আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিসহ ২৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে পোস্টার লাগানো হয়েছে। ওই পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালীর বিভিন্ন ক্যাম্পে এ ধরনের পোস্টার দেখতে পান সাধারণ রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পে ১১, ১২, ১৮ ও ১৯ নং ক্যাম্পে এসব পোস্টার বেশি দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। তবে কারা এ পোস্টার লাগিয়েছে, তা জানা যায়নি।
পোস্টার প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ৮-আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর বলেন, পোস্টার বিভিন্ন ক্যাম্পে দেওয়া হয়েছে- সেটা সঠিক; তবে তা আমরা প্রকাশ করিনি। পোস্টারে থাকা সন্ত্রাসীরা যদি কোনো মামলার আসামি হয়, তাহলে তাদের যে কোনোভাবে গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি জানান, ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে আমাদের নজরদারি রয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতাও রয়েছে। তাদের দেখা গেছে, এমন কোনো খবর এলে গ্রেপ্তার করা হবে।
পোস্টারে থাকা ২৮ জন হলেন: আরকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি, হেদায়েত উল্লাহ ওরফে খালেদ, মৌলভি মোস্তাক (এফসিএন নং 024377), মৌলভি লাল মোহাম্মদ ওরফে বোরহান, নুর কামাল ওরফে সমি উদ্দিন (এফসিএন নং ১৩১৪৪১), ইব্রাহিম (এফসিএন নং ১৪০২১০), মৌলভি জাকারিয়া (এফসিএন নাম্বার নং ১২৮৬৫৫), কাউসার ওরফে সাবের, খায়রুল আমিন ওরফে ইব্রাহিম, আলী জোহর (এফসিএন নং ২৮৪৬৫২), হাফেজ ইউনুস, সানাউল্লাহ, জুলাইয়ার (এফসিএন নং ১৩০৪৫১), শফিক (এফসিএন নং ৫০৫৯৭২), নুর মাহমুদ (এফসিএন নং ১৩৯৬৪৬), হাফেজ নুর মোহাম্মদ (এফসিএন নং ১২৮৯১৩), আব্দুর রহমান, হাসান, জাহিদ হোসেন ওরফে লালু, মাস্টার আব্দুর রহিম, জান্নাত উল্লাহ, মোহাম্মদ সলিম, মাহামুদুর রহমান, মোহাম্মদ জুবাইয়ের (এফসিএন নং ১১২৩৫৩), মোহাম্মদ আলম ওরফে মুসা।
পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় যা লেখা ছিল: ‘তারা সন্ত্রাসী। এ মানুষগুলোকে ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি কোনো ক্যাম্পে কেউ তাদের দেখতে পান, তাহলে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করার জন্য বলা হলো’।
স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে বিভিন্ন ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে এ ধরনের পোস্টার দেখা যাচ্ছে। যেখানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সঙ্গে অনেকের ফ্যামিলি কাউন্টিন নম্বরও দেয়া হয়েছে।’
বালুখালী ক্যাম্পে-৮-এর ব্লক মাঝি মোহাম্মদ খলিল বলেন, ‘তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে ক্যাম্পে শান্তি ফিরবে। আমরাও চেষ্টা করছি তাদের ধরিয়ে দিতে। ক্যাম্পের অর্ধেক অপরাধ এদের নিয়ন্ত্রণে চলে। বিভিন্ন সময় মহড়াতেও তাদের দেখেছি। আমরা সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।’
বালুখালী ক্যাম্পের মাঝি রহিম উদ্দিন বলেন, ‘১৮, ১৯ নং ক্যাম্পে এসব পোস্টার দেখা যাচ্ছে। সরকারকে সহযোগিতা করতে আমরা আগ্রহী। আমরা দেখতে পেলে প্রশাসনকে জানাব।’
তুমব্রু সীমান্তে সহিংসতার কারণে যাতে ক্যাম্প কোনো ধরনের প্রভাব না পড়ে, সেজন্য ক্যাম্পজুড়ে টহল জেরদার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর।