- ১০ ডিগ্রির নিচেও খোলা স্কুল
- স্কুলে এসে জানতে পারছে বন্ধ
- সময় বিভ্রাটে অভিভাবক-শিক্ষার্থী
স্থানীয় আবহাওয়া পূর্বাভাসের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেবেন
—এস এম জিয়াউল হেনরী
সহকারী পরিচালক, মাউশি
টানা কয়েক দিন ধরে সারা দেশে শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র শীত বিরাজ করেছে। তীব্র শীতে স্কুলশিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ১০ ডিগ্রির নিচে আবহাওয়ায় স্কুল ছুটির বিজ্ঞপ্তি দেয় মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর-মাউশি। কিন্তু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ বার্তা কখন জানবে? কোন দিন স্কুল বন্ধ ও খোলা থাকবে— এ নিয়ে তীব্র ঠাণ্ডাপ্রবণ জেলার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা রয়েছে বিপাকে। কেউ স্কুলে আসার পর জানতে পারছে স্কুল বন্ধ। আবার কোথাও ১০ ডিগ্রির নিচে আবহাওয়া থাকলেও স্কুল বন্ধ হচ্ছে না। এ বিষয়ে মাউশির কর্মকর্তারা বলেন, স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের টেকনিকেল লোকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানা যায়, গতকাল দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলেও সবগুলো মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা ছিল। যদিও একই দিন বন্ধ ছিল জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে ছুটির আগাম ঘোষণা না পেয়ে প্রতিদিনের মতো সকাল ৯টায় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে দেখা গেছে। স্কুলে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা শোনে প্রতিষ্ঠান বন্ধ।
দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা কমলেও সকালেই উঠেছে সূর্য। ফলে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে জনজীবনে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় প্রভাব নেই বললেই চলে। তবে দিনাজপুরে এ নিয়ে এক মাসেই তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল কেটে দেন। অন্যদিকে গতকাল সকালে জেলা পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক সেলসিয়াস। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ রেকর্ড করা হয়। এমতাবস্থায় ১৮ জানুয়ারি জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুধু শ্রেণি পাঠদান বন্ধ থাকবে। এমন চিঠি পেয় বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক। পঞ্চগড় ১নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল হক মনির বলেন, আমরা বেলা ১১টায় শিক্ষকদের একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে বন্ধের চিঠি দেখেছি। এরপর শিক্ষা অফিসে ফোন করে নিশ্চিত হয়ে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়েছি।
এ ঘটনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। মাহবুবুর রহমান নামে একজন অভিভাবক বলেন, এত সকালে শীতের মধ্যে স্কুলে যাওয়া আমাদের জন্য কষ্টকর। সে জন্য সরকার একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কর্তাদের উদাসীনতার কারণে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তাসলিমা বেগম বলেন, আমি সন্তানকে নিয়ে ১০ কিলোমিটার পথ পার হয়ে স্কুলে এসেছি। এত সকালে স্কুলে এসে এখন শুনি স্কুল বন্ধ। গ্রাম থেকে শহরের স্কুলে এত কষ্ট করে এলাম। এখন শুনি স্কুল বন্ধ। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে এক দিন আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যেত। এই শীতে ৭টায় উঠে খাওয়া-রেডি হওয়া এটি বাচ্চার জন্য কতটা কষ্টকর তা এরা কীভাবে বুঝবে?
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় জেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, নতুন হওয়ার কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। আগামীতে এ সমস্যা হবে না। আমরা এক দিন আগেই জানিয়ে দেবো। আবহাওয়ার পূর্বাভাসের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত জানাব।