কোয়ালিটির প্রশ্নে এক বিন্দুও ছাড় দেয় না মিনিস্টার ব্র্যান্ড

নুর মোহাম্মদ মিঠু প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৪, ১১:৫৯ পিএম
কোয়ালিটির প্রশ্নে এক বিন্দুও ছাড় দেয় না মিনিস্টার ব্র্যান্ড

বাংলাদেশে ফ্রিজ উৎপাদন করছে ১৩ দেশি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ অন্যতম। দেশের ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজারে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থানও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বাহারি ডিজাইন, সাশ্রয়ী দাম, স্থায়িত্ব, বিদ্যুৎ সাশ্রয় কম্প্রেসার ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা দিয়ে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সফল মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষেও নিয়ে আসছে নতুন নতুন মডেলের ফ্রিজ ও অফার। এছাড়াও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আমার সংবাদের সঙ্গে কথা বলেছেন মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ, সিআইপি। 

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নুর মোহাম্মদ মিঠু

আমার সংবাদ : মানুষের জীবনকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে ফ্রিজের ভূমিকা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? 

এম এ রাজ্জাক খান রাজ : আমাদের দৈনন্দিন কাজে ফ্রিজ অবিচ্ছেদ্য একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় ফ্রিজকে বিলাসী পণ্য হিসেবে গণ্য করা হলেও বর্তমান সময়ে এসে একে একটি অপরিহার্য পণ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। ফ্রিজে কাঁচা শাকসবজি, মাছ-মাংস সংরক্ষণ করা এবং অপচয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। দৈনন্দিন জীবনকে সহজ ও আরামদায়ক করতে ফ্রিজের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে মিনিস্টার ব্র্যান্ডের ফ্রিজ নিশ্চিত করে গ্রাহক যেন তাদের বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের পণ্যটি কিনতে পারেন এবং কোনো চিন্তা ছাড়াই বছরের পর বছর ব্যবহার করতে পারেন। কারণ মিনিস্টার ব্র্যান্ড কোয়ালিটির প্রশ্নে এক বিন্দুও ছাড় দেয় না । 

আমার সংবাদ : বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আপনাদের পণ্য ভোক্তাসাধারণ কেন কিনবেন বলে মনে করেন? 

রাজ্জাক খান রাজ : মিনিস্টার ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নানান ডিজাইন ও সর্বাধুনিক ফিচার সংবলিত এবং সব ধরনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন রেফ্রিজারেটর তৈরি করে থাকে। ফ্রস্ট, ননফ্রস্ট, রেফ্রিজারেটর, চেস্ট ফ্রিজার ইত্যাদি সব ক্যাটেগরির ফ্রিজ মিনিস্টার প্রোডাক্ট লাইনে রয়েছে। এছাড়াও মিনিস্টার রেফ্রিজারেটরে রয়েছে হাই টেমপার্ড গ্লাস ডোর, যা অত্যধিক চাপেও ভাঙে না। রয়েছে বিল্ট-ইন স্ট্যাবিলাইজার। এছাড়াও এর দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনগুলো সবার নজর কাড়তে বাধ্য। ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্য ছাড়াও মিনিস্টার গ্রাহকের জন্য ৩৬ মাসের কিস্তিতে ফ্রিজ বিক্রি করে থাকে। মেম্বারশিপ কার্ড দিয়েও ক্রেতারা ক্রেডিট ব্যবহার করে তাদের কাঙ্ক্ষিত পণ্য কিনতে পারবে। আর বছরজুড়ে সম্মানিত গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার তো থাকেই।

আমার সংবাদ : ফ্রিজ তৈরির ক্ষেত্রে মূল্য, বিক্রয়োত্তর সার্ভিস, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী, টেকসই— এসব বিষয় আপনারা কতটা আমলে নিয়ে থাকেন বা এতে ভোক্তারা কতটুকু লাভবান হন?

রাজ্জাক খান রাজ : দেখুন, আমরা পণ্য তৈরি করার সময় থেকেই আমাদের গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। গ্রাহকের সক্ষমতাকে মাথায় রেখেই আমরা প্রতিটি পণ্যের মূ্ল্য নির্ধারণ করে থাকি। আমাদের ফ্রিজে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ খরচ ৬৬শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে সহায়তা করে থাকে। বাজারের অন্যান্য রেফ্রিজারেটরের তুলনায় মিনিস্টার ব্র্যান্ডের প্রায় সব পণ্যেই সর্বাধিক বিদ্যুৎসাশ্রয় করে। একটি পরিবারে ফ্রিজ যেহেতু সবস ময় চালু থাকে, সেহেতু বিদ্যুৎসাশ্রয়কে আমরা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। তাছাড়া এই রেফ্রিজারেটরগুলো সম্পূর্ণ ফুডগ্রেডেড এবং এতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে আর৬০০এ গ্যাস, যা একইসঙ্গে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। এছাড়াও সারা দেশে আমাদের ৩০০টিরও বেশি সার্ভিস পয়েন্ট এবং নিজস্ব কলসেন্টারের মাধ্যমে মিনিস্টার ২৪/৭ গ্রাহক পরিষেবা, ওয়ারেন্টি কভারেজের মাধ্যমে বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করে থাকে। যে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি হলে গ্রাহককে দ্রুত সার্ভিস দিতে একটি দক্ষ টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।  

আমার সংবাদ : এ শিল্পের বিকাশে আমাদের দেশের করকাঠামো কতটা সহায়ক?

রাজ্জাক খান রাজ : স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ সংযোজন শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে শুল্ক কমানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশি শিল্পগুলোর জন্য আরও এক বছর কর সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে। দেশি শিল্পের সক্ষমতা অর্জনে বিদ্যমান এই সুবিধা আরও কয়েক বছর অব্যাহত থাকলে বিশেষ সুবিধা হয়। 

আমার সংবাদ : ডলার সংকট ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসার খরচ বেড়েছে গত দুবছরে। এ জন্য রেফ্রিজারেটরের দামও বেড়েছে। এর ফলে কী বিক্রিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে? 

রাজ্জাক খান রাজ : ফ্রিজ উৎপাদন শিল্পে বর্তমান প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অন্যতম হলো ডলার সংকট। এছাড়া গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিও উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। বিশ্বব্যাপী ডলার সংকট থাকায় বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করতে বেশ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে সরকার ডলার ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে এবং দ্রুতই এ সমস্যা সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী। এসব কারণে অনেক কোম্পানি বাধ্য হচ্ছে ফ্রিজের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। তবে মিনিস্টার ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে অল্প লাভ হলেও ফ্রিজসহ সব পণ্যের দাম নাগালের মধ্যেই রাখছে।