সুনসান নিরবতায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের লাশ ঘর। কিন্তু এখানেই এক বিরাট জটলা। কিছুটা বাকবিতণ্ডা। এই বাকবিতণ্ডা মিনহাজ ও নাজমুলের পরিবারের। মিনহাজের পরিবারের দাবি পোড়া দুটি লাশের মধ্যে ঘড়ি পরা যে লাশটি আছে সেটা মিনহাজের।
কিন্তু নাজমুলের পরিবারের দাবি— সেটি নাজমুলের লাশ। মিনহাজের পরিবার দেখানোর চেষ্টা করছেন একটি ছবি। যে ছবিটি দেখাচ্ছেন সেটি ওইদিন বেঁচে যাওয়া আরেক বন্ধুর ফোন থেকে নেয়া। সে ছবিতে মিনহাজের হাতে পরা ঘড়ি আছে এবং এই ঘড়ি আর লাশের হাতের ঘড়ির অনেকটা মিলও পাওয়া গেলো। মিনহাজের পরিবারের আরও দাবি জন্মের ছয় মাস পর পেটে একটি অপারেশন হয়েছে। সেটিরও মিল পেয়েছেন তারা। তাছাড়া ছবির দাঁতের সাথে পোড়া ওই লাশের দাঁতের মিল পেয়েছেন।
এতসব আলামত দেখিয়েও নাজমুলের পরিবারকে বোঝাতে পারছেন না এটি মিনহাজের লাশ। অন্যদিকে নাজমুলের পরিবারের দাবি— ডিএনএ করেই যেন লাশটি হস্তান্তর করা হয়।
গত শুক্রবার রাত ৯টায় রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের টনা ঘটে। এতে ৪৬ জন নিহত হন। এর মধ্যে ৪৩ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা জেলা প্রশাসন। বাকি তিনটি লাশ পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ বিভাগে। তিন লাশের মধ্যে একটি নিয়ে দুই পরিবার দাবিদার একটি লাশ অভিশ্রুতী শাস্ত্রী, আরেকটির পরিবারের হদিস নেই। ধারণা করা হচ্ছে, হদিসবিহীন লাশটি হয়তো নাজমুলের আর না হয় মিনহাজের।
এদিকে অভিশ্রুতী শাস্ত্রীর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সব কার্যক্রম শেষ হলেও শেষ সময়ে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম নিবন্ধনপত্রে ইডেন কলেজের প্রবেশপত্র এবং চাকরির জন্মবৃত্তান্তে গরমিল থাকায় আটকে যায় ওই লাশের হস্তান্তর প্রক্রিয়া। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. কাজি গোলাম মুখলেসুর রহমান জানান, বডি যেহেতু বার্ন হয়েছে সেহেতু ছবি বা ঘড়ি দিয়ে শনাক্ত করা সম্ভব না।