- বিপ্লবীদের রাজনীতি ও পর্দার আড়াল থেকে চাপ তৈরির অভিযোগ
- সহস্রাধিক শহীদ পরিবার ৩০ হাজার আহতদের নিয়া মোকাবিলার বার্তা
- শহীদ পরিবার ও আহতদের চাওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে উপস্থাপন
- রাষ্ট্রপতিকে সরাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জামায়াতের একাত্মতা
- বিএনপির সঙ্গেও বৈঠক, পাওয়া যায়নি দলীয় সমর্থন
শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা বিপ্লবী মহানহায়কদের আল্টিমেটামে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে চূড়ান্ত বিপ্লবের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে পাঁচ দফা সংযুক্ত তিনটি আল্টিমেটাম দেয়া হয়। তা হলো— ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বৃহস্পতিবারের (২৪ আগস্ট) মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে এই সপ্তাহের (২৪ আগস্ট) মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। একই সময়ের মধ্যে জুলাই বিপ্লবের আলোকে ‘প্রোকলেমেশন অব রিপাবলিক’ ঘোষণা করতে হবে। কিন্তু এর মধ্যে শুধু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলেও রাষ্ট্রপতি অপসারণ, বিপ্লবের আলোকে রাজনীতির পথ নির্ধারণে দেয়া আল্টিমেটাম ঝুলে গেছে। এছাড়া মুজিববাদী সংবিধান বাতিল করে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধানের সিদ্ধান্ত এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের অবৈধ সংসদ সদস্যদের অনির্বাচিত ঘোষণা করে তাদের সম্পদ বাতিল করে যে দফা দেয়া হয়েছে, সেখানেও বাধা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে চোখ রাখা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরুতেই বিপ্লবী সরকার গঠন না করে কিছুটা ভুল পথে হেঁটেছে বিপ্লবীরা। তবে এখনো সে পথ রুদ্ধ হয়নি। বিপ্লবীদের বিপ্লবী অবস্থানের আলোকেই ঘুণে ধরা দেশ সংস্কার হতে পারে। বিপ্লবীদের সঠিক সিদ্ধান্ত, জনগণের চাহিদার আলোকে কর্মসূচি ও ভূমিকার কারণে দেশের সব শ্রেণীর মানুষ তাদের আহ্বানে রাস্তায় নেমে এসেছিল। ইতিহাসের একটি সফল আন্দোলন হয়েছে। দানবীয় স্বৈরাচার পালাতে বাধ্য হয়েছে। জনসমর্থনের আস্থার কারণেই দেশ নতুনভাবে তরুণদের নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে। এখন দেশকে নতুনভাবে সাজাতে তরুণদের ভাবনা-চাহিদা ব্যতীত কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সমপ্রতি বিপ্লবীদের পর্দার আড়াল থেকে নানাভাবে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি অপসারণের আল্টিমেটামের সঙ্গে রাজনীতির মাঠ থেকে বাধা তৈরি করা হয়েছে। একইভাবে সংবিধান ইস্যুতেও পর্দার আড়াল থেকে চাপ আসছে বলে বিপ্লবীদের একাংশের দাবি। তবে চাপ থাকলেও সহস্রাধিক শহীদ পরিবার, আহত ৩০ হাজার ছাত্র-জনতাকে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে। একই সঙ্গে বিপ্লবের পর পূর্ণ বিপ্লবী সরকার গঠন করা হবে বলেও ছাত্রদের বড় অংশের ভাষ্য। তারা সবাইকে নিয়েই দেশ গঠন করতে চাচ্ছেন। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও তাদের বৈঠক চলছে। শহীদদের চাওয়া এবং আহতদের স্বপ্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যাতে বিপ্লবীদের স্বপ্ন পূরণে দলমত সবার সহযোগিতা থাকে। রাজনৈতিক দলগুলো থেকে বাধা এলে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মোকাবিলার বার্তাও রাজনীতি পাড়ায় দেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মোঃ সাহাবুদ্দিনকে সরানোর দাবির পক্ষে ঐকমত্য তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। এরই মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন দুই সংগঠনের নেতারা। শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান বিলুপ্ত করতে সমপ্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে নতুন করে দেয়া হয়েছে পাঁচ দফা। বিশেষ করে সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতিকে বিদায়ের জন্য তারা নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চ, রক্তিম জুলাই, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতার মঞ্চসহ তাদের সমমনা বেশ কয়েকটি সংগঠনের দাবিতে ড. ইউনূস সরকারকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সাংবিধানিক কিছু জটিলতা থাকলেও রাষ্ট্রপতির বিদায়ের জন্য ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ এখন প্রধান আলোচনায়। এ ছাড়া গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির পক্ষে গণভোট এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেও বিতর্কিত রাষ্ট্রপতিকে বিদায় দেয়া যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। বিপ্লবীরা বলছেন, ৫ আগস্ট সারা দেশের মানুষ একাত্মতা পোষণ করে রাস্তায় নেমে রক্ত দিয়েছিল। সেদিন প্রাথমিকভাবে শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত হয়েছে মাত্র। কিন্তু ফ্যাসিবাদ বিলুপের ব্যবস্থা এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি। পাঁচ দফা হচ্ছে বিপ্লবের চূড়ান্ত দফা। এই পাঁচ দফার মধ্যে দিয়ে গণঅভ্যুথান বিপ্লবে রূপান্তরিত হবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতিতে আল্টিমেটাম দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কিন্তু একটি দাবি ছাড়া বাকিগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
রাষ্ট্রপতিকে সরাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জামায়াতের একাত্মতা : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে গত শুক্রবার সংলাপে বসে সংগঠনটি। জামায়াত এ বিষয়ে একাত্মতা