অস্তিত্ব যেন নেই সেখানে। শিক্ষকদের প্রাপ্য মূল্য-মর্যাদা দিচ্ছে না আজকের সমাজ।