দিনভর উত্তাল ব্যাংকপাড়া

আনোয়ার হোসাইন সোহেল প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৪, ১২:৩৮ এএম
দিনভর উত্তাল ব্যাংকপাড়া
  • সংঘর্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া গুলিবিদ্ধ ৬
     
  • পরীক্ষাবিহীন সব নিয়োগ বাতিল হবে  
  • ২০১৭-এর পর পদোন্নতিবঞ্চিতদের দেয়া হবে পদোন্নতি
  • ব্যাংকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ

ডাকফাইল দেখবেন ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার
—বাংলাদেশ ব্যাংক

শুধু রাস্তা নয় ব্যবসা-বাণিজ্যও চালু করা দরকার
—অর্থ উপদেষ্টা

 দেশের ব্যাংক খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগ করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউ পালিয়ে গেছেন, আবার কেউ কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। অনেকে আবার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আক্রোশ থেকে বাঁচতে অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ বহু কর্মকর্তা। ফলে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে দেশের ব্যাংক খাতে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ পাওয়াদের হটাতে বিক্ষোভ করেন চাকরিচ্যুত, পদবঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। তারই পথ অনুসরণ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর, এক উপদেষ্টা ও বিএফআইইউর প্রধান। এছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনায় এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিচ্যুত ও পদবঞ্চিত কর্মীরা। ইসলামী ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা এস আলম গ্রুপের গ্রাস থেকে দেশের ব্যাংক খাত উদ্ধারের আহ্বান জানান। 

শুধু ইসলামী ব্যাংকই নয়, একইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দখল করা অন্য ব্যাংকগুলোতেও কর্মী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল  রোববার বিক্ষোভ করেছেন কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মীরা। এর মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারদের একটি গ্রুপ, সিটি ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারাও বিক্ষোভ করেছেন। অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ওয়ান ব্যাংকেও। এর আগে গত বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তারাও বিক্ষোভ করেন। 

বিক্ষোভ হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন আইএফআইসি ব্যাংকেও। এ সময় বলপূর্বক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও তার ছেলেসহ বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিনিধিত্বকারী সব পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করেন। একইসঙ্গে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ এ সরোয়ারের সময়ে ‘অন্যায়ভাবে’ যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের স্বপদে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়। বিক্ষোভে ব্যাংকটির প্রায় ২০০ কর্মী অংশ নেন।  

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, সালমান এফ রহমান হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন সাবেক এমডি শাহ এ সরোয়ার, যিনি বর্তমানে ব্যাংকটির উপদেষ্টা। শাহ এ সরোয়ার ‘মানসিক চাপ সৃষ্টি করে’ অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করছেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া ব্যাংককর্মীরা ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে পুনর্বহাল করা। তবে যারা ইতোমধ্যে চাকরির বয়স অতিক্রম করেছেন, তাদের পদোন্নতি ও বেতন বৃদ্ধিসহ পাওনা পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ঋণ পুনঃতফসিল না করা, ঋণের সুদ মওকুফ না করা, দ্রুত খেলাপি ঋণ আদায়, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যকার ভয়ের সংস্কৃতি দূর করা, সাবেক এমডি শাহ আলম সরোয়ার ও তার সহযোগীদের বিচার করা, পদোন্নতি না পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দেয়া ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

ইউসিবি ব্যাংকের দখল ফেরত পাওয়ার চেষ্টা 

বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পারটেক্স গ্রুপের এমএ হাশেম পরিবার। গত বুধবার কয়েকজন শেয়ারহোল্ডারের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বএসইসি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে ব্যাংকের আর্থিক খারাপ অবস্থার চিত্র তুলে ধরে অবিলম্বে মালিকানা বদল চাওয়া হয়। 

গত ৮ আগস্ট গুলশানে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার দাবি জানান ব্যাংকের দেড় শতাধিক শেয়ারধারী। ওই সময় তারা বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন প্রদর্শন করে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ‘বিদেশে অর্থ পাচার’ ও ব্যাংকটির নানা অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেন। ইউসিবির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বাবা চট্টগ্রামের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী। শুরু থেকেই ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এমএ হাশেম। তারা বিভিন্ন সময় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বও  পালন করেছিলেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুই পরিবারের সদস্যরাই ব্যাংকটিতে যুক্ত ও নেতৃত্বে ছিলেন। কিন্তু ২০১৭ সালে পারটেক্স গ্রুপের মালিক পরিবারের সদস্যদের ইউসিবি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। এ সময় একক কর্তৃত্ব নেন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুকমিলা জামান। রুকমিলা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় ব্যাংকটি মূলত সাইফুজ্জামান চৌধুরী পরিচালনা করতেন— এমনটাই জানিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। এ সময় ব্যাংকটিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে ‘অবাধ লুটপাট, আর্থিক দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা পাচার’ করা হয়েছে। ফলে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। 

ইসলামী ব্যাংকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি 
গত ৬ আগস্ট এস আলম গ্রুপের নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বের করে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যাংকাররা। এরপর ৭ ও ৮ আগস্টও এস আলম-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বের করে দেয়া হলে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। ওই ঘটনার রেশ ধরে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ ব্যাংকাররা অভিযোগ করেন, এস আলম গ্রুপের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীরা ব্যাংক কর্মকর্তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। 
যারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তারা হলেন শফিউল্লাহ, আবদুল্লাহ আল মামুন, আব্দুর রহমান, বাকিবিল্লাহ। বাকি দুজনের পরিচয় জানা যায়নি। গুলিবিদ্ধরা ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলার বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের এসএভিপি ড. শওকত আলী জানান, ‘গতকাল জানতে পারি এস আলমের বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যাংকের যারা আছেন, যারা ব্যাংকটিকে লুটপাট করেছেন, তারা একত্রিত হয়ে তাদের লোকদেরই ব্যাংকে বসাবেন। এ তথ্য পেয়ে ওইসব লোক যাতে ব্যাংকে না ঢুকতে পারেন, সেজন্য আমরা ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিই। একপর্যায়ে এস আলমের লোকজন মতিঝিল সিটি সেন্টারে অবস্থান নেন। তারা মিছিল নিয়ে প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চান। তখন ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা তাদের প্রতিহত করতে গেলে এস আলমের লোকজন তাদের উদ্দেশে গুলি চালান। তাতে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন কয়েকজন। বৈষম্যবিরোধী ব্যাংকাররা সে সময় প্রতিরোধ করলে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যান।’

সরকার পতনের পর থেকে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা ব্যাংকটির পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ‘লুটেরাদের’ বের করে দেয়ার দাবি জানান। 

গত ৮ আগস্ট ইসলামী ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করেন  অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) কায়সার আলী।

এর আগে ব্যাংকটির কালেক্টিভ বার্গেইনিং এজেন্টের (সিবিএ) শীর্ষ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেছিলেন, ২০১৭ সালের পর যত এক্সিকিউটিভ এসেছেন, তারা আর এই ব্যাংকে ঢুকতে পারবেন না। ওই সময় অবৈধ পরীক্ষাবিহীন সব নিয়োগ বাতিল করা হবে। গত সাত বছরে পদোন্নতিবঞ্চিতদের যথাযথ পদোন্নতি দেয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের ডাকফাইল দেখবেন ডেপুটি গভর্নর 
দেশ চার দিন সরকারশূন্য থাকার পর গত ৯ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এরপর থেকে অভিভাবকশূন্য দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন গভর্নর। তার অবর্তমানে ডাকফাইল দেখবেন ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার বেগম; যদিও তিনিও পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করায় গতকাল রোববার থেকেই তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে গতকাল  রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফসানা বিলকিস স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে। 
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট দুপুরে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন আব্দুর রউফ তালুকদার। ভার্চুয়ালি অর্থ মন্ত্রণায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান তীব্র সমালোচিত এই গভর্নর। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর। তারা হলেন কাজী সাইদুর রহমান, খুরশীদ আলম, হাবিবুর রহমান ও নুরুন নাহার। এর মধ্যে কাজী সাইদুর রহমান ক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন। আর সরকারের পতনের চার দিনের মাথায় পদত্যাগ করেন ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বাকিরা পদত্যাগ করবেন জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ত্যাগ করেন। 

এছাড়া বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং নীতি উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসেরকে ব্যাংকে ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারী কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংককর্মীদের বিক্ষোভের মুখে চার ডেপুটির পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কারণে এখন প্রায় অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের এমডি জানান, স্বাধীনতার পর এই প্রথম এমন জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে দেশের আর্থিক খাত।  শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, আর্থিক দুর্নীতি ও অর্থপাচার এবং দখলদারদের বিতাড়িত করতে বিক্ষোভ হচ্ছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে। গত প্রায় ১৬ বছর ব্যাংক খাতে সরকার ও তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের নজিরবিহীন স্বেচ্ছাচারিতা আর লুটপাটের অবসান চাচ্ছেন সবাই। নামে-বেনামে ঋণ দিয়ে তা পাচারে সহায়তাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।  

গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশের ব্যাংক খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। তবে পুরো ব্যাংক খাত একসঙ্গে সংস্কার করা যাবে না। কিছু কাজ করতে সময় লাগবে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রশাসনিক কাঠামো দ্রুত পুনর্গঠন করতে হবে। কারণ, এখানে এখন কেউ নেই। পাশাপাশি ব্যাংকের মালিকানা নিয়ে অরাজকতাও দ্রুত বন্ধ করতে হবে। এ মুহূর্তে ব্যাংক থেকে যেন কেউ টাকা নিয়ে চলে যেতে না পারে, তাও ঠেকাতে হবে। 

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ শনিবার সচিবালয়ে প্রথম অফিস করেছেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আর্থিক খাতে যারা কেলেঙ্কারি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চেষ্টা করার কথা জানিয়েছে তিনি। সাবেক এই গভর্নর বলেন, দেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। এ মুহূর্তে মূল কাজ হলো আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা। শুধু রাস্তা সচল রাখা নয়, বরং ব্যাংক, ব্যবসা-বাণিজ্য, বন্দর ইত্যাদিও চালু করা অতিপ্রয়োজন।