- ৩২ ব্যাংকের ৪০ শাখার মাধ্যমে নতুন টাকার বিনিময় শুরু হয়েছে
ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। এই খুশির মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় ঈদের সালামি। বড়দের কাছ থেকে ছোটদের ঈদ সালামি নেয়া ঈদ আনন্দের বড় অনুষঙ্গ। আর সেই সালামির টাকা অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে একেবারে নতুন, কড়কড়ে। এ ছাড়া বকশিশ, দান-খয়রাত কিংবা ফিতরাতেও অনেকে নতুন টাকা বিতরণ করেন। তাই ঈদ ঘিরে গ্রাহকদের কাছে নতুন টাকার আকর্ষণও একটু বেশি। গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে প্রতি বছরই ঈদের আগ মুহূর্তে বাজারে নতুন টাকার নোট ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত রোববার থেকে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের ৩২টি ব্যাংকের ৪০টি শাখার মাধ্যমে নতুন টাকার বিনিময় শুরু হয়েছে। এ বছর মোট ১৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর সমপরিমাণ টাকার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন টাকা দিচ্ছে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগের পরিচালক মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, এ বছর মোট ১৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এ সমপরিমাণ টাকার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন টাকা দিচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। একই ব্যক্তি একাধিকবার নতুন নোট গ্রহণ করতে পারবেন না।
একজন সর্বোচ্চ সাড়ে আট হাজার টাকার নতুন নোট নিতে পারবেন। গত ৯ এপ্রিল থেকে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) ৩২টি ব্যাংকের ৪০টি শাখার মাধ্যমে নতুন টাকা সংগ্রহ করতে পারবেন গ্রাহকরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন অফিসের মাধ্যমে চার ধরনের নতুন নোট (৫, ১০, ২০ ও ৫০ টাকা মূল্যমানের নোট) বিশেষ ব্যবস্থায় বিনিময় করা হবে। একই ব্যক্তি একাধিকবার নতুন নোট গ্রহণ করতে পারবেন না। তবে নোট উত্তোলনকালে কেউ ইচ্ছা করলে কাউন্টার থেকে মূল্যমান নির্বিশেষে যেকোনো পরিমাণ ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করতে পারবেন।
যেসব ব্যাংকে মিলবে নতুন টাকার নোট : এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, যাত্রাবাড়ী শাখা, ঢাকা; মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, বাবু বাজার শাখা, ঢাকা; পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, সদরঘাট শাখা, ঢাকা; জনতা ব্যাংক লিমিটেড, আব্দুল গণি রোড কর্পোরেট শাখা, ঢাকা; অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্পোরেট শাখা, ঢাকা; রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্থানীয় কার্যালয়, ঢাকা; এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, মতিঝিল শাখা, ঢাকা। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, রমনা কর্পোরেট শাখা, ঢাকা; ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, বাসাবো শাখা, ঢাকা; আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, নন্দীপাড়া শাখা, ঢাকা; এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, মালিবাগ শাখা, ঢাকা; অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রামপুরা টিভি শাখা, ঢাকা; এবি ব্যাংক লিমিটেড, প্রগতি সরণি শাখা, ঢাকা; প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, বসুন্ধরা শাখা, ঢাকা; প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, বনানী শাখা, ঢাকা; ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, বনানী-১১ শাখা, ঢাকা। আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড, গুলশান শাখা, ঢাকা; ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, মহাখালী শাখা, ঢাকা; সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা; সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) শাখা, ঢাকা; প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, এ্যালিফেন্ট রোড শাখা, ঢাকা; ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, নিউমার্কেট শাখা, ঢাকা; ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ধানমন্ডি শাখা, ঢাকা; সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, মোহাম্মদপুর শাখা, ঢাকা। ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, শ্যামলী শাখা, ঢাকা; সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জাতীয় সংসদ ভবন শাখা, ঢাকা; ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, মিরপুর শাখা, ঢাকা; এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, মিরপুর শাখা, ঢাকা; দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বেগম রোকেয়া সরণি শাখা, ঢাকা; জনতা ব্যাংক লিমিটেড, রজনীগন্ধা, ঢাকা (সাবেক কচুক্ষেত কর্পোরেট শাখা); ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার শাখা, দক্ষিণখান, ঢাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, গাউসুল আযম এভিনিউ শাখা, ঢাকা; রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা মডেল টাউন কর্পোরেট শাখা, ঢাকা। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, কোর্ট বিল্ডিং শাখা, গাজীপুর; মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ শাখা, নারায়ণগঞ্জ; এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, শিমরাইল শাখা, নারায়ণগঞ্জ; ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, কাচপুর শাখা, নারায়ণগঞ্জ; প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ শাখা, নারায়ণগঞ্জ; মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, সাভার শাখা, সাভার এবং ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, কেরানীগঞ্জ শাখা, কেরানীগঞ্জ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন বিল্ডিংয়ের নিচতলা থেকেও নতুন টাকার নোট নিতে পারছেন গ্রাহক। কোনো ব্যক্তি যেন একাধিকবার নতুন টাকা নিতে না পারেন এ জন্য এনআইডি কার্ড দিয়ে টাকা নিতে হচ্ছে। এখান থেকেও একজন সর্বোচ্চ আট হাজার ৫০০ টাকা নিতে পারছেন। তবে সকাল থেকে সেখানে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এ কারণে ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই খোলা বাজারে থেকে নতুন টাকা কিনছেন বাড়তি অর্থ খরচ করে। গুলিস্তান ও মতিঝিল সেনাকল্যাণ ভবনের সামনের অস্থায়ী নতুন টাকার বাজার জমে উঠেছে। এসব বাজার থেকে প্রতি এক বান্ডিল নতুন টাকার জন্য ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।