- প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ১২ দল, বাদ পড়ল ৮১টি
- উপজেলায় ২০০ ভোটারে ঝুলছে নতুনদের ভাগ্য
নতুন করে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে ১২টি রাজনৈতিক দল। রাজপথের ভূমিকা ও রাজনৈতিক নিবন্ধন পেতে সব ধরনের চাওয়া-চাহিদা পূরণ করে আলোচনায় এখন অনিবন্ধিত শীর্ষ ১২ রাজনৈতিক দল। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এবার নতুন করে নিবন্ধন পেতে ৯৩টি দল আবেদন করেছিল। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করতে একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দিয়েছে ইসি।
সেখানে ৮১টি দল বাদ পড়ে যায়। ৯৩ আবেদনের মধ্যে ১৪টি আবেদন নির্দিষ্ট ফরম্যাটে ছিল না এবং দুটি আবেদন প্রত্যাহার করা হয়েছিল। নিবন্ধন পেতে আবেদন করা ৯৩ রাজনৈতিক দলের মধ্যে এক ডজন দল প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে গেছে। এসব দলের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ে উদ্যোগ নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। আগামী জুনের মধ্যেই উত্তীর্ণ দলগুলোরে নিবন্ধন চূড়ান্ত করবে সাংবিধানিক সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া দলগুলো হলো : এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।
মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নতুন করে নিবন্ধন পেতে ৯৩টি দল আবেদন করেছিল। এই আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ১৬টি আবেদন বাতিল হয়ে যায়। অবশিষ্ট ৭৭টির মধ্যে আমরা তাদের কাগজপত্র ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলেছিলাম। ১৯টি দল ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে পারেনি। এছাড়া দুটি চিঠির ঠিকানা ঠিক না থাকায় ফেরত এসেছে। ১০টি দল সময়ের আবেদন করেছিল। সেটা নামঞ্জুর করা হয়েছিল। এভাুে ৩১টি আবেদন পরবর্তীতে বাতিল হয়।’
তিনি বলেন, ‘সবশেষে থাকে ৪৬টি আবেদন। এই ৪৬টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। নীতিমালা আইন এবং চাওয়া তথ্যের সঙ্গে তারা যা দিয়েছে, তা পূরণ না করায় ৩৪টি আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এরপর থাকে ১২টি দল। তারা যে তথ্য দিয়েছে, তা মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর কমিশন তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেবে।’
কবে চূড়ান্ত হতে পারে এবং কারো সুপারিশে এই বাছাই হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, আমাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষে ওই ১২টি দলের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যার কারণে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় ও কেন্দ্রীয়ভাবে অফিস আছে কি না ইত্যাদি যাচাই করা হবে। আমরা বলেছি, ১৫ দিনের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। রোডম্যাপ অনুযায়ী জুনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।’ যাচাই-বাছাইয়ের পর কটি টিকবে-কি টিকবে না— সেটা বলতে পারবেন না জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে ২০০ ভোটারের সমর্থন থাকা লাগবে, এখন সেটা যাচাই করা হবে।
এক-তৃতীয়াংশ জেলায় অফিস আছে কি না, সেই রিপোর্ট আসার পর সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।’ জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক এবং আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়া আমার সংবাদকে বলেন, ইসির প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে গণঅধিকার পরিষদের নামটি রয়েছে। আমি শতভাগ আশাবাদী আমরা নিবন্ধন পাব। একটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে যা কিছু প্রয়োজন, সবই পূরণ করা হয়েছে। কাগজপত্র থেকে শুরু করে সব ধরনের চাহিদা সম্পূরক রয়েছে। আমি আশাবাদী চূড়ান্ত তালিকায় গণধিকার পরিষদের নাম থাকবে।
আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু আমার সংবাদকে বলেন, আমার রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ধরে অনেক কাজ করেছে। রাজপথে একটি দলের যত ধরনের ভূমিকা থাকা দরকার, আমরা সবই করেছি। আমাদের সব কর্মকাণ্ড রয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের যত ধরনের ভূমিকা থাকে, কাজ থাকে, আমরা সবই করেছি।
প্রাথমিক তালিকায় আমার বাংলাদেশ পার্টির নাম রয়েছে; এজন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, চূড়ান্তভাবে আমাদের নাম তালিকায় থাকবে। বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান আমার সংবাদকে বলেন, আশাবাদী আমাদের দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ সব ধরনের কাগজপত্র ঠিক আছে। এবার আমরা নিবন্ধন পাব। চূড়ান্ত পর্যায়ে অবশ্যই আমাদের দলের নাম থাকবে।