আ.লীগের ত্রাণ উপকমিটির ঘর ও সেলাই মেশিন বিতরণ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০২:২৫ এএম
আ.লীগের ত্রাণ উপকমিটির ঘর ও সেলাই মেশিন বিতরণ

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে অসহায় ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘর এবং দুস্থদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করেছে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।

গতকাল মঙ্গলবার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ‘মানবতার আলোকবর্তিকা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে গৃহহীনদের ঘর ও দুস্থদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।  

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।  এ সময় উপকমিটির অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে গাজীপুরের গাছা থানার ৫টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়। প্রতিটি গৃহে দুটি বেডরুম, একটি কিচেন, একটি  রান্নাঘর, একটি বাথরুম এবং একটি বারান্দা রয়েছে।  একইসাথে দুস্থদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনটি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং ৭৬টি অসহায় পরিবারের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।  

এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মানবতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে এটিই আমাদের বড় পাওয়া।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি দুর্যোগে অবিচল ও অনড় ছিলেন। দেশের মৃতপ্রায় মানুষকে উঠে দাঁড়াতে উৎসাহিত করছেন, উপাদান এবং উপকরণ দিয়ে ভরসা জুগিয়েছেন ও মনবল বৃদ্ধি করছেন। কমিনিউটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। এই কমিনিউটি ক্লিনিক গ্রামাঞ্চলের মানুষের ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি অসহায় মানুষকে ঘর উপহার দিচ্ছেন উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আজকে গৃহহীনদের ঘর দেয়া হচ্ছে।

আশ্রয়হীনকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আশ্রয়, কর্মসংস্থান ও বাসস্থানের যে প্রতিশ্রুতি তিনি সাধারণ মানুষকে দিয়েছিলেন,  আজ তা বাস্তবে রূপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।    

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন,  দেশ একটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখে। গণতন্ত্র হুমকির মুখোমুখী। শান্তি আজ বিঘ্নিতপ্রায়। আজকের এমন পরিস্থিতিতে ওরা (বিএনপি) যখন ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়, লাঠি হাতে নিয়ে রাস্তায় নামে এবং চ্যালেঞ্জ করে, তখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিটি কর্মীকে মনে রাখতে হবে— ওরা (বিএনপি) পায়ে পাড়া দিয়ে দেশে অশান্তি পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে মুজিব পরিবারের ঐক্যবদ্ধ শক্তি সব থেকে বেশি প্রয়োজন। যে ঐক্যবদ্ধ শক্তি নিয়ে একাত্তরে বিজয় অর্জন করেছি, যে ঐক্যবদ্ধ শক্তি নিয়ে ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয় অর্জন করেছি, সেই শক্তি দিয়ে বিএনপিসহ সব অপশক্তির অপতৎপরতা প্রতিহত করতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সহনশীলতাকে যদি কেউ দুর্বলতা মনে করে, তাহলে তারা আহম্মকের শহরে বাস করছে।

তিনি পুলিশকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা লাঠিসোটা নিয়ে সভা-সমাবেশ করে, তারা সেই সভা-সমাবেশের অনুমতি কীভাবে পায়।  জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আপনাদের আরও কঠোর হতে হবে এবং সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, শেখ হাসিনা শুধু একটি নাম নয়, বাঙালি জাতি এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের নাম শেখ হাসিনা। তিনি বাঙালি জাতির আলোবর্তিকা হিসেবে এসেছেন। দেশের মানুষের আশা-ভরসা ও আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা। দেশ ও দেশের মানুষকে নতুনভাবে স্বপ্ন দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যা নন, তিনি এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের নেত্রী।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা আজ যে জায়গায় এসেছেন, তিনি কিন্তু একদিনে এই স্থানে আসেননি। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েই তার এখানে আসতে হয়েছে। এই পথ কিন্তু এত সহজ ছিল না। এই পথ ছিল কণ্টকাকীর্ণ।

তিনি আরও বলেন, এই মির্জা ফখরুল ইসলামসহ যারা আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন, তারাই কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দেশে আসতে দেননি। পিতা-মাতা, ভাইসহ সবাইকে হারিয়ে শেখ হাসিনা একজন নাগরিক হিসেবেও এ দেশে আসতে পারেননি, তাকে আসতে দেয়া হয়নি। সেই তাদের মুখে গণতন্ত্রের ছবক মানায় না।

তিনি আরও বলেন, তাদের (বিএনপি) নেতা জিয়াউর রহমান নাকি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ছিলেন। গণতন্ত্রের মধ্যে আবার বহুদলীয় গণতন্ত্র আর একদলীয় গণতন্ত্রের নামে কোনো সংজ্ঞা আছে কি না আমার জানা নেই।