- ঋণের সুদ বাড়ায় ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ বাড়ছে
- উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার প্রভাব পড়বে খেলাপি ঋণে
- নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বহু তৈরি পোশাক কারখানা
- ব্যাংক ঋণের অনিশ্চয়তায় আমদানি ব্যয় মেটানোর শঙ্কা
তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার কারণে নতুন করে ঋণখেলাপি বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প এলাকা গাজীপুর ও আশুলিয়ায় প্রায় ২৭ দিনের বেশি সময় বন্ধ রয়েছে অর্ধশতাধিক কারখানা। এতে ব্যাংক ঋণ নিয়ে সময়মতো পরিশোধ না করার চাপ বাড়ছে উদ্যোক্তাদের ওপর। পাশাপাশি লিড টাইমে বায়ারকে পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে বিপুল অঙ্কের লোকসানের মুখে পড়তে পারেন সংশ্লিষ্ট শিল্প-কারখানা মালিকরা। এসব কারখানার মালিকপক্ষের অনেকেই সাবেক সরকারের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফলে হামলা, ভাঙচুর ও মামলার ভয়ে মালিকপক্ষ পলাতক কিংবা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় ওইসব শিল্প-কারখানায় বিপুল অঙ্কের ঋণ আটকা পড়েছে। ঋণের টাকায় তৈরি এসব প্রতিষ্ঠান সামনে খেলাপি ঋণে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ব্যাংকগুলো সর্বশেষ ২০২৩ সালে ৯১ হাজার ২২১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করেছে। পুনঃতফসিল করা এই অঙ্ক এক বছরের হিসাবে এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ। যদি এবার সময়মতো ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহলে নতুন করে আরও খেলাপি বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পতন হয় শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের। এরপর দেশের শাসনভার গ্রহণ করে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ক্ষমতা নিয়েই দুর্নীতি ঠেকাতে আর্থিক খাতসহ দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের ঘোষণা দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বৃহৎ খাত রপ্তানিমুখী পোশাক খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেন, বৈশ্বিক মন্দা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ নানামুখী চাপে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে এসেছিল স্থবিরতা। কিছুটা ভালো হওয়ার পথে ছিল আর্থিক খাত। এর মধ্যে এখন নতুন করে তৈরি হয়েছে এই সংকট। এই সংকট কবে কাটবে— তা এখন অনিশ্চিত। তাই সামনে মুনাফার বিপরীতে ব্যয়ের বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে সামনে পরিস্থিতি ঘনীভূত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না। ফলে এসব ঋণ পুরোদমে খেলাপি হবে। এতে চাপ বাড়বে ব্যাংক খাতে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সহসভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পোশাক খাত দেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে। জিডিপিতে অবদান সবচেয়ে বেশি এ খাতের। দেশের এই খাত এখন নানামুখী চাপে নাজুক পরিস্থিতি পার করছে। ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আর এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায় গিয়ে ঠেকবে।
গতকাল রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় পোশাক খাত-সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ প্রায় ২৭ দিন ধরে দেশের সর্ববৃহৎ রপ্তানি আয়ের পোশাক খাতে অস্থিরতা চলছে। শিল্পপুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এখনো শিল্প এলাকাগুলোতে কর্মপরিবেশ পুুরোপুরি ঠিক হয়েনি। দ্রুত যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে বায়াররা তাদের অর্ডার ভিন্ন দেশকে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
উদ্যোক্তারা জানান, করোনা মহামারিতে দেশে-বিদেশে দীর্ঘদিন লকডাউনের কারণে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে আর্থিক ক্ষতিতে পড়ে ব্যাংক ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত করলেও ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। এরপরই শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে গত এক বছরে বহির্বিশ্বে কাঁচামালের দাম বেড়ে যায় এবং জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামার কারণে দেশের ব্যবসা সংকটে পড়ে। এখন আবার নতুন করে আরও সংকটে পড়তে যাচ্ছে ব্যবসা। এতেও ঋণ পরিশোধে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। খেলাপি ঋণ কমাতে নানা নীতির ঘোষণা দেয়া হলেও কার্যত তা কমছে না। খেলাপি নামক এই ক্যানসার বৃদ্ধির প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, নীতিগত ভুলের কারণে ভালো উদ্যোক্তারাও ঋণখেলাপি হচ্ছেন। মোটা দাগে ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধি, ডলারের দামের উল্লম্ফন এবং উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার প্রভাব পড়েছে মোট খেলাপি ঋণে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, পদ্ধতিগত কারণেই ব্যাংক খাতে ঋণখেলাপির পরিমাণ বাড়ছে। যাচাই-বাছাই করে ঋণ না দেয়ায় তা আর ফেরত আসে না। বছর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়। এতে হতাশ হয়ে পড়েন ভালো গ্রাহক। ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার ভুলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো ব্যাংক খাত। আগ্রহ হারিয়ে ঋণখেলাপি হয়ে পড়েন ভালোরাও। একটি প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হলে ধীরে ধীরে পতনের দিকে যায়। এতে শুধু ওই কারখানাই শেষ হয়ে যায় না, একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিল্পেও বিরূপ প্রভাব পড়ে। ব্যাংকের বিনিয়োগও আটকা পড়ে। শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
সমাজের আরেক শ্রেণির ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা স্বেচ্ছায় খেলাপি হন। তারা অযাচিত হস্তক্ষেপ করে ঋণ অনুমোদনসহ সরকারের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা ভোগ করেছেন। একটা সময় তারা ইচ্ছা করেই খেলাপি হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের কারণে প্রকৃত উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না। পাশাপাশি নিয়মিত ঋণ পরিশোধের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন নিয়মিতরা।
ব্যাংকগুলো সর্বশেষ ২০২৩ সালে ৯১ হাজার ২২১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করেছে আর তা অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পুনঃতফসিল করা অঙ্ক এক বছরের হিসাবে এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ। এছাড়া ২০২৩ সালে শেষে ব্যাংক খাতের পুনঃতফসিলকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। পুনঃতফসিল করা ঋণের সঙ্গে খেলাপি ও অবলোপন করা ঋণ যোগ করলে মন্দঋণের পরিমাণ ৫ লাখ কোটি টাকা দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকার ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। শুধু তা-ই নয়, গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ অনুপাত এটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা, যা ৩০ মার্চ পর্যন্ত ছিল এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।
একজন শিল্পপতি তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করে ব্যবসা শুরু করতে চান। তিনি প্রজেক্ট প্রোফাইলের মাধ্যমে প্রাক্কলিত মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ জমি বা সম্পদ বন্ধকের বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন এবং ৩০ শতাংশ নিজের অর্থ জোগান দিয়ে শিল্প স্থাপন করেন। কিন্তু সরকারি অসহযোগিতা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সময়ক্ষেপণের কারণে সুদসহ পুঞ্জীভূত ঋণ বেড়ে যায়।
এদিকে জ্বালানি সংকট আরও বড় সমস্যা। জ্বালানির অভাবে সময়মতো উৎপাদন করতে না পারলে স্বাভাবিকভাবেই খেলাপি হয়ে পড়েন ওই উদ্যোক্তা।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমায় বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হয় টাকার অবমূল্যায়ন। যুদ্ধের আগে ডলারের দাম যেখানে ৮৫ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে ছিল, সেটি এখন বেড়ে ১২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। হিসাব অনুযায়ী দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৯.৩৬ শতাংশ দাম বেড়েছে ডলারের। যদিও যুদ্ধের আগে থেকেই ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। কভিডের পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, সারসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। ইউক্রেন যুদ্ধ সেই দাম বাড়াকে আরও উসকে দিয়েছে। এতে কাঁচামালের দাম ও জ্বালানি তেলের দাম এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু ওই অনুপাতে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ানো সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, দেশের বড় ঋণের সুদ বাড়ায় মাঝারি কিংবা ছোট সব খাতের ব্যবসায়ীরই উদ্বেগ বাড়ছে। একইসঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বাড়ছে ব্যাংক খাতে। বাড়তি সুদের চাপে অনেক ভালো গ্রাহকও ঋণের কিস্তি ঠিকমতো পরিশোধ করতে পারছেন না। সুদহার বৃদ্ধির চাপ ব্যবসায়ীদের নতুন সংকটে ফেলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের বিল দ্বিগুণ হয়েছে। মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে কর্মীদের বেতন-ভাতাসহ পরিচালন ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ অবস্থায় ঋণের সুদহার দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে খেলাপি ঋণের চাপ আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে পণ্যের দাম বেড়ে মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। কয়েক মাস আগে ঋণের সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার পাশাপাশি একইদিন ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে একদিনের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার ছয় দশমিক ৩৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটানো হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয় ১১৭ টাকা। যদিও ওইদিনের শুরুতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার সর্বোচ্চ ১১০ টাকা নির্ধারিত ছিল। সে হিসাবে একদিনেই আনুষ্ঠানিকভাবে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ডলারের ঘোষিত দর আমলে নিয়ে গত দুবছরের ব্যবধানে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। ৮৪ টাকা থেকে বেড়ে আনুষ্ঠানিক খাতেই প্রতি ডলার এখন ১২১ থেকে ১২২ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। টাকার এ রেকর্ড অবমূল্যায়নের প্রভাবে আমদানিনির্ভর প্রতিটি পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে ব্যবসার ব্যয়। সম্প্রতি ডলারের উৎস হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও বিভিন্ন কারণে কমেছে রপ্তানির পরিমাণ। এতে দেশে মূলত ডলারের ঘাটতি বেড়েছে। অনেক ছোট কোম্পানি যারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেছে, তারাও এখন ঠিকভাবে কিস্তি দিতে পারছে না। এসব প্রতিষ্ঠান গত এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের আমদানি কমার হার ছিল ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি কমার হার প্রায় ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতি মাসে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হতো, বর্তমানে আমদানি হচ্ছে তার অর্ধেক। চাহিদা অনুযায়ী মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি করতে না পারায় দেশের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতার বড় অংশ বসে থাকছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বলেন, ডলারের সংকট আছে। ব্যবসায়ীদের যেহেতু অতিরিক্ত দরে ডলার কিনতে হচ্ছে, এলসি পরিশোধে বাড়তি দর দিতে হচ্ছে, তাই কর্তৃপক্ষের উচিত ব্যবসায়ীদের ভর্তুকি দেয়া। তাদের কিছুটা ছাড় দেয়া উচিত।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারি কিছু নীতিমালার কারণে অনেক ব্যবসায়ী খেলাপি না হলেও সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তারা ব্যবসা পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছেন। ঋণের সুদহার ৯ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ অতিক্রম করেছে। সব মিলিয়ে চাপের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, ‘ব্যবসা পরিচালনার জন্য উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে সরকার কিছু অকার্যকর পাওয়ার স্টেশনকে ভর্তুকি দিয়ে আসছে; এগুলো বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের জ্বালানি খরচ কমাতে হবে।’
তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, বিজিএমইএ সভাপতি হিসেবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাকে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার এক্সপোর্ট ও ফরেন রেমিট্যান্সের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। সে সিদ্ধান্তের আলোকে পোশাক খাতের অসন্তোষ দূর করতে শিগগিরই টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।