বিশ্ববাজারে আরও কমেছে তেলের দাম। বেশ কিছুদিন ধরে নিম্নমুখী থাকা তেলের দাম এদিন গত ৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে চলে এসেছে। সর্বশেষ ৫ আগস্ট কয়েক সেন্ট বাড়লেও এই দাম কয়েক মাসের তুলনায় সবচেয়ে কম। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় দাম কমছে।
গত শুক্রবার অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেলে ৮০ সেন্ট বেড়ে ৯৪ দশমিক ৯২ মার্কিন ডলার হয়েছে। এক সপ্তাহের তুলনায় এই দাম ১১ শতাংশ কম।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ৪৭ সেন্ট বেড়ে হয়েছে ৮৯ দশমিক ০১ ডলার। এটি এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৮ শতাংশ বেশি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ব্রেন্টের দাম ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছিল ব্যারেলপ্রতি ৯৪ দশমিক ১২ ডলার, যা ২১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন। আর ডব্লিউটিআইয়ের দাম ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে হয়েছিল ৮৮ দশমিক ৫৪ ডলার, যা ৩ ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর পর এই প্রথম এত কমল তেলের দাম। দুই মাস আগেও ষ এরপর ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম ছিল ১২০ ডলারের ওপর।
খবরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে উৎপাদন বেড়েছে। বিশ্বজুড়ে তেলের চাহিদাও কমেছে। এছাড়া সময় যত গড়াচ্ছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা তত বাড়ছে। এতে তেলের দাম কমছে।
লন্ডনভিত্তিক ফোরেক্স কোম্পানি ওয়ান্দার জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক ক্রেগ এরলাম বলেছেন, তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারের নিচে নেমে যাওয়ার বাস্তবিক সম্ভাবনা রয়েছে। এটি নির্ভর করবে বাজার কতটা চাপের মধ্যে থাকবে এবং তা থেকে নিস্তারের সুযোগ কতটা তার ওপর।
এডওয়ার্ড জোন্সের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ফয়সাল এ হারসি বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দরপতনের অন্যতম কারণ এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার দিকে। তারা দেখছেন উদ্ভূত কঠিন পরিস্থিতি কিভাবে গোটা বিশ্বের জ্বালানির চাহিদাকে প্রভাবিত করে।
করোনা ভাইরাস মহামারির শুরুতে সারা বিশ্ব যখন লকডাউনে, তখন অপরিশোধিত তেলের দাম শূন্যেরও অনেক নিচে নেমে যায়। এতে তেল কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়ায়। সেই প্রভাব কমতে শুরু করায় দামও আগের অবস্থানে ফিরতে শুরু করেছে।