খরস্রোতা যমুনায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণকাজে চলমান ডলার সংকটের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান। গত বৃহস্পতিবার সেতুর চতুর্থ স্প্যান বসানো শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এদিন রেলপথমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চতুর্থ স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে মন্ত্রী যোগ দিতে পারেননি। পরে ঢাকা থেকে পরিদর্শনে আসা সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ওইদিন দুপুরে চার নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়।
৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর পূর্বপ্রান্তে চলছে স্প্যান বসানোর কাজ। ইতোমধ্যে চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে। সেতুটির ৪৬ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে তার পাশেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথম স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়। সেতুটিতে ৫০টি পিলারে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো হবে।
মাসউদুর রহমান বলেন, ৫০টি পিলারের মধ্যে ১২টির কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে, ২৩টি পিলারের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুটির শতকরা ৪৬ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে জাইকা।
সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশে নদীর দুই পাড়ে দুটি প্যাকেজে দেশি-বিদেশি কর্মী-প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে সেতুটির নির্মাণকাজ চলছে।
এর আগে ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপন হয়।
তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেয়ায় কমিয়ে দেয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে গতি বাড়বে ট্রেনের। তখন গতিসীমা হবে ১২০ কিলোমিটার। সেতুটি পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ৪ মিনিট। ফলে প্রতিদিন ৬৮টি ট্রেন যমুনা নদী পাড়ি দিতে পারবে। এখন ২৭ মিনিট সময় নিয়ে ধীরগতিতে পাড় হচ্ছে ট্রেন। তাই দিনে ৩৬টির বেশি ট্রেন পাড়ি দিতে পারছে না।