সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। বাজারও সয়লাব ইলিশ মাছে, কিন্তু দামে কোনো কমতি নেই। বিক্রেতারা বলছেন, গত দুদিনে কেজিপ্রতি ইলিশের দাম বেড়েছে দেড়শ থেকে ২০০ টাকা। এ অবস্থায় শুধু ইলিশের চেহারা দেখেই নিরাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাসাধারণকে।
তারা বলছেন, ভরা মৌসুমে বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ থাকা সত্ত্বেও দাম বাড়তির বিষয়টি ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া কিছুই নয়। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার রেলগেট মাছবাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
স্ত্রী-সন্তানদের আবদার মেটাতে বাজারে ইলিশ কিনতে এসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান সাজু। অন্যদিনের তুলনায় ইলিশের বাড়তি দাম দেখে অনেকটাই হতাশ হয়েছেন তিনি।
দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাজু বলেন, আজ মাছের দাম অনেক বেশি। কারওয়ান বাজারেও এত দাম কল্পনা করতে পারিনি। গতকালও খিলগাঁও মাছের বাজারে গিয়েছিলাম; সেখানেও এত দাম ছিল না। কিন্তু বড় বাজার হিসেবে কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে এসে অনেকটাই নিরাশ। অনেকক্ষণ ঘুরলাম, কিন্তু মাছ কিনতে পারলাম না।
তিনি বলেন, ভেবেছিলাম ইলিশ কিনে কাঁচাবাজারে যাব, কিন্তু ইলিশই তো কিনতে পারলাম না। আর কাঁচাবাজারে গিয়ে কী হবে! হঠাৎ করেই দাম কেন বেড়েছে— সে কারণও তারা বলছে না। তাদের সোজা উত্তর— নিলে নেন, না নিলে হাঁটেন। ইলিশের বাজারদর সম্পর্কে কথা হয় মোহাম্মদ মুমিন নামক আরেক বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ইলিশের দাম এত বেশি যে, আমাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই। দুদিন আগেও বাজারে এসেছিলাম, এত দাম ছিল না। আজ মনে হচ্ছে কেজিপ্রতি দুই-আড়াইশ টাকা বেশি।
তিনি বলেন, খবরে দেখি নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। কিন্তু বাজারে তো সেই চিত্র নেই। এভাবে নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়ালে হয় না। দামটা অবশ্যই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা উচিত।
এদিকে দাম বাড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাঁদপুর-বরিশাল এলাকার নদীগুলোতে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। সেখান থেকে ইলিশ সরাসরি আমাদের কাছে আসেও না। আড়তদাররাও যদি সরাসরি ইলিশ কিনতে পারত, তাহলে দাম অনেকটা কমে আসত। কিন্তু আড়তদারের ওপর আড়তদার, এর ওপর দাদন ব্যবসায়ী। ফলে জেলেদের থেকে হাতবদল হওয়া পরই ইলিশ দাম দৌড়াতে থাকে।