‘সালমান শাহর অকাল প্রয়াণের পর যদি রিয়াজ চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু না করত, তাহলে হয়তো আমার সিনেমায় অভিনয়ই করা হতো না। কারণ রিয়াজকে আমার আব্বা-আম্মা চিনতেন-জানতেন। রিয়াজ চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করার কারণেই আমি আমার আব্বা-আম্মাকে বলতে সাহস পেয়েছিলাম যে, রিয়াজ শুরু করেছে, আমি করলে সমস্যা কী।
তখন আর তাদের কোনো আপত্তি ছিল না। তাই আমার বলতে ভালো লাগে যে, রিয়াজের জন্যই আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করতে সাহস পেয়েছি। আর চলচ্চিত্রে আসার আগে থেকেই তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। আমি, রিয়াজ ও শাকিল তিনজন একসঙ্গে অভিনয় শুরু করি। আমরা তিনজন ছিলাম সহযোদ্ধা। সে সময় আমাদের একসঙ্গে অনেক সময় কেটেছে।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ দেখতে দেখতে তার অভিনয় জীবনের ২৭ বছর অর্থাৎ রজতজয়ন্তী সময়কাল অতিবাহিত করেছেন। ১৯৯৫ সালে দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘বাংলার নায়ক’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সিনেমাতে রিয়াজের অভিষেক হয়। বিমানবাহিনীর চাকরি ছেড়ে রিয়াজ নিজেকে সিনেমার নায়ক হিসেবেই ধীরে ধীরে ব্যস্ত করে তোলেন। ‘বাংলার নায়ক’-এর পর সালমান শাহর সঙ্গে ‘প্রিয়জন’ এবং ‘অজান্তে’, ‘বাঁচার লড়াই’, ‘পৃথিবী আমারে চায় না’ সিনেমাতে অভিনয় করেন।
১৯৯৭ সালে এটলাস মুভিজ প্রযোজিত মো: মুখলেছুর রহমান পরিচালিত ‘হূদয়ের আয়না’ সিনেমাতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে রিয়াজের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম একক নায়ক হিসেবেই আলোড়ন সৃষ্টি করেন। মতিন রহমানের পরিচালনায় ‘মন মানেনা’ সিনেমায় (সালমান শাহ’র পরিবর্তে) শাবনূরের সঙ্গে প্রথম নায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু। শাবনূরের সঙ্গে রিয়াজকে দর্শক লুফে নেয়। পরবর্তীতে শাবনূরের সঙ্গে আরো বহু সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত করেন।
জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমাতে রিয়াজের বিপরীতে প্রথম নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার। রিয়াজ তার দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনের ক্যারিয়ারের শাবনূর ও পূর্ণিমার সঙ্গেই বেশি অভিনয় করেছেন। নাটকে তার প্রথম অভিনয় করা অতিথি চরিত্রে হুমায়ূন আহমেদ’র ‘হাবলঙ্গের বাজারে’ নাটকে। পরবর্তীতে হূমায়ূন আহমেদ’রই নির্দেশনায় ‘দুই দূয়ারী’ সিনেমাতে অভিনয় করে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
পরবর্তীতে তৌকীর আহমেদ’র ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ও চন্দন চৌধুরীর ‘কী যাদু করিলা’ সিনেমাতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। সবচেয়ে বেশি সিনেমা করেছেন রিয়াজ শাবনূর ও পূর্ণিমার সঙ্গে। ২০০৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর রিয়াজ তিনাকে বিয়ে করেন। ২০১৫ সালের ৩০ মে তাদের ঘর আলোকিত করে আমিরা সিদ্দিকী’র জন্ম হয়।