হজ নিবন্ধন

অষ্টমবারের মতো বাড়ল সময়

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৩, ১১:৩৫ এএম
অষ্টমবারের মতো বাড়ল সময়

চলতি বছরের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে গত ৫ এপ্রিল। তবে কোটা পূরণে এখনো আট হাজার ২৪৪ জনের নিবন্ধন বাকি। অর্থাৎ চলতি বছর এখন পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় সাত দফা বাড়ানো হলেও পূরণ করা সম্ভব হয়নি নির্ধারিত কোটা। এমন অবস্থায় নিবন্ধনের জন্য ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সরকার।

গতকাল শনিবার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বুধবার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় শেষ হলেও আগামী রোববার পর্যন্ত সার্ভার খোলা রাখা হবে। অর্থাৎ রোববার পর্যন্ত হজে যেতে নিবন্ধন করা যাবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনও কোটার আট হাজার ফাঁকা থাকলেও সরকারি-বেসরকারি তিন হাজারের বেশি হজ গাইডকে সৌদি আরবে পাঠাতে হবে। তাদের জন্য কিছু কোটা সংরক্ষণ করা আছে।

ফলে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে চার হাজার কোটা ফাঁকা থাকতে পারে।’ বুধবার হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, রাত ৯টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৮ হাজার ৯৫৪ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৯৩ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ আট হাজার ৯৬১ জন। এখনো কোটা পূরণে আট হাজার ২৪৪ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি আছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার হজের খরচ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় নিবন্ধনে ভাটা পড়েছে। এর আগে সাত দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করা যায়নি। সৌদি আরবে সেবা মূল্য কমার কারণে চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজ পালনে খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানো হয়েছে। কিন্তু এরপরও সাড়া মেলেনি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। খরচ কমানোর পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ছয় লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে ছয় লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা লাগবে।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করলেও তা কমায়নি সরকার। চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়ও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়।

সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে সময় আরেক দফা বেড়ে হয় ৩০ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে কোটা পূরণ না হলে শেষে নিবন্ধনের সময় ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এ বছর সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ নির্ধারণ করা হয় ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয় ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ।

গত ২ এপ্রিল রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) উদ্যোগে ‘হজ প্যাকেজ ২০২৩ ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনার ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘সরকারি ক্ষেত্রে কিছু খালি আছে। সরকারি ক্ষেত্রে খালি থাকার কারণ হলো- ডিফেন্সের যারা যান, তাদেরটা যুক্ত হবে। আরও নানান জায়গা থেকে যুক্ত হবে। এতে আমরা সংকুলান করতে পারব বলে আশা করি।’ তিনি বলেন, ‘বেসরকারিভাবে হজযাত্রীও পূরণ হয়ে যাবে। আগে হজযাত্রী যাওয়া, না যাওয়া নিয়ে আগে যে একটা চিন্তা-ভাবনা ছিল কেমন যায় না যায়। হজযাত্রী যেতে পারবে না, সেই চিন্তা করার অবকাশ ইনশাআল্লাহ নেই।’

প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।