দাম কমেছে সবজির বেড়েছে মাছের

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
দাম কমেছে সবজির বেড়েছে মাছের

ডজনপ্রতি ডিমে কমেছে ১০ টাকা, নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ভোক্তাদের

সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় গত কয়েক মাসের তুলনায় কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। তবে কয়েকটি সবজির বর্তমানে মৌসুম না হওয়ায়, সেগুলোর দাম কিছুটা বেশি। অন্যদিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যার কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। 

অন্যদিকে বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি  কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, শসা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, ঢেঁড়শ প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা এবং কাঁকরোল প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছু সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, কচুর লতি প্রতি কেজি ৭০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুরমুখী প্রতি কেজি ৭০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, গাজর প্রতি ১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৭৫ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, লাল কর্ক জাতের মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ টাকায়। 

এ ছাড়া গরুর মাংস বাজারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, আর খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে ১৬০-১৬৫ টাকায় প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হলেও তা কমে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়, শুকনো মরিচ দেশি ৪০০ টাকা।

বাজারে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায়, আটাশ চাল ৫৭ থেকে ৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি। এ ছাড়া জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, নাজিরশাইল ৭১ থেকে ৭৩ টাকা, কাটারি আতপ চাল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা কেজি, চিনিগুড়া মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭৭ থেকে ১১৫ টাকায়।

রাজধানীর মতিঝিল কলোনিতে বাজার করতে আসা রহমান আলী বলেন, বাজারে তুলনামূলক সবজির দাম কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া বাকি সবকিছুর দামই বাড়তি যাচ্ছে। কিছু দিন ছাত্রদের বাজার মনিটরিং করতে দেখেছি তখন বাজারে অনেক কিছুরই দাম কিছুটা কম ছিল। এখন আবার বাজারে সব পণ্যের দাম যে যার মতো বাড়িয়ে দিচ্ছে। আসলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে বাজার মনিটরিং বাড়ানোসহ অসাধু সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার কাজ করতে হবে। আমরা সাধারণ মানুষরা চাই সব পণ্যের মূল্য আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকুক। বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে যে কোনো মাছ

কিনতে ক্রেতাদের বিক্রেতার সঙ্গে দরকষাকষি করতে হচ্ছে। বাজারে মাছের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে মাছ চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২১০ টাকায়, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়, চাষের কৈ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকায়, রুই প্রতি কেজি ২৯০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কাতল প্রতি কেজি ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাপিলা প্রতি কেজি ৬০০ টাকায়, রুপচাঁদা প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায়, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, গুলশা টেংরা প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাবদা প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৮০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর শান্তিনগর বাজার করতে আসা নাজমুল বলেন, আগে আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি ছিলাম। এখন আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের জন্য মাছ কিনে খাওয়াই কঠিন। দীর্ঘদিন ধরে মাছের দাম অতিরিক্ত বেশি যাচ্ছে। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের কৈ মাছের দামও বেশিতে গিয়ে ঠেকেছে। আর ভালোমানের মাছের তো কেনার সক্ষমতা নেই। বাজারে অনেক কিছুর দামই আগের চেয়ে কমেছে শুধু ব্যতিক্রম মাছের বাজার। সেই যে বেড়েছে মাছের দাম, তা আর কমার কোনো নামই নেই। বাজারে মাছে দাম বাড়তি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা আজিজ বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ অনেকটা কম। এর মূল কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় মাছ চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হচ্ছে। যে কারণে বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে।