জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে চালের দামে। কেজিতে চালের দাম বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। একই সাথে বেড়েছে আটার দামও। বাজারে প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেশি দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বাড়ার ফলে বিক্রিও আগের তুলনায় কমেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শনির আখড়া ও যাত্রাবাড়ীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা (মোটা চাল) ৪৮ টাকা, পাইজাম ৫৬ টাকা এবং ২৮ জাতের চাল ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির আগে এসব চালের দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা কম ছিল।
অন্যদিকে, খোলা আটা আগে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা থাকলেও বর্তমানে ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকার কেজিতে। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম বেশি। তাই খুচরা বাজারেও বেশি দাম বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, পরিবহন খরচ বাড়ার অজুহাত দিয়ে বিক্রেতারা অনর্থক দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। রাজধানীর শনির আখড়ার জিয়া সরণিতে কথা হয় চাল ব্যবসায়ী মো. রনির সঙ্গে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর এখন পর্যন্ত খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালে তিন থেকে পাঁচ টাকা দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানোর পর থেকে বিক্রিও কমে গেছে।
তিনি বলেন, আগে ৪৫-৪৬ টাকা বিক্রি হওয়া স্বর্ণা চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। ৫২-৫৩ টাকা দামের পাইজামের দাম ৫৬ টাকা। ২৮ জাতের চাল ৫৪-৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫৭ টাকা হয়েছে। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর আগে প্রতি কেজি মিনিকেটে ৬৬-৬৮ টাকায় বিক্রি করেছি।
একই এলাকার ব্যবসায়ী মো. রিয়াজ জানান, তেলের দাম বাড়ানোর পর প্রতি বস্তা চালে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। তিনি বলেন, চালের দাম বৃদ্ধির কারণে বিক্রিতেও প্রভাব পড়েছে। যারা আগে বস্তা নিত, এদের মধ্যে অনেক ক্রেতা এখন পাঁচ কেজি চাল নেয়। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে কথা হয় মাসুদ নামের এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, তেলের দাম বাড়ানোর অজুহাত দিয়ে ব্যবসায়ীরা চালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ইচ্ছামতো বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
পরিবহন খরচ যেখানে কেজিতে এক টাকা বেড়েছে, ব্যবসায়ীরা সেখানে পাঁচ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এভাবে দেশ চলতে পারে না। শনির আখড়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. শাওন হোসেন জানান, খোলা আটা আগে ৪৫ টাকা থাকলেও খুচরা পর্যায়ে পাঁচ টাকা বেড়েছে। এখন ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট আটার দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া দুই কেজির আটার প্যাকেট ১০৮-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই বাজারে কথা হয় আটা কিনতে আসা ক্রেতা আলমগীরের সাথে। তিনি বলেন, আগে ৪৪-৪৫ টাকায় প্রতি কেজি কিনেছি। এখন দাম বেড়ে ৫০ টাকা। যেভাবে দাম বাড়ছে, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চলা কঠিন।